সিদ্ধিরগঞ্জে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে বিএনপি নেতা অকিল উদ্দিন ভূঁইয়াকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৩১ মাচ) ভোরে উপজেলার গোদনাইলে তার বাসার সামনে হুমকি দিয়ে কে বা কারা কাফনের কাপড়, সাবান, আতর, আগরবাতি রেখে গেছে।
বাসার সামনে রেখে যাওয়া প্যাকেটে লেখা রয়েছে, ‘অকিল তুই দুনিয়া থেকে বাহির হ, এই লও, প্রস্তুত থাক’।
অকিল উদ্দিন ভূঁইয়া নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও ঢাকা বিভাগীয় ট্যাংক লরি মালিক সমিতির সভাপতি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত চলছে।’
জানা গেছে, গোদনাইল বার্মাস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত পদ্মা ওয়েল কোম্পানির ডিপো। এখান থেকে নয় হাজার লিটার ধারণক্ষমতার ১২৭টি ট্যাংক লরি ঢাকা বিমান বন্দর টার্মিনালে জ্বালানি তেল সরবরাহ করে। প্রভাশালী কয়েকজন কোম্পানিকে পাঁচ লাখ টাকা জামানত দিয়ে বিশ হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতার ট্যাংক লরি চালুর পাঁয়তারা করছে।
এটি চালু হলে সাধারণ পরিবহন ব্যবসায়ী, চালক ও শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে গত শনিবার সমিতির এক সভায় জানানো হয়। পাশাপাশি জ্বালানি তেল পরিবহনে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করে ওই সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অকিল উদ্দিন ভূঁইয়া।
এ বিষয়ে অকিল উদ্দিন ভূঁইয়ার ভগ্নিপতি শরিফুজ্জামান বলেন, ‘ভোরে মসজিদ থেকে ফজরের নামাজ পড়ে বাসায় যাই। সকাল ৭টায় বৃষ্টির পর বাসার সামনে কাফনের কাপড়ের প্যাকেটটি পাওয়া যায়। সাধারণ ব্যবসায়ীদের পক্ষে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে যে কেউ এটি করতে পারে।’
পদ্মা ওয়েল কোম্পানি লিমিটেডের চট্টগ্রাম প্রধান কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (অপারেশন্স) আসিফ মালিক বলেন, ‘ট্যাংক লরির ধারণ ক্ষমতা পরিবর্তনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই বিশৃঙ্খলা হওয়ার সুযোগ নাই।’
এমন ঘটনার খবরে এলাকার অনেকেই নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে বলেন, “এই কাফনের কাপড়ের ঘটনাটি কোন রাজনৈতিক ঘটনা না। কারণ এই অকিল উদ্দিন ভূইয়ার সাথে সথে কোন রাজনৈতিক বিরোধও নাই কারো সাথেই। মূলতঃ এই এলাকার বিরোধ হচ্ছে তেলচুরির। বিগত সময়ে বিএনপির সকল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এতো মামলা হামলা হলো এই অকিল উদ্দিনের কোন নাম ডাকা ছিলো ? বিএনপর আন্দোলনে কোন নাম ডাক না থাকলেও নেপথ্যে অনেকে কিছুই আছে । আর তেল চুরির টাকায় সকল আইনশৃংখলা বাহিনী ম্যানেজ থাকায় এই বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোন টু শব্দও করে না।’
এমন ঘটনার নেপথ্যে আরো জানা যায়, ৩০ মার্চ (শনিবার) পদ্মা ওয়েল কোম্পানির গোদনাইল ডিপো এলাকায় এক সভায় মালিক সমিতি বিশৃংখলাকারীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন অকিল উদ্দিন ভূঁইয়া, শেখ দেলোয়ার হোসেন, শরিফুজ্জাজ্জামান, নাসিরুল ইসলাম, মো. মোসলেম উদ্দিন, আবুল হোসেন মেম্বার, ইয়ার হোসেন ভূঁইয়া, মিজানুর রহমান, জাহিদ হোসেন,ফারুক ও সাইফুদ্দিন।
ওই সময় সমিতির সেক্রেটারী শেখ দেলোয়ার হোসেন জানান, পদ্মা ওয়েল কোম্পানির অধীনে নয় হাজার লিটার ধারন ক্ষমতার ১২৭টি ট্যাংকলরি ঢাকা বিমান বন্দর টার্মিনালে জ্বালানি তেল পরিবহনের কাজে নিয়োজিত। একদল ব্যবসায়ী পাঁচ লক্ষ টাকা জামানত দিয়ে বিশ হাজার লিটার ধারন ক্ষমতার ট্যাংকলরি চালুর পায়তারা করছে। এতে করে সাধারণ পরিবহন ব্যবসায়ী, ড্রাইভার ও শ্রমিকগণ ক্ষতি গ্রস্ত হবে।”
পদ্মা ওয়েল কোম্পানি লিমিটেডের চট্টগ্রামস্থ প্রধান কার্যালয়ের উপ মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন্স) আসিফ মালিক জানান, কোম্পানির এ ধরনের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই বিশৃংখলা হওয়ার সুযোগ নাই।”
এরই ধারাবাহিকতায় এমন কাফনের কাপড় পাঠিয়ে নতুন কি আছে তা তদন্ত করা জরুরী বলে দাবী এলাকার সকলের।
Discussion about this post