এবার নানাভাবে আলোচিত সমালোচিত ও বিতর্কিত নারায়ণগঞ্জ জেলা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা আব্দুল আউয়াল ও মহানগর কমিটির সভাপতি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান ‘নারায়ণগঞ্জের গডফাদারের সহযোগী’ বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা রফিউর রাব্বি।
নারায়ণগঞ্জ চারুকলা ইনস্টিটিউট ও শেখ রাসেল পার্ক নিয়ে হেফাজত নেতাদের ‘অশালীন ও আগ্রাসী বক্তব্যের’ প্রতিবাদে শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই মন্তব্য করেন তিনি।
রফিউর রাব্বি বলেন, ‘আউয়াল ও ফেরদৌস নারায়ণগঞ্জের গড়ফাদারের সহযোগী। তারা বিভিন্ন সময় তার কাছ থেকে অর্থ সহযোগিতা নিয়ে থাকে। তারা বিভিন্ন অপকর্মে তার সহযোগী লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে কাজ করে।’
তিনি বলেন, ‘তারা ফু দিয়ে সমস্ত কিছু উড়িয়ে দিবে। এ সমস্ত বলে লাভ নাই। আপনাদের আচরণ আমরা বুঝি। মেয়র আইভী যখন বলেছে, ডিআইটির দোকান অবৈধ দখল রাখতে দিবো না, তখনই তাদের অর্থনীতিতে খেদ পড়েছে এবং তাদের মাথা গরম হয়ে গেছে। এই আউয়ালদের বিরুদ্ধে বহু হাজী অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন। এই হলো তাদের চরিত্র। বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না। চারুকলা ইনস্টিটিউট তার নিজস্ব গতিতে, নিজস্ব ফর্মে চলে। সেটি তার মতোই চলবে। ফু দিয়ে উড়িয়ে দিবেন, ফেরদৌস আপনার বুকে এত দম নাই। আপনাকে আবার জন্মাতে হবে।’
চারুকলা ইনস্টিটিউটের আশেপাশে পূর্বে যখন মাদকের আখড়া ছিল তখন কেউ কোন শব্দ করেননি, উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু মানুষের দাবিতে যখন সেখানে পার্ক হলো, নারায়ণগঞ্জবাসীর স্বস্তির একটি জায়গা হলো তখন এই তথাকথিত মাওলানাদের ঘুম হারাম হয়ে গেল। তারা পার্কে যারা যায় তাদের পতিতা বলে। অর্থ্যাৎ তাদের নৈতিক চরিত্রের স্বচ্ছতা নেই।’
রফিউর রাব্বি বলেন, ‘সারাদেশে অহরত বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে। মাদ্রাসাগুলোতে বলাৎকারের ঘটনা ঘটছে, যে মাওলানারা তা করছে তাদের নামও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে। এসব ঘটনায় মাওলানা নামধারী ফেরদৌস, আউয়ালদের প্রতিবাদ করতে দেখা যায় না। মাদ্রাসায় ধর্ষণের পর নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হলো। সেই ঘটনায়ও তারা প্রতিবাদে নেই। কারণ তারা এই অপকর্মের সাথে জড়িত। তাদের সহকারীরা সারাদেশে এসব অপকর্ম করে বেড়ায়। আবার এরা ধর্ম রক্ষার কথা বলে। এরা কারা এদের চরিত্র জেনে রাখা দরকার। এরা হচ্ছে আব্দুল ওয়াহাব নজদী’র অনুসারি। তারা বিভিন্ন সময় হিংস্র হয়। জোর করে মানুষ হত্যা করে তারা তাদের মতবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চায়।’
প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনাদের দায়িত্ব এসব জঙ্গিদের পাহাড়া দেয়া নয়। তারা এত দৃষ্টতা দেখানোর সাহস কোথায় পায়? নিরপেক্ষতার নামে প্রশাসনের নীরবতাকে আমরা ধিক্কার জানাই। শান্ত নারায়ণগঞ্জকে অশান্ত করার দিকে এগিয়ে যাবেন না।’
নারায়ণগঞ্জ চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে এই মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ শামসুল আলম আজাদ। নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন বলেন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল, সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর রায়, খেলাঘর আসরের সভাপতি জাহিরুল ইসলাম, রথীন চক্রবর্তী, সমমনার সভাপতি দুলাল সাহার উপস্থিততে নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, ‘রাসেল পার্ক জাতির জনকের ছোটপুত্রের নামে করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের ঘৃনিত কুচক্রি মহল, যারা হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত, অপকর্মের সাথে জড়িত তারা সেই রাসেল পার্ক নিয়ে কথা বলার সুযোগ পায় আর প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করে।’
Discussion about this post