“নানাভাবে বিতর্কিত শাসক দলের কয়েকজন উচ্ছিষ্ঠভোগী নেতা ও তাদের চেলা চামুন্ডাদের শেল্টারে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় সকল ধরণের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে রাজাকার পুত্র মাকসুদ হোসেনসহ তার পরিবারের প্রায় সকল সদস্যরা। কুখ্যাত রাজাকারপুত্র মাকসুদ ও তার পুত্রের অপকর্ম এতটাই মারাত্মক আকার ধারণ করেছে যার কারণে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারাও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। দীর্ঘদিন যাবৎ বন্দরের রাম রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে এই অপরাধী পরিবার। এক কথায় এই রাজাকার পরিবারের কাছে জিম্মি হয়ে পরেছেন এলাকার সকলেই।
কুখ্যাত অপরাধী এই রাজাকারপুত্র মাকসুদ নিজ স্বার্থ হাসিল করতে স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, আওয়ামীলীগ নেতা সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও তার পরিবারের সকল সদস্যদের নাম ব্যবহার করে এবং ব্যানার পোস্টার ফেস্টুন টাঙ্গিয়ে বন্দরবাসীকে জানান দেন তিনি আওয়ামী লীগ ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ট ।
নারায়ণগঞ্জের একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের প্রভাবশালী নেতাদের কৌসূলী শেল্টারের কারণেই এলাকাবাসী অসহায় হয়ে পরেছে মাকসুদের পরিবারের কাছে । এই রাজাকারের পরিবারের অন্যতম সদস্য মাকসুদ হোসেনের মাথার উপর থেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ছায়া না সরানো হলে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে এই রাজাকারপুত্র মাকসুদ । এই মাকসুদের বিরুদ্ধে তার আপন ভাই আনোয়ার ওরফে আনার চেয়ারম্যান হত্যার অভিযোগের গুঞ্জন থাকলেও যেহেতেু আনার চেয়ারম্যান সড়কে নেশাগ্রস্ত হয়ে মৃত্যু হওয়ায় ওই ঘটনা কে দূর্ঘটনা হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত করে ধূরন্ধর মাকসুদ।”
বন্দর উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে গত বুধবার ও আজ বৃহস্পতিবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে মাকসুদ হোসেনের বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলার সংবাদ প্রচারের পর এলাকার লোকজন সমালোচনা করে উল্লেখিত মন্তব্য করছেন।
একই সাথে অনেকেই বলেছেন, “যিনি নিজের ঘর ঠিক রাখতে পারবেন না সেখানে এই রাজাকারপুত্র উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে কি করে এলাকাবাসীর সেবা করবেন ? নাকি বন্দরবাসীকে নরকে পরিণত করবেন ?“
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সদর আসন এলাকার অন্যতম রাজাকার পরিবারের সন্তান এবং বন্দরে জাতীয় পার্টির নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদ হোসেনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছেন তাঁর স্ত্রী।
যৌতুকের দাবিতে মারধর করার অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আদালত বাদীর কাছ থেকে মামলার আবেদন পেয়ে বন্দর থানায় মামলা রুজু করার নির্দেশনা দিয়েছেন। মাকসুদ হোসেনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলায় মাকসুদ হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী সুলতানা বেগম (৪৩) অভিযোগ করেন, ১৯৯৮ সালে মাকসুদ হোসেন তাঁকে বিয়ে করে। তাঁদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। কিন্তু বিয়ের সময় তাঁর প্রথম বিয়েটির কথা গোপন রেখেছিলেন। সুলতানা বেগম বিষয়টি জানতে পেরে তাঁকে বাড়িতে তোলার জন্য চাপ দেন। কিন্তু মাকসুদ তাঁর কথা শোনেননি। উল্টো তাঁর স্ত্রীর বাবার বাড়ি থেকে পাওয়া সম্পত্তি বিক্রির চাপ দেন।
ওই সম্পত্তির মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। সেই সম্পত্তি বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় দীর্ঘদিন মাকসুদ তাঁকে স্ত্রীর মর্যাদা না দিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ফেলে রেখে যান। ২০২২ সালে ফের চাপ দিলে ফের সম্পত্তি বিক্রি করে আসতে বলেন মাকসুদ। বারবার স্ত্রীর বাবার সম্পত্তি দাবি করায় ওই বছরের ১৩ নভেম্বর মাকসুদ হোসেনের বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা দায়ের করেন তাঁর স্ত্রী।
গত ২১ এপ্রিল রাত ১১টায় মাকসুদ তাঁর বন্ধুদের নিয়ে বন্দরের মদনপুরে সুলতানা বেগমের বাবার বাড়িতে হাজির হন। এ সময় মামলা তুলে নিতে চাপ দেন এবং ওয়ারিশ সম্পত্তি বিক্রি করে মাকসুদের হাতে দিলে তাঁকে পুনরায় স্ত্রীর মর্যাদায় ঘরে তোলার প্রলোভন দেখান। প্রস্তাবে রাজি না হলে মাকসুদ ক্ষিপ্ত হয়ে সুলতানা বেগমকে খুন করার হুমকি দেয়। এ সময় মাকসুদ ও সুলতানার মেয়ে ইসরাত জাহান শ্রাবন্তি মাঝে এসে বাধা দিলে মাকসুদ তাকে মারধর করে সরিয়ে দেন। পরে সুলতানাকে বেধড়ক মারধর করে হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যান।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত আসামি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদ হোসেনের বক্তব্য জানতে চেয়ে তার ব্যক্তিগত নম্বরে গণমাধ্যমকর্মীরা যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে মাকসুদ হোসেনের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানায়, “মাকসুদ মামলা হওয়ার খবর আগেই পাইছেন, হেরপর থেইক্কা ই পালিয়ে আছেন। হাইকোর্ট থেইক্কা আজ জামিন নিতে পারে শুনছি ।”
Discussion about this post