নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি বলেন, ‘এখনও আমাদের আতংকে দিন যাপন করতে হয়। নারায়ণগঞ্জে এখনও স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারদের সেই শান্তি বাহিনীর উত্তরসূরিরা বীরদর্পে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দেয়। তাদের মুখে স্বাধীনতার কথা শোনা যায়। স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে সামনে এগিয়ে আসতে চায়। পুলিশকে হুমকি স্বরূপ আল্টিমেটাম দেয়। রাজাকারের উত্তরসূরিরা আজ প্রশাসনকে হুমকি দেয় । স্বাধীনতার এত বছর পরও আমরা প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ পাইনি। আমরা পশ্চিমাদের বিতাড়িত করেছি, আমরা মানচিত্র পেয়েছি, একটি ভূখন্ড পেয়েছি, আমরা জাতীয় সঙ্গীত গাইছি কিন্তু প্রকৃত স্বাধীনতা কাকে বলে তা আমরা জানি না। যেখানে মানুষের বেঁচে থাকার নিরাপত্তা না থাকে, নিশ্চয়তা না থাকে তাকে স্বাধীনতা বলা যায় না। সেজন্যই উচ্চারণ করতে হয় পূর্ণ স্বাধীনতা মিললো কই।
১৯৭১ সালে বন্দরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যায় নিহত সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে ‘বন্দর গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন রফিউর রাব্বি ।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে বন্দরে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিভিন্ন সংগঠন ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে।
নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি এড. জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক নিখিল দাস, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, সমমনার সভাপতি দুলাল সাহা, ওয়ার্কার্স পার্টি জেলা শাখার সভাপতি হাফিজুর রহমান, ন্যাপ এর জেলা সভাপতি আওলাদ হোসেন, নাগরিক কমিটির সাধারন সম্পাদক আব্দুর রহমান, বন্দর গনহত্যা দিবস উদযাপন কমিটির সাধারন সম্পাদক ইউসুফ ভূইয়া ননী, নাগরিক কমিটির বন্দর শাখার সাধারন সম্পাদক একেএম শাহআলমসহ অনেকেই।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল প্রথম বন্দর এলাকায় প্রবেশ করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এদিন বন্দরের দুই দিক থেকে অতর্কিতভাবে হামলা করে নির্মম বর্বরতা চালায় তারা। সিরাজদৌল্লাহ ক্লাব মাঠে ৫৪ জনকে একসঙ্গে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে। আশপাশের বাড়ি থেকে কাপড় এনে গান পাউডার দিয়ে জ্বালিয়ে হত্যা করা হয় অনেককে এবং এক সঙ্গে গণকবরে সমাধিত করে তাদের। স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৭১ সালের এই দিনটিকে বন্দর গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জবাসী।
সমাবেশ চলাকালীন সময়ে উপস্থিত অনেকেই বলেন, নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে ওসমান পরিবারের সাথে একটি বিশাল দ্বন্ধ চলে আসছে । রাজনীতিতে কি হচ্ছে তা সহজেই জেলাবাসী খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারছেন । রফিউর রাব্বির পুত্র হারানোর শোক সে কখনোই ভূলতে পারবে না । আর বরাবরই পুত্র হত্যার জন্য ওসমান পরিবারকে দ্বায়ী করে আসছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আজকের এই বক্তব্য যেন জ্বলন্ত আগুনে ঘি ঢালছেন রফিউর রাব্বি ।
Discussion about this post