রূপগঞ্জ প্রতিনিধি :
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার আমদিয়া এলাকার ইতালি প্রবাসী ভূঁইয়া শামিমের মেয়ে সাবরিনা আক্তার (১৮)। সাবরিনা আক্তার তার মা-বাবার সঙ্গে ইতালিতে প্রবাসী হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন। ফেসবুকে রূপগঞ্জ উপজেলার রঘুরামপুর এলাকার খাজাল উদ্দিনের ছেলে হুমায়ুন মিয়ার (২২) সঙ্গে সাবরিনা আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক হয়। প্রেমের টানে ২৭ মার্চ ইতালি থেকে বাংলাদেশে চলে আসেন সাবরিনা।
পরে হুমায়ুন মিয়াকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। বিয়ের পর থেকে রাজধানীর শনির আখড়া এলাকায় একটি ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন তারা।
কিন্তু বাঁধ সাধে সাবরিনার পরিবার ও পুলিশ । ভাগ্নিকে অপহরণের অভিযোগ এনে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় মামলা করে তরুণীর মামা তোবারক হোসেন। অপহরণ মামলার আসামি করা হয় রাজধানীর শনির আখড়া এলাকার বাসিন্দা হুমায়ুন মিয়া ও তার পরিবারের লোকজনকে। মামলার পর অপহৃত ভাগ্নি সাবরিনা আক্তারকে উদ্ধারে অভিযানে নামে পুলিশ।
বুধবার (৩ এপ্রিল) রাতে অপহরণের অভিযোগে হুমায়ুন মিয়াকে (২২) গ্রেফতার করা হয়। হুমায়ুন মিয়াকে গ্রেফতারের পরই বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা। হুমায়ুন মিয়াকে ছেড়ে দিতে পুলিশকে অনুরোধ জানান সাবরিনা আক্তার ।
কারণ হিসেবে সাবরিনা আক্তার পুলিশকে জানান, হুমায়ুন মিয়া তার প্রেমিক। এমনকি তারা বিয়েও করেছেন। কিন্তু প্রেমিকার কোনো কথা শুনতে রাজি হয়নি পুলিশ।
এক পর্যায়ে বাবা ভূঁইয়া শামিমকে ফোন দিয়ে সাবরিনা আক্তার বলেন, আমাকে কেউ অপহরণ করেনি। আমি নিজেই বিদেশ থেকে প্রেমিকের কাছে পালিয়ে এসেছি। আমি হুমায়ুনকে বিয়ে করেছি। পুলিশকে বলো, আমার স্বামীকে ছেড়ে দিতে। কিন্তু বাবা শামীম মেয়ের কথায় কান দেননি। পরে তাদের থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
প্রেমিক-প্রেমিকার বরাত দিয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফরিদ আহাম্মেদ বলেন, মূলত প্রেম-সংক্রান্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে অপহরণ মামলা করেছেন মেয়ের মামা। এ মামলায় প্রেমিকসহ তার পরিবারের সদস্যদের আসামি করা হয়েছে। প্রবাসীর মেয়ে সাবরিনা আক্তারকে উদ্ধারের পর আসল ঘটনা জানতে পারি আমরা। মেয়ের মামা অপহরণ মামলা করলেও বিষয়টি আসলে প্রেম-সংক্রান্ত।
তিনি আরও বলেন, এদিকে সাবরিনার মামা তোবারক হোসেন বাদী হয়ে হুমায়ুন মিয়া, হুমায়ুনের বাবা খাজাল উদ্দিন, মা নাছিমা বেগম, কাউসার ও আসাদসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার পর প্রেমিক হুমায়ুন মিয়া ও প্রেমিকা সাবরিনা আক্তারকে শনির আখড়া এলাকার ওই ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়।
এসআই ফরিদ আহাম্মেদ বলেন, মেয়ে পক্ষ অপহরণ মামলা করায় তাদের দুজনকে বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়। তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন আদালত। কারণ, তারা বিয়ে করেছেন এবং স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।
Discussion about this post