বিশেষ প্রতিনিধি :
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ফুনকুল এলাকায় এবিএফ নামে একটি ইটভাটা কর্তৃপক্ষের কাছে পাওনা টাকা চাওয়ায় ৪৫ জন নারী-পুরুষ শ্রমিক ও তাদের শিশুসহ ৬২ জনকে দুই দিন একটি ঘরে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
পরে তাদের আত্মীয়-স্বজনরা ৯৯৯ নম্বরে কল করে সহযোগিতা চাইলে কামতাল পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা গিয়ে বুধবার রাতে তাদেরকে উদ্ধার করে উভয় পক্ষের সঙ্গে আপোষ মিমাংসা করে বিষয়টি সুরাহা করেন। স্থানীয় সাংবাদিকরা
বৃহস্পতিবার রাতে এ বিষয়টি জানতে পারেন।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, শেরপুরের সদর থানা এলাকার কুতুবউদ্দিন ও তার নিয়োজিত শ্রমিকরা ইট প্রস্তুত করার জন্য বন্দরের ফুনকুল এলাকার এবিএফ ইটভাটা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধে আবদ্ধ হন। প্রতিবছরের ন্যায় তারা এ বছরও বন্দরে ওই ইটভাঁটিতে এসে ইট তৈরি করতে পুরো পরিবার নিয়ে আসেন। গত ৩১ মার্চ থেকে কালবৈশাখী ঝড় বৃষ্টির কারণে ইট তৈরির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু গত ১ এপ্রিল রাতে ইটভাটা কর্তৃপক্ষের কাছে তারা ইট তৈরির মজুরী বকেয়া বাবদ ৫০ হাজার ৫শ’ টাকা চান। পরে মালিক পক্ষ উল্টো ৪ লাখ টাকা পাওনা দাবি করেন। পরে মালিক পক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রমিকদেরকে মারধর করে ইটভাটার একটি ঘরে আটকে রাখেন। শ্রমিকর দুই দিন অনাহারে অবরুদ্ধ থাকার পর ইটভাটা শ্রমিকরা তাদের আত্মীয়-স্বজনদের ঘটনাটি জানালে তারা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে তাদের উদ্ধারের জন্য সহযোগীতা চান। ৯৯৯ এর থেকে কল পেয়ে কামতাল তদন্ত কেন্দ্র পুলিশ ওই ইটভাটার ঘর থেকে ৪৫ জন নারী ও পুরুষ শ্রমিক ও শিশুসহ ৬২ জনকে উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে বন্দর উপজেলার কামতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন জানান, ৯৯৯ নম্বর থেকে কল পেয়ে আমরা এবিএফ ইটভাটায় গেলে ওই শ্রমিকরা নিজেরাই বের হয়ে আসে। শ্রমিকদের আটকে রাখার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ সময় শ্রমিকরা মালিক পক্ষের কাছে ৫০ হাজার ৫শ’ টাকা পাওয়া আছে বলে দাবি করেন। কিন্তু মালিক পক্ষ প্রথমে ৪ লাখ টাকা দাবি করলে আমরা উভয় পক্ষের কাছে বিস্তারিত শুনে মালিক পক্ষ ১ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে আমরা জানতে পারি। পরে উভয় পক্ষের সঙ্গে আপোস মিমাংসা করে বিষয়টি সুরাহা করে ওই নারী ও পুরুষ শ্রমিক ও তাদের শিশুদের গ্রামের বাড়িতে চলে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। তারা বুধবার রাতেই ইটভাটা থেকে বাড়ি চলে গেছে।
এ বিষয়ে বন্দর থানার ওসি মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, মালিক ও শ্রমিক পক্ষের মধ্যে টাকার লেনদেনের গড়মিল ছিল। শ্রমিকদের আটকে রাখার কোন ঘটনা আমরা পাইনি। পুলিশ গিয়ে মালিক ও শ্রমিকদের ডেকে বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছে। পরে শ্রমিকরা নিরাপদে যার যার বাড়ি চলে গেছে।
(প্রতিকী ছবি)
Discussion about this post