নারায়ণগঞ্জ চলছে নানা কারনে তোলপাড়। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি মারাত্মক অবণতি ঘটলেও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না কেউ। সর্বত্র চলছে অরাজক পরিস্থিতি।
ঘুষ কেলেংকারী, নম পার্কে জুয়া লটারি, যাত্রা পালা ছাড়া মাদকের ভয়াল থাবায় পুলিশ সুপারের নাকের ডগায় (কার্যায়ের সামনে) থেকে শুরু করে অজো পাড়া গাঁ পর্যন্ত মাদকের ভয়াল থাবার কারণে অতিষ্ঠ পুরো নারায়ণঞ্জ ।
অপরদিকে নাারয়ণগঞ্জ জেরা প্রশাসক কার্যালয়ে কি ঘটে চলেছে তা সকলের জানা থাকলেও এবার ৪২ লাখ টাকা ভর্তি কার্টুন উদ্ধারের পর একজন রানাকে কেন্দ্র করে তোলপাড়ের সৃস্টি হয়েছে নগরীতে। সার্ভেয়ার কাওসার গ্রেফতারে পর তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে আদালতে ফেরতের পর কারাগারে পাঠানো হলেও তোলপাড় যেন কোন অবস্থাতেই থামছে না।
এরমধ্যে নগরীর ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক সড়কের নম পার্কে উপস্থিত হয়ে প্রয়াত বাবা সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের একমাত্র পুত্র আজমেরী ওসমান ২৫ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার রাতে তার বাবার নামে পরিচালিত পার্কে নগ্ন নৃত্য, জুয়া, যাত্রা পালা বন্ধ করতে অনুরোধ করে । এমন ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যে র্যাব, থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের একাধিক দল পুরো নারায়ণগঞ্জ তন্নতন্ন করে খুঁজে আজমীর ওসমানের ৫ সহযোগীকে গ্রেফতার করে ।
এমন দুটি ঘটনা নারায়ণগঞ্জে এখন ‘টক অব দ্যা টাউন !’
নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারী) রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নাছির, ইসলাম, তানজিল, সালাউদ্দিন, তানিম, বান্টিকে গ্রেফতার করার ঘটনা ঘিরে এখনো চলছে আলোচনা সমালোচনা ।
২৫ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নিজ গাড়িতে করে পার্কের বাইরে অবস্থান নেন আজমেরী ওসমান। তিনি আয়োজকদের বলেন, ‘এ পার্ক আমার বাবার নামে করা। তিনি একজন প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা। চারবারের এমপি ছিলেন। তাঁর মত এমন ব্যক্তির নামের পার্কে এ ধরনের জুয়ার আসর লটারীর কাজ করাটা ঠিক হচ্ছে না। আমি আজকে বলে দিয়ে গেলাম। এর পরেও এ ধরনের কাজ হলে আমি ব্যবস্থা নিব।’ আজমেরীর ওই বক্তব্যের পরেই মেলার আয়োজকেরা সব গুটিয়ে নেন।
ওই ঘটনার পর মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘পার্কে যে কেউ আসতে পারেন। তার (আজমেরী ওসমান) বাবার নামে এই পার্ক। তো তিনি আসতেই পারেন। তিনি যাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হয়েছিলেন। তাদের বলেছিলাম এখানে কোনো সমস্যা হয়নি।’ জুয়া ও অশ্লীল নৃত্যের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহ নিজাম জানান, ‘এখানে সার্কাসের আয়োজন করা হয়েছে। জুয়া কিংবা অশ্লীল নৃত্য চালানোর প্রশ্নই উঠে না।’
তবে রোববার দুপুরে খোজ নিয়ে আরো জানা যায়, নম পার্কে এখনো সেই লটারি, জুয়া রাত তিনটা পর্যন্ত ১৫০ টাকা টিকেটে সার্কাস চলে। শনিবার দিবাগত রাতে বন্দর এলাকার একজন লেপতোশক নির্মাতা লটারীতে একটা মটর সাইকেল পেয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে লিংক সড়কের একজন নির্মাণ শ্রমিক বলেন, আমি ২০ টাকা কইরা লটারি কিনছি আর দেরশ (১৫০) টেকায় সার্কাস দেখছি। প্রত্যেক রাইতেই লটারি আর সার্কাস চলে ।
এমন লটারি ও সার্কাসের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেদারুল ইসলাম গণমাধ্যম কে বলেন, ‘লাকি কুপন বিষয়টি আমি অবগত নই। তবে এই ধরনের কার্যক্রমের ব্যাপারে প্রশাসনের অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে। অনুমতি সাধারণত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়।’
জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মৌসুমী বাইন হীরা বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানতাম না। এই ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Discussion about this post