বিশেষ প্রতিনিধি:
রাজধানীর বায়ু দূষণ রোধ করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অভিযান চালিয়ে ছয়টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। একই সাথে বায়ু দূষণের অভিযোগে এই ইটভাটাগুলোকে পৃথকভাবে পনের লাখ টাকা জরিমানা করেছে সংস্থাটির ভ্রাম্যমান আদালত।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ঢাকা কার্য্যালয়ের এনফোর্সমেন্ট বিভাগের নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট কাজী তামজীদ আহমেদের নের্তৃত্বে বুধবার দুপুর বারোটা থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে গড়ে ওঠা এসব ইটভাটাগুলোতে অভিযান চালানো হয়।
এসময় পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া অবৈধভাবে ইটভাটার কার্যক্রম পরিচালনা করার অপরাধে খাসপুটিনা এলাকায় হেলাল উদ্দিন কাদিরের মালিকানাধীন হেলাল ব্রিকসকে ১ লাখ টাকা, এর পাশে সৈয়দ রফিকুল ইসলামের মালিকানাধীন মঈন অধরা ব্রিকসকে ২ লাখ টাকা, দাউদপুর বাজার এলাকায় গোলাম রেজাউল উদ্রিম শ্যামলের মালিকানাধীণ সালাম ব্রিকসকে ২ লাখ টাকা, খাস কামালকাঠি এলাকায় আওলাদ হোসেনের মালিকানাধীন সততা ব্রিকসকে ৫ লাখ টাকা, আবদুর রহমানের মালিকানাধীন আর.এম.কে ব্রিকসকে ২ লাখ টাকা এবং শিপন মিয়ার মালিকানাধীন থ্রি.এ ব্রিকসকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত।
পরে এই ছয়টি ইটভাটার চুল্লিতে পানি দিয়ে ইট উৎপাদন বন্ধ করে দেন ফায়ার সার্ভিসের দমকল বাহিনীর কর্মীরা। পাশাপাশি ইটভাটাগুলোর বিভিন্ন অংশ ভেকু দিয়ে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়।
ভ্রাম্যমান আদালতের এ অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলার উপ-পরিচালক মো: সাঈদ আনোয়ারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। র্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য ও কর্মকর্তারা এ অভিযানে সহায়তা দেন।
নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট কাজী তামজীদ আহমেদ জানান, নতুন আইন অনুযায়ী অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করতে উচ্চ আদালতের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। সে আলোকে পর্যায়ক্রমে জেলার সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দেয়া হবে। পাশাপাশি রাজধানীর পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জে প্রবাহিত নদীগুলোর তীরে কোন ইটভাটা রাখা হবে না। তিনি আরো জানান, বন্ধ করে দেয়া ইটভাটাগুলো যাতে পুনরায় কার্যক্রম চালাতে না পারে সেজন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং টীম স্বার্বক্ষণিক নজরদারি করবে। এরপরেও যদি আইন অমান্য করে কেউ চালু করে তাহলে আরো কঠোর শাস্তি ও অর্থদন্ড করা হবে। প্রয়োজনে জেলও দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
পরিবেশ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলা উপ-পরিচালক মো: সাঈদ আনোয়ার জানান, তাদের তালিকা অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে ২শ’ ৯২টি ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে বৈধ ও অনুমোদিত ২শ’ ৪০টি ইটভাটা ইতিমধ্যে আধুনিক প্রযুক্তিতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বাকী অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ করতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ না করা পর্যন্ত অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান।
Discussion about this post