বিশেষ প্রতিনিধি :
ভারত-বাংলাদেশ নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব বাড়বে বলে আশা করছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত রিভা দাস গাঙ্গুলি।
ভারতের কলকাতা থেকে আসা পর্যটকবাহি জাহাজ আরভি বেঙ্গল গঙ্গার পর্যটকট ও বিদেশী অতিথিদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ আশার কথা জানান।
শনিবার বিকেল পাচঁটায় নারায়ণগঞ্জে পাগলায় অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিএর ভিআইপি জেটি) মেরী এন্ডাসন ঘাটে জাহাজটি পৌছালে তাদের এই উষ্ণ সংবর্ধনা দেয়া হয়। এসময় বাংলাদেশের নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরি ও বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর মাহাবুব উল ইসলাম অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে অভ্যর্থনা জানান।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত রিভা দাস গাঙ্গুলী আরো বলেন, নদী পথে পর্যটকদের ভ্রমনের জন্য ভিসা সহজ করা হবে। বাংলাদেশের নৌ পবিহন মন্ত্রনালয়ে সাথে আলাপ আলোচনা করে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাভে ভারতের চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। নৌ পথে যোগাযোগের মাধ্যমে এই সম্পর্ক আরো দৃঢ হবে। বিদেশী পর্যটকরা নৌ পথে ভ্রমনে এসে নদী মাতৃক বাংলাদেশের অপরুপ সৌন্দর্য উপভোগ করে মুন্ধ বিদেশী পর্যটকরা। নদী পথে এই যাত্রা অব্যহত রাখার দাবি করেন তারা।
আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ইতালি ও অষ্ট্রেলিয়ার ছয়জন পর্যটকসহ ঊনিশজন যাত্রী ও ৩৫জন ক্রু নিয়ে জাহাজটি ২৯শে মার্চ দুপুর সাড়ে বারোটায় কোলকাতা খিদিরপুর বন্দর থেকে জাহাজটি বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। বাংলাদেশের সুন্দরবন হয়ে ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় খুলনার আংটিহারা বন্দরে জাহাজটি কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর মংলা, বরিশাল ও চাঁদপুর হয়ে নারায়ণগঞ্জে এসে নোঙর করে। গত আট দিনে নদী মাতৃক বাংলাদেশের সুন্দরবনসহ বিভিন্ন সৌন্দর্য উপভোগ করে নারায়ণগঞ্জ পাগলা মেরী এন্ডারসন জেটিতে আসে জাহাজটি। সফরকারী পর্যটকদের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া দীপক বড়–য়া, ইন্ডিয়া ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট অথোরিটির (আই ডব্লিউ আই) সাবেক চেয়ারম্যান নোটন গুহ বিশ্বাস এবং আর ভি বেঙ্গল গঙ্গার চেয়ারম্যান রাজ সিং সহ বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মীও রয়েছেন। এই ভ্রমন তাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে এবং এই যোগাযোগ ব্যবস্থার উত্তরোত্তর সাফল্যও কামনা করেন তারা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপদেষ্টা দীপক বড়–য়া জানান, তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। ভারতের পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশকেও ভালবাসেন।
দীর্ঘ সত্তুর বছর পর পুনরায় এই যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে সব ধরনের সম্পর্ক অরো উন্নত হবে বলে মনে করছেন জাহাজটির চেয়ারম্যান রাজ সিং । তিনি বলেন, এটি দৃই দেশের সংস্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করবে। আমি বিশ্বাস করি, নদী পথে যে যাত্রা শুরু হলো এটি অব্যহত থাকলে এই পথটি জনপ্রিয় হবে।
বিদেশী পর্যটকদেরকে স্বাগত জানিয়ে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চেীধুরী ভারতের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের সাথে একাত্বদা প্রকাশ করে বলেন, পর্যটকদের জন্য বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে নদী পথে যে যাত্রা শুরু হলো তা আমাদের দুদেশের মধ্যে বন্ধুত্ব বাড়বে। তিনি বলেন, এটি কবে নাগাদ কন্টিনিউ করবে সেটি এই মুহুতে বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা আশাবাদি দুই দেশের সাথে পারস্পারিক আলাপ আলোপনার মাধ্যমে এই শিগিরিই কন্টিনিউ করবো।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের বর্তমানে পোটগুলোতে কিছুটা দুর্বলদতা আছে। বিগত কোন সরকারের আমলে নৌ পথের কোন উন্নয়নের দিকে নজর দেয়নি। বর্তমান সরকার নৌ পথে উন্নয়নে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিক প্রচেষ্টায় র্দীঘ ৭০ বছর পর আবারও নৌ পথে ভারত বাংলাদেশেল সাথে সেতুবন্ধন তৈরি হলো। দেশের পোটগুলো উন্নয়ন করা হবে। একই সাথে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শীতলক্ষ্যা ও বুড়িগঙ্গা নদীর পানির সচ্ছতা ফিরিয়ে আনার জন্য সল্প মেয়াদী, মধ্য মেয়াদী ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহন করেছে সরকার।
আগামী ৮ এপ্রিল সকাল আটটায় পাগলা মেরী এন্ডাসন ঘাট থেকে জাহাজটি পুণরায় ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।
Discussion about this post