নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলছে তুমুল উত্তেজনা, উত্তাপ। এই উত্তাপ আরও বেশি উস্কে দিয়েছে বর্তমান সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও মোহসীন মিয়ার পক্ষে বহিরাগতদের শো-ডাউন। এ নিয়ে আদালত পাড়ায় আইনজীবীদের মাঝে চলছে উত্তেজনা ।
রোববার (১২ জানুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ্ নিজামের নেতৃত্বে যুবলীগ, ছাত্রলীগের প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী আদালত পাড়ায় শো-ডাউন করেন। তবে, এটি শো-ডাউন নয়, হাজিরার জন্য আদালতে গিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের এই নেতা।
আদালত পাড়ায় এদিন শাহ্ নিজাম ছাড়াও এই শো-ডাউনে আরও যারা ছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হৃদয়, যুবলীগ নেতা জানে আলম বিপ্লব, মজিবুরসহ শামীম ওসমানপন্থি নেতাকর্মীদের অনেকেই ।
এমন শোডাউনের পর অ্যাড. আনিসুর রহমান দিপু ও অ্যাড. মাহবুবুর রহমান মাসুমসহ অন্যান্য আইনজীবীগণ পুনরায় আইনজীবী সমিতির সাধারণ সভা আহ্বান করে সর্বস্মতিক্রমে নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়ে সমাবেশ করেছেন আদালত প্রাঙ্গনে ।
রোববার (১২ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে নারায়ণগঞ্জ আদালত পাড়ায় তাৎক্ষণিকভাবে সংবাদ সম্মেলনে যৌথভাবে ওই দাবি জানান তারা। এসময় একই দাবি উত্থাপন করেছেন সিনিয়র আইনজীবী ন্যাপ নেতা অ্যাড. আওলাদ হোসেনও।
তারা ‘সম্মিলিত আইনজীবী পরিষদ’ নামে একটি প্যানেলের মাধ্যমে নির্বাচনেরও ঘোষণা দিয়েছেন এই সংবাদ সম্মেলন থেকে। এবং দল নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন না হওয়া পর্যন্ত সাধারণ আইনজীবীদের পক্ষ থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও কথা জানিয়েছেন তারা।
অ্যাড. আনিসুর রহমান দিপু বলেন, আমরা কারো বিরুদ্ধে কোনো কথা বলতে চাই না । এটা একটি পেশাজীবী সংগঠন । প্রতিবছর এখানে নির্বাচন যেভাবে হয়, আমরা চাই সেভাবেই নির্বাচন হোক। যারা নির্বাচন কমিশনে আছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, যদি কারো বিরুদ্ধে একজন আইনজীবীও যদি অভিযোগ তুলে, তাহলে তার কমিশনে থাকা উচিৎ না । উনি অবশ্যই নিরপেক্ষ হতে হবে । সকলের শ্রদ্ধার ব্যক্তি হতে হবে । সবার মতামত নিয়ে তাকে কমিশনে রাখতে হবে ।
মাহবুবুর রহমান মাসুম প্রধান নির্বাচন কমিশমান আইনজীবী আখতারসহ আরও যারা কমিশনে আছেন সবাইকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যদি তারা পদত্যাগ না করেন এবং বিতর্কিত কাজকর্ম করেন এ জন্য আপনারা দায়ী থাকবেন। সাধারণ আইজীবীদের কাছে আপনাদের জবাবদিহি করতে হবে। আমাদের আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। সম্মিলিত আইনজীবী পরিষদের ব্যানারে আমরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাবো যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি আদায় না হবে।
অপরদিকে বিএনপির পন্থী আইনজীবী অ্যাড. জাকির হোসেন, সরকার হুমায়ূন ও আব্দুল হামিদ খান ভাষানী দাবি করেছেন, আদালতে সকাল থেকে বহিরাগতরা শো-ডাউন করেছে, বহিরাগতদের এই শো-ডাউন আইনজীবিদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করানোর জন্য। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি, আদালতে বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ করতে হবে।
তারা আরও বলেন, কোনো মতেই এই কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যাবো না, আমরা এই কমিশনের প্রত্যাহার চাই। যারা নির্বাচন কমিশনে রয়েছে তারা যদি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে তাহলে আমরা তাদের সাধুবাদ জানাবো, আর যদি অর্থের লোভে তারা কমিশন থেকে পদত্যাগ না করে তাহলে তাদের ঝাড়ুপেটা করে বের করেবো।
আইনজীবীদের এমন পরস্পর বিরোধী বক্তেব্য এবং শো ডাউন প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামীলীগ নেতা শাহ নিজাম গণমাধ্যমকে বলেন, “আমরা শো-ডাউন করিনি। আদালতে আমাদের একটা হাজিরা ছিলো। সে লক্ষ্যেই গিয়েছিলাম। আমাদের অনুসারিরা খবর পেয়ে তারাও এসেছিলো । তবে, হাজিরা হয়নি। পরে আমরা বার ভবনের দিকে যাই এবং জুয়েল মোহসিনের সাথে কুশল বিনিময়কালে নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা বলেছিলাম। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আদালত পাড়ায় আমরা যাইনি ।”
Discussion about this post