নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
ব্যাপক সমালোচনা, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক নেতাদের সমন্বয়ে সিন্ডিকেটের ব্যাপক গঞ্জনের পর নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কোরবানীর ১৭টি অস্থায়ী হাটের মধ্যে ১৬টি হাটের ইজারা সম্পন্ন হয়েছে ।
জেলাজুড়ে চরম বিতর্কের পর গোলযোগপূর্ণ পরিবেশে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কোরবানীর ১৭টি অস্থায়ী হাটের মধ্যে ১৬টি হাটের ইজারা সম্পন্ন হয়েছে।
এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক, সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফ উল্লাহ বাদল, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী সহ আরও অনেকে। ১৭টি হাটের মধ্যে একটি অস্থায়ী হাটের ইজারা স্থগিত রেখেছে উপজেলা প্রশাসন। হাটটি হলো রামনগর বিসমিল্লাহ মার্কেটে হাটে। যা সরকারী মূল্যের চেয়ে কম দাম উঠায় তা পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানানো হবে বলেই জানা যায়। এ হাটটির সরকারী মূল্য ১লাখ ১০ হাজার টাকা হলেও আব্দুল কাদির ৫৩ হাজার, শামীম ২৫ হাজার ও আব্দুল আউয়াল ৩০ হাজার টাকা দাম উল্লেখ্য করে সিডিউল জমা দেয়।
এ সময়ে, আলীগঞ্জ বুড়িগঙ্গা নদীরপাড় বিআইডব্লিউটি এর খালি জায়গা অস্থায়ী হাটের সরকারী নির্ধারিত মূল্য ছিলো ৩৬ লাখ ৮০ হাজার। ১ কোটি ১৫ লাখ ৫শ টাকায় হাটের ইজারা পান ফাতেমা মনির। কুতুবপুর ইউনিয়নের পাগলা তালতলা সংলগ্ন প্যারাডাইস সিটি মাঠে সরকারী ৮৫ হাজার থেকে ৫হাজার টাকা বাড়িয়ে ৯০ হাজারে ইজারা পেয়েছেন শাহ আলম গাজী টেনু।
গোগনগর ইউনিয়নের পরিষদ এর উত্তর পার্শ্বে (সৈয়দপুর পাঠান নগর) মো. মহিউদ্দিন এর নিজস্ব ভূমিতে হাটের ইজার পেয়েছেন সাকিল সরদার। তিনি সরকারি মূল্য ৫৬ হাজার টাকার চেয়ে এক হাজার টাকা বেশি মূল্যে ৫৭ হাজার টাকার বিনিময়ে ঐ হাটের ইজারা লাভ করেন। গোগনগর ইউনিয়নের পলি ফ্যাক্টরী সংলগ্ন আলী আকবর এর নিজস্ব ভূমি অস্থায়ী পশুর হাটের ইজারা পেয়েছেন আল-মামুন। তিনি ৪২ হাজার টাকায় এই হাটের ইজারা লাভ করেন। যার সরকারী মূল্য ছিলো ৪০ হাজার টাকা।
কাশিপুর ইউনিয়নের ক্লাব মাঠ (ভূমি অফিস) সংলগ্ন খালি জায়গায় ৩৩ হাজার টাকায় হাটের ইজারা পেয়েছেন আইয়ুব আলী। ওই হাটের সরকরি ইজারা মূল্য ছিলো ৩১ হাজার টাকা। ফতুল্লা ইউনিয়নের তল্লা আজমেরী বাগ এলাকায় মো. জানে আলম এর নিজস্ব ভূমি সরকারী মূল্য ৭০ হাজার বিপরীতে ৭১হাজারে হাটটির ইজারা পেয়েছেন জানে আলম বিপ্লব।
বক্তবালী ৪নং ওয়ার্ড রাজাপুর হাটের ইজারা পেয়েছেন সাব্বির আহম্মেদ। হাটের সরকারি মূল্য ৫২ হাজার টাকা। ইজারাদার সাব্বির আহম্মেদ ৫২ হাজার ৫শ টাকায় এই হাটের ইজারা লাভ করেন। তার নিকটতম ছিলেন মুজিবুর রহমান। তিনি ৪০ হাজার টাকা হাকিয়ে ছিলেন। গোগনগর ইউনিয়নের বাদশা মিয়ার নিজস্ব ভূমি হাটের ইজার পেয়েছেন এস এম মুসলে উদ্দিন, তিনি ৩৮ হাজার ৫শ টাকায় হাটের ইজারা পেয়েছেন।
গোগনগর ইউনিয়নের চর সৈয়দপুর কাঠপট্টি খেয়াঘাট সংলগ্ন সৈয়দ ডাইং এর নিজস্ব ভূমি হাটের ইজারা পেয়েছেন মো. আসলাম সরকার। তিনি সরকারি মূল্য ৫ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকার উর্ধে ৫ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা বিনিময়ে এই হাটের ইজারা পেয়েছেন। গোগনগর ইউনিয়নের বাড়ির টেক সংলগ্ন মাদবর বাড়ির পশ্চিমপার দেলোয়ার হোসেন এর নিজস্ব ভূমিতে হাটের সরকারী মূল্য ৫৬ হাজার। দেলোয়ার হোসেন ৭০ হাজারে পেয়েছেন পেয়েছেন হাটের ইজারা। আলীরটেক আমান মার্কেট এলাকায় হাটটির সরকারী মূল্য ২৬ হাজার হলেও মো জামাল উদ্দিন ২৬ হাজার ৫শ টাকায় পেয়েছেন হাটের ইজারা।
বক্তাবলী ইউনিয়নের চর বয়রাগাদি মোশাররফ মিয়ার ব্যক্তিগত মালিকানা খালি জায়গা হাটের ইজারা পেয়েছেন সিদ্দিকুর রহমান। তিনি সরকারি মূল্য ২২ হাজার টাকার অধিক ২৩ হাজার টাকায় অত্র হাটের ইজারা পেয়েছেন। বক্তাবলী ইউনিয়নের ছমির নগর আদর্শ বাজার সংলগ খালি জায়গায় ইজারার সরকারি মূল্য ২৪ হাজার টাকা। মো. আবুল কাশেম দেওয়ান সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ২৪ হাজার টাকায় অত্র হাটের ইজারা পেয়েছেন।
কুতুবপুর ইউনিয়নের শান্তিধারা এলাকায় হাজী আব্দুর রাজ্জাক বেপারীর মার্কেট সংলগ্ন খালি মাঠে ৬১ হাজার টাকায় ইজারা পায় আব্দুল রাজ্জাক ব্যাপারী। হাটটির সরকারী মূল্য ছিলো ৫০হাজার টাকা।
গোগনগর ইউনিয়নের পুরান সৈয়দপুর এলাকা আলী আকবর এর নিজস্ব ভূমি হাটের ইজারার সরকারি মূল্য ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। হাটের ইজারা পেয়েছেন নাজির আহম্মেদ, তিনি ১ লক্ষ ১১ হাজার টাকায় এই হাটারে ইজারা লাভ করেন। ভূইঘর রূপায়ন টাউন্স সংলগ্ন খালি জায়গার হাটটির সরকারী মূল্য ৫৯ হাজার অধিক ১হাজার টাকা বেশি দিয়ে ৬০হাজার টাকায় ইজারা পেয়েছেন মানিক চান।
প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা ও হাট ইজারা চক্রের হোতাদের কারণে এমন বিশৃংখল পরিস্থিতিতে ইজারা সম্পন্ন হওয়ার পর উপস্থিত অনেকেই কঠোর সমালোচনা করে নানা মন্তব্য করতে শোনা যায় । অনেকেই বলেন এক ফাতেমা মনির ছাড়া রাজস্ব ফাকি দিতে প্রশাসনের অনেকেই আদাজল খেয়ে মাঠে নেমে সফল হয়েছেন । যার দায় দায়িত্ব জেলা প্রশাসনকেই বহন করতে হবে । জেলা প্রশাসনের কয়েকজন এবং নেতাদের কারা কারা এই রাজস্ব ফাঁকিতে জড়িত তা উপস্থিত সকলেই বুঝতে পেরেছেন । এখন কথা বলছেন না নানা ভয়ের কারণে । হাট নিয়ে এতো কেলেংকারীর খবর সকল গোয়েন্দা সংস্থাও পর্যবেক্ষণ করছে ।
(যার ভিডিও রেকর্ড রয়েছে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট দপ্তরে)
Discussion about this post