কি হচ্ছে রূপগঞ্জে ? আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যগণ করছেন টা কি ? অপরাধী চক্র মাথায় ওয়ারেন্ট নিয়ে পুলিশের সাথে অবস্থান করে কি করে ? বিগত সময়েও কথিত গবেষক (!), সাংবাদিক, সমাজ সেবক (!) মীর আবদুল আলীম নামের এক ব্যাক্তি অসংখ্য ওয়রেন্ট মাথায় নিয়ে পুলিশের এসপি, এএসপি, ওসির সাথে বৈঠক করার দৃশ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে তোলপাড়ের সৃস্টি হয় নারায়ণগঞ্জে।
ঠিক তেমনি রূপগঞ্জে পিতা ও পুত্র হত্যার প্রধান আসামী ও অস্ত্র মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত অপরাধী রূপগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান কথিত ছাত্রলীগ নেতা শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহরিয়ার পান্না ওরফে ভিপি সোহেল প্রকাশ্যই পুরো রূপগঞ্জ চষে বেড়াচ্ছে বলে জোড়ালো অভিযোগ উঠেছে ।
এমন অভিযোগের বিষয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের সকল দায়িত্বশীল কর্মর্তাদের সাথে যোগাযোগ করলেও কারো কোন মন্তব্য পাওয়া যায় নাই ।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আনিসুর রহমান এর আদালত সূত্রে জানা যায়, রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহরিয়ার পান্না ওরফে ভিপি সোহেলসহ তার সহযোগি সজিব, সেলিম ও কাইয়ুমের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের মামলায় ৯ নভেম্বর সোমবার ওয়ারেন্ট জারি করে ।
দীর্ঘ ২০ দিন অতিবাহিত হলেও আদালতের নির্দেশ অমান্য করে রূপগঞ্জ তানা পুলিশের অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় এমন অপরাধী প্রকাশ্যেই বুক ফুলিয়ে চষে বেড়াচ্ছে পুরো এলাকা । ওয়ারেন্ট মাথায় নিয়েই শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহরিয়ার পান্না ওরফে ভিপি সোহেল এলাকায় চাঁদাবাজি, ভমিদস্যুতাসহ সকল ধরণের অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছেই । ওয়ারেন্ট মাথায় নিয়ে এমন অপরাধ করার কারণে এলাকার কোন মানুষ এই অপরাধীদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস করে না ।
ভাইস চেয়ারম্যান শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহরিয়ার পান্না ওরফে ভিপি সোহেলের বিষয়ে আরো খোজ নিয়ে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ছেলে নজরুল ইসলাম বাবু ও বাবা জালাল উদ্দিনকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহরিয়ার পান্না ওরফে ভিপি সোহেলকে ২০১৫ সালের ১৯ জুন বৃহস্পতিবার গভীর রাতে র্যাব-১১ একটি দল রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা সোহেলকে গ্রেপ্তার করেছিলো ।
এরপরও তাকে কেউ থামাতে পারে নাই । নানা অপরাধ কার্যক্রমসহ অস্ত্র মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী হয়েও বীরদর্পে পুরো রূপগঞ্জ উপজেলা চষে বেড়াচ্ছেন কুখ্যাত এই অপরাধী ।
রূপগঞ্জ থানা সূত্রে জানায়, ভিপি সোহেল ছেলে নজরুল ইসলাম বাবু হত্যা মামলার ও বাবা জালাল উদ্দিন হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি। সোহেল মুরাপাড়া ডিগ্রি কলেজের ছাত্র সংসদে ছাত্রলীগ প্যানেলের স্বঘোষিত ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি)।
সোহেলকে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে তৎকালীন সময়ে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে র্যাব-১১ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ এর সিও লে. কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি দল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাহ্ উদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে ভিপি সোহেলকে গ্রেপ্তার করে।
২০১৫ সালের ২০ জুন শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের সিও জানান, ভিপি সোহেলের পরিকল্পনায় গত ১৪ মে বাবু হত্যা মামলার বাদী জালালকে পরিকল্পিতভাবে সাদা রঙের মাইক্রোবাসে করে অপহরণ করা হয়। এরপর জালালকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ভিপি সোহেলের মিরকুটিরছেও বাসায় ওই অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। জালালকে অপহরণের আগে ওই মাইক্রোবাসটি ভিপি সোহেলের বাসার সামনে রাখা ছিল। সোহেলের অনুসারী ও সন্ত্রাসী লেদা ফারুক, সবুজ, সেলিম, মোহাম্মদ আলী, তাওলাদ হোসেন তালু, রশিদসহ অন্যান্যরা জালাল হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়।
র্যাবের সিও জানান, ভিপি সোহেলের পরিকল্পনায় গত ১৪ মে বাবু হত্যা মামলার বাদী জালালকে পরিকল্পিতভাবে সাদা রঙের মাইক্রোবাসে করে অপহরণ করা হয়। এরপর জালালকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ভিপি সোহেলের মিরকুটিরছেও বাসায় ওই অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। জালালকে অপহরণের আগে ওই মাইক্রোবাসটি ভিপি সোহেলের বাসার সামনে রাখা ছিল। সোহেলের অনুসারী ও সন্ত্রাসী লেদা ফারুক, সবুজ, সেলিম, মোহাম্মদ আলী, তাওলাদ হোসেন¦তালু, রশিদসহ অন্যান্যরা জালাল হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়।
সিও লে. কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান জানান, ভিপি সোহেল বাবু হত্যা মামলার প্রধান আসামি। জালাল হত্যায় অংশ নেওয়া সন্ত্রাসীরাও বাবু হত্যা মামলার আসামি। জালাল জীবিত থাকাকালে সোহেল দীর্ঘদিন ধরে বাবু হত্যা মামলা তুলে নিতে তাঁকে চাপ দেয়। কিন্তু তাতে রাজি না হওয়ায় জালালকে হত্যা করা হয়। এরপর সোহেল আত্মগোপন করেন।
র্যাব-১১ সিও আরও জানান, তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করলেও তিনি মূলত জমির দালাল ও শীর্ষ সন্ত্রাসী শওকত গ্রুপের সদস্য ছিলেন। শওকত মারা যাওয়ার সোহেল ওই গ্রুপরে নেতৃত্বে আসেন। রূপগঞ্জের মুরাপাড়ায় সন্ত্রাসী আলমাস ও শওকত গ্রুপরে দ্বন্দ্বে এ পর্যন্ত অনেকগুলো হত্যার ঘটনা ঘটেছে। সোহেলকে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
ভিপি সোহেল ও তার অনুসারীরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন ও অস্ত্র ব্যবসা করে আসছিল। ওই কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় সোহেলের অনুসারীরা ২০১১ সালের ৫ নভেম্বর বাবুকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় বাবুর বাবা জালাল বাদী হয়ে সোহেল ও তার অনুসারীদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। কিন্তু গত ১৫ মে বাবু হত্যার আসামিরা জামিনে বেরিয়ে জালালকে বাড়ি থেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে হত্যা করে। এই ঘটনায় জালালের স্ত্রী বাদী হয়ে সোহেলসহ ২১ আসামির বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা করেন। পুলিশ সোহেলের সহযোগী ইকবালকে গ্রেপ্তার করে। জালাল হত্যার ঘটনায় ইকবাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাতে সোহেল ও তাঁর অনুসারীদের হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে আসে।
এতো অপরাধের পরও ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে পিতা পুত্র হত্যা মামলার আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহরিয়ার পান্না ওরফে ভিপি সোহেল ২০১৯ সালের ১৮ জুন মধ্যরাতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ গুলিভর্তি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রসহ িইজাজুল ও দ্বীন ইসলামকে আটক করে । এ সময় ধূর্ত সন্ত্রাসী শাহরিয়ার পান্না ওরফে ভিপি সোহেল ও তার সহযোগি সজিব , সেলিম ও কাইয়ুম পালিয়ে গেলেও তাদেরকে আটক কার সম্ভব হয় নাই । এতোদিন যাবৎ এই শীর্ষ সন্ত্রাসীরা এখনো পুলিশের খাতায় আদালত কর্তৃক পলাতক আসামী হলেও পিতা পুত্র হত্যা ও অস্ত্র মামলার আসামী শাহরিয়ার পান্না ওরফে ভিপি সোহেল প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে পুরো রূপগঞ্জে । প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানো ছাড়াও এই কুখ্যাত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকার পরও রূপগঞ্জ থানা, রূপগঞ্জ ভুমি অফিস, নারায়ণগহ্জ জেলা প্রশাসেনর দপ্তরের বিভিন্ন কার্যালয়ে প্রায়ই দেখা যায় । এমন ওয়ারেন্ট থাকার পরও কি করে মীর আবদুল আলীমের মতোই বীরদর্পে ওয়ারেন্ট মাথায় নিয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহরিয়ার পান্না ওরফে ভিপি সোহেল প্রকাশেই ঘুরে বেড়াচ্ছে । যে কোন সময় আবারো বড় ধরণের অঘটন ঘটাতে পারে এই সন্ত্রাসী ও তার সহযোগিরা । এমন মন্তব্য রূপগঞ্জের অভিজ্ঞ মহলের ।
বিগত দিনে একাধিক ওয়ারেন্ট মাথায় নিয়ে মীর আবদুল আলীমের মতো ফের চাত্রলীগের নামধারী নেতা ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহরিয়ার পান্না ওরফে ভিপি সোহেল কি করে রূপগঞ্জের সর্বত্র প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং পুলিশের সাথে আঁতাত রেখে বীরদর্পে চলছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) মাহিন ফরাজি, রূপগ্ঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান ও রূপগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত জসিম উদ্দিনের সাথে অসংখ্যবার মুঠোফোনে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট এর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করলেও কেউ ফোন রিসিভ না করায় এমন গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য পাওয়া য়ায় নাই ।
Discussion about this post