নারায়ণগঞ্জের নানা অপকর্মের হোতা কুখ্যাত অপরাধী ওষুধ ব্যবসায়ীদেরকে জিম্মি করে দীর্ঘদিন যাবৎ চাঁদাবাজির মূল হোতা শাহজাহান খান কে এবার কারাগারে পাঠিয়েছেন মুন্সীগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম রোকেয়া রহমান।
একই সাথে শাহজাহান খানের সহযোগি আট আসামীকে রিমান্ডে পাটিয়েছে আদালত । এমন রিমান্ড ও শাহজাহান খানকে কারগোরে পাঠানোর বিষয়টি নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে নিশ্চিত করেছে সুন্সীগঞ্জ আদালতের পুলিশ ইন্সপেক্টর জামাল উদ্দিন ।
তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় ওয়ারেন্ট থাকার পর এবার মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার বৈদ্যারগাঁও এলাকায় গত ৯ সেপ্টেম্বর একই গ্রামের রুবেল (৩২) ও কবির (২২) এর হাতের কব্জি কেটে কাটা কব্জি নিয়ে মিছিল করে শাহজাহান খান ও তার নিয়ন্ত্রিত সন্ত্রাসীরা। এমন তান্ডব চালানোর ঘটনায় সর্বশেষ মামলায় পলাতক থেকে শাহজাহান খান ও তার সহযোগিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বীরদর্পে মুন্সীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ থেকে মামলা প্রত্যাহার করাতে চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে এবার আদালতে হাজির হয়েছেন ।
এর পূর্বেই সন্ত্রাসী শাহজাহান খানের ২০ সহযোগি আসামী আদালতে আত্মসমর্পন করলে তাদেরকে কারাগারে পাঠায় আদালত । পরবর্তীতে ২০ আসামীর প্রত্যেককে ৫ দিন করে রিমান্ড চেয়ে গজারিয়া থানা পুলিশ আদালতে আবেদন করলে আজ মঙ্গলবার ১ ডিসেম্বর শুনানী শেষে জামান খান, আল আমিন খান, মাসুম খান, সাইদুর খান, সোলাইমান খান, শিকদার, আরমান খান, ফজলুল কে ২ দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেয় আদালত।
একই সাথে মুন্সীগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম রোকেয়া রহমানের আদালতে শাহজাহান খান ১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় হাজির হলে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন এবং একই সাথে বিধি মোতাবেক শাহজাহান খানের সহযোগি আট (৮) জন আসামীকে বিধি মোতাবেক জিজ্ঞাসাবাদ করতে আদেশ দেয়া হয় ।
একদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্যামিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির স্বঘোষিত সভাপতি ও মুন্সীগঞ্জ জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে মৃত হায়দার আলী খানের পুত্র শাহজাহান খান নিজে ধরাকে সরাজ্ঞান মনে করে নারায়ণগঞ্জে যেমন বিশাল চাঁদাবাজির মহোৎসব চালাতেন তেমনি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যুতা, আধিপত্য বিস্তার করে বালু সন্ত্রাসীসহ নারী কেলেংকারীর মতো অপকর্ম করে বেড়াতেন ।
হাতের কজ্বি কেটে মিছির করার বিষয়ে গজারিয়া থানায় দায়ের করা মামরার বিবরণ থেকে জানা যায়, গজারিয়া উপজেলায় গত ৯ সেপ্টেম্বর রুবেল ও কবির নামের দুই যুবককে কুপিয়ে হাতের কব্জি কেটে উল্লাস করার ঘটনায় জামান খান, আল আমিন খান নূরুজ্জামান খান, মাসুম খান, সািইদুর খান, সোলাইমান খান, শিকদার, আরমান খানসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ১০/১২ জন সন্ত্রাসীকে অজ্ঞাতনামাকে আসামী করে ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৩৮৫/৩৮৬/৫০৬/১১৪ পেনাল কোড ধারায় গজারিয়া থানায় তানিয়া আক্তার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন ।
হাতের কজ্বি কেটে উল্লাস করে এলাকায় তান্ডব চালানোর এক পর্যায়ে থানায় মামলা দায়েবর ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে মুন্সিগঞ্জ থেকে পালিয়ে নারায়ণগঞ্জে আশ্রয় নেয় শাহজাহান খানসহ তার অনুসারিরা । শাহজাহান খান দীর্ঘদিন নারায়ণগঞ্জের মাসদাইর ও সস্তাপুর এলাকার পৃথক স্ত্রী দের সহায়তায় পুলিশকে ম্যানেজ করে শহর অবস্থান করেই ব্যাপক চাঁদাবাজি করে ওয়ারেন্ট মাথায় নিয়েই ।
এই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিতে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমের নাম ব্যবহার করছে বলেও গুঞ্জন রয়েছে । একই সাথে পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমের সাথে কুক্ষাত এই অপরাধী শাহজাহান খানের সাথে তোলা ছবি প্রদর্শন করে বাড়তী সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করছে বলেও জোড়ালো গুঞ্জন রয়েছে নারায়ণগঞ্জে ।
মুন্সীগঞ্জ আদালত কর্তৃক নানা অপরাধের হোতা শাহজাহান খান কে কারাগারে ও তার আট সহযোগিকে রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর হওয়ার ঘটনায় মুন্সীগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণে ব্যাপক আলোচনা সমালোচার সৃষ্টি হয়েছে । অনেকেই বলেছেন , বহু অপরাধ করে ব্যাপক তদ্বির চালিয়েও শেষ রক্ষা হলো না এই অপরাধী চক্রের । এবার বিচার হলেই শান্তি ফিরে আসবে গজারিয়ায় ।
Discussion about this post