রূপগঞ্জে সিটি গ্রুপের সিটি ইকোনমিক জোন কারখানায় ঈদ বোনাস কে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিক্ষোভ এখনো নিরসনে কার্যকরী কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই সিটি গ্রুপ কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সোমবার (৮ এপ্রিল) সকালে একাধিক শ্রমিক, সিটি গ্রুপের নির্ভরশীল সূত্র ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করলে সকল পক্ষ ই নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে বলেন, সিটি গ্রুপ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঈদ বোনাস গেঞ্জির বদলে প্রত্যেক শ্রমিক কে ৫শ টাকা করে দেয়া হবে । অপরদিকে শ্রমিকদের দাবী বিগত সময়ে ঈদ বোনাস হিসেবে ১ হাজার টাকা, সেমাই চিনি আর লুংগি সাড়ি দেয়া হতো। পূর্বের ন্যয় ওই রকম ঈদ বোনাস দিলেই মেনে নেয়া হবে ।
এমন দাবীতে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে হাজার হাজার শ্রমিক । যে কোন সময় রোববারের মতো লংকাকান্ড ঘটতে পারে বলেও আশংকা এলাকাবাসীর ।
জানা যায়, রোববার (৭ এপ্রিল) বোনাসের পরিবর্তে অস্থায়ী শ্রমিকদের একটি করে গেঞ্জি দেয়াকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা ।
এমন কান্ডে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। প্রতিবছর তাঁদের ঈদ বোনাস দেওয়া হলেও এবার না দেওয়ায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা কারখানার ভেতর ও বাইরে ভাঙচুর চালান।
বেলা ১১টার দিকে উপজেলার রূপসী এলাকায় সিটি ইকোনমিক জোনে এই ঘটনা ঘটে।
এ সময় রূপসী কাঞ্চন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি গাড়ির কাচ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় রূপগঞ্জ থানা ও শিল্প পুলিশ।
কারখানার শ্রমিকেরা জানান, ইকোনমিক জোনে বিভিন্ন সেকশনে প্রায় তিন হাজার অস্থায়ী কর্মচারী রয়েছেন। প্রতিবছর ঈদে স্থায়ী, অস্থায়ী সব শ্রমিকরাই বেতনের পাশাপাশি বোনাস পেয়ে থাকেন। কিন্তু এবার অস্থায়ী শ্রমিকদের কোনো বোনাস দেওয়া হয়নি। তার বদলে দেওয়া হয়েছে গেঞ্জি। আজ সকালে শ্রমিকেরা একত্রিত হয়ে অ্যাডমিন বিভাগে গিয়ে বোনাসের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। সেসময় তাদের জানানো হয়, অস্থায়ী শ্রমিকদের কোনো বোনাস দেওয়া হবে না।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক শ্রমিক বলেন, ‘প্রতিবছর ঈদে বোনাস দিলেও এবার দিচ্ছে না। ধরিয়ে দিয়েছে নিম্নমানের গেঞ্জি। একবার ধোয়ার পর সেটা আর পরা যাবে না।’
এদিকে বোনাস না পাওয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শ্রমিকেরা। কারখানার ভেতর ও বাইরে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। কারখানার সামনে রূপসী কাঞ্চন সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন গাড়ি ভাঙচুর করেন তাঁরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ‘বোনাস-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে শ্রমিকেরা অবরোধ ও ভাঙচুর চালিয়েছেন। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। বর্তমানে পুরো এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
Discussion about this post