অত্যান্ত দাপটের সাথে গাণম্যান বেষ্ঠিত হয়ে প্রতারণার মাধ্যমে যুবলীগের সমবায় সম্পাদক হিসেবে পরিচয়দানকারী জি কে শামীমের পূর্ণ নাম এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম । নারায়ণগঞ্জ শাখা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিও পরিচয় দিতো এই কুখ্যাত অপরাধী । এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর যুবদলের সহ-সম্পাদক ছিলেন। জি কে শামীম বিএনপির প্রভাবশালী নেতা মির্জা আব্বাসের খুবই ঘনিষ্ঠ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ছিলো এই জিকে শামীম।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল হাই, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব হাসনাত শহিদ মোঃ বাদলসহ অনেক নেতাদের ম্যানেজ করেই এই অপরাধী তার নানা অপরাধ কর্মকান্ড পরিচলানা এবং যুবদলের সন্ত্রাসী হয়েও নিজেকে যুবলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে দাবড়ে বেড়াতো ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ। নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ছাড়াও গণপূর্ত বিভাগে ঠিকাদারী নিয়ন্ত্রণ করতে আরেক অপরাধী সালাউদ্দিনের মাধ্যমে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নাম ব্যবহার করে নারায়ণগঞ্জে সেই সালাউদ্দিনের মাধ্যমে গণপূর্ত বিভাগে একক আধিপত্য বিস্তার করতো এই অপরাধী। জিকে শামীম কারাগারে আরামে আয়েশে থাকলেও এখনো গণপূর্ত বিভাগের টেন্ডার নিয়ন্ত্রক হিসেবে সালাউদ্দিনের বিকল্প কেউ নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে নাই ।
সেই গণপূর্ত বিভাগের যুবলীগের কথিত নেতা ও বিতর্কিত ঠিকাদার কখ্যাত অপরাধী গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমসহ আটজনের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে করা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামী ২৫ জুন।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হওয়ার পর এই তারিখ ধার্য করেন। যুক্তিতর্ক শুনানির সময় জিকে শামীমসহ আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার অপর আসামিরা হলেন—মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. মোরাদ হোসেন, মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. শহীদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন ও মো. আনিছুল ইসলাম। তাঁরা প্রত্যেকেই জি কে শামীমের দেহরক্ষী।
গত বছরের ২১ ডিসেম্বর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। এ বছরের ১৭ জানুয়ারি আসামিরা আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেন। চার্জশিটভুক্ত ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। এর আগে সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবু সাঈদ তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৪ আগস্ট আদালতে জি কে শামীম ও তাঁর সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। ওই বছরের ১০ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে নিকেতনের নিজ বাসা থেকে শামীমকে আটক করা হয়। শামীমের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় নগদ ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা ছাড়াও ৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকার বিদেশি মুদ্রা, শামীম ও তাঁর মা আয়েশা আক্তারের নামে ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এফডিআর, মায়ের নামে আরও ৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার ব্যবসার অংশীদার এবং জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানির শেয়ার, গাড়ি ও এফডিআর বাবদ ৩৬ কোটি ৩৫ লাখ ১৮ হাজার ৭১৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের বৈধ উৎস পায়নি দুদক।
অনুসন্ধানে শামীমের মায়ের বৈধ আয়ের উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, মোট ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের সন্ধান পাওয়া যায়। ঘটনার পরে পৃথক পৃথকভাবে অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদের জন্য মামলা করা হয় জি কে শামীম ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
Discussion about this post