৩০টি ব্যবসায়িক গোষ্ঠী মিলে শীতলক্ষ্যা নদীর দুই পাড় দখল করে রেখেছে। মিডিয়াগুলো যারা দখল করে আছে, তাদের অনেকেই নদী দখল করে রেখেছে বলে দাবি করেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মজিবর রহমান হাওলাদার। তিনি প্রশ্ন রাখেন, সরকার যদি রাস্তার জমি উদ্ধার করতে পারে তাহলে নদী কেন উদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া হয় না ?
‘নদী দূষণ রোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব অভিযোগ করেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
সরকারি দলের অনেক এমপি ব্যবসায়ীরা নদী দখলের সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আমাদের জন্মই হয়েছে ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা, মেঘনা, যমুনা’ স্লোগান দিয়ে। নদীকে কেন্দ্র করেই আমাদের বেড়ে ওঠা। নদী একটা জীবন্ত সত্তা, তাকে হত্যা করার অধিকার কারও নেই। এখনই অ্যাকশন নিতে হবে।
সভায় অপর বক্তা ডেইলি স্টারের প্রধান প্রতিবেদক পিনাকী রায় বলেন, নদীর জন্য অনেক টাকা বরাদ্দ হচ্ছে। কিন্তু সেগুলোর অধিকাংশ নদীর পাড়, ল্যান্ডিং স্টেশনসহ অন্যান্য স্থাপনা তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। নদীর পানি দূষণ বা দখল নিরসনে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। দেশের মিডিয়া পরিবেশ ও নদী রক্ষায় তার কাজ করছে, কিন্তু যথাযথ ফলাফল আসছে না। কারণ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তাদের কাজগুলো করছে না বলে মনে করেন এ সাংবাদিক।
নেক্সাস টেলিভিশনের কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর আমিন আল রাশেদ বলেন, প্রতিনিয়ত নদী নিয়ে অনেক প্রতিবেদন ও সেমিনার হচ্ছে। কিন্তু মাঠপর্যায়ে যারা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেন, তারা সৎ না হলে কোনও লাভ হবে না। এর জন্য রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মত দেন তিনি।
সভায় রাজধানীর চারপাশের তুরাগ, বুড়িগঙ্গা, বালু নদীসহ বিভিন্ন নদী দূষণের চিত্রে স্থানীয়দের বক্তব্য, নদী দূষণ প্রতিরোধ এবং বেদখলের লক্ষ্যে মতামত তুলে ধরেন বিশিষ্টজনেরা। তারা জানান, নদী দূষণের প্রায় ৯০ শতাংশ ঘটছে কলকারখানা ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে।
সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার বলেন, সুন্দরবন আমাদের বড় বড় ঝড় থেকে রক্ষা করেছে কিন্তু এখন অনেকে দখলের উদ্দেশ্যে সুন্দরবনে আগুন লাগাচ্ছে। নদীগুলোতে বিষ দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। বিষের কারণে সেই এলাকায় অনেক বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম নিচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
Discussion about this post