শেষ পর্যন্ত শান্তি পেতেই হলো নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার সস্তাপুর পঞ্চায়েত মসজিদের সাবেক ঈমাম সুলতান মৌলভীর পুত্র পুলিশ কর্মকর্তা পুলিশ সুপার (এসপি) মোক্তার হোসেনের ।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে গিয়ে অধিনস্ত এক নারী কর্মকর্তার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে দুই ধাপ অবনমিত হলেন এসপি মোক্তার হোসেন। তিনি ২৪ বিসিএসের কর্মকর্তা।
সর্বশেষ পিবিআইয়ে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিশন) কক্সবাজারে এসপি পদে দায়িত্বরত ছিলেন মোক্তার।
নারী পুলিশ কর্মকর্তার অভিযোগের পর দীর্ঘ তদন্ত শেষে এই পুলিশ কর্মকর্তাকে দুই বছরের জন্য নিম্ন পদে নামিয়ে গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গত ৮ মে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে ছিলেন মো. মোক্তার হোসেন। সেখানে আরও একবছর আগে থেকে ছিলেন অভিযোগকারী নারী ইন্সপেক্টর। সেখানে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়। এরপর বিয়ের প্রলোভনে তাদের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয়। উভয়ে ছুটিতে ঢাকায় এসেও অনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখেন। এক পর্যায়ে বিয়ে না করায় ২০২১ সালের ১৩ এপ্রিল ওই নারী কর্মকর্তা পুলিশের আইজির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। শান্তিরক্ষা মিশনে কন্টিনজেন্টের কমান্ডার থাকাবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে নারী সদস্যদের উত্যক্ত করারও অভিযোগ করেন ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তা। দীর্ঘ তদন্ত শেষে এসপি মোক্তারকে শাস্তি দেওয়া হলো।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মো. মোক্তার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার ব্যক্তিগত ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এমন ঘটনায় ওই নারী মামরা দায়ের করলে এসপি মোক্তার হোসেন ২০২২ সালের ১৯ ডিসেম্বর তারা (বাদী-বিবাদী) আপস করে বিয়ে করেছেন। আসামির জামিনে আপত্তি নেই বলে জানান বাদী। আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে মোক্তার হোসেনের জামিন মঞ্জুর করে।
এসপি মোক্তারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা, ফতুল্লায় চাঞ্চল্য
পুলিশ কর্মকর্তা মোক্তার হোসেন কর্তৃক এমন ধর্ষনের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় ব্যাপক চাঞ্চল্যে এখনো রয়েছে পুরো এলাকায় ।
ফতুল্লার একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, মূলতঃ কুমিল্লা থেকে সস্তাপুর কুতুবআইল প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকতার চাকুরীর সুবাধে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার আসেন সুলতার মৌলভী । স্কুলের শিক্ষকতার পাশাপশি সস্তাপুর পঞ্চায়েত মসজিদের ঈমাম ছিলেন এই সুলতান মৌলভী । তার দুই পুত্রের মধ্যে মোক্তার হোসেন পুলিশের এসপি হিসেবে কর্মরত। ভাই মোক্তারের পুলিশী ক্ষমতার দাপটে ছোট ভাই আক্তার হোসেন মাদক ব্যবসা, ডাকাতি ও ছিনতাইসহ নানা অপরাধ করে বারবার গ্রেফতার হলেও জোড়ালো তদ্বিরের কারণে বারবার ছাড়া পেয়ে পুরো সদর উপজেলায় ব্যাপক তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছিলো।
অতি সম্প্রতি ফতুল্লা কমিউনিটি পুলিশের সেক্রেটারী মোস্তফা কামালের পরিবারের সদস্যদের পিটিয়ে গুরুতর আহত করার পর এই পুলিশ কর্মকর্তা মোক্তারের ভাই আক্তারসহ তার সহযোগি মাদক ব্যবসায়ীরা রয়েছে বহাল তবিয়্যতে। এমন ঘটনায় ফতুল্লা থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও শেষ পর্যন্ত টিকিটিও স্পর্শ করতে পারে নাই মাদক ব্যবসায়ী ও নানা অপরাদের হোতা আক্তারের। এমন ধর্ষনের ঘটনার পূর্ব থেকেই মোক্তার হোসেন ও তার পরিবারের দাপটে পুরো এরাকার সকলেই ছিলো টটস্থ । পুলিশের দাপটেও কেউ টিকতেই পারতো না।
Discussion about this post