নাগরীর চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকায় সাততলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলের স্ত্রী সাদিয়া ইসলাম ওরফে নিঝুর (৩০) মৃত্যুর ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
সোমবার (৬ মার্চ) সকালে নিহত সাদিয়া ইসলামের মা ঝর্ণা হায়দার বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি করেন।
সাদিয়া হায়দারের মৃত্যুর পর গতকাল সন্ধ্যার দিকে তাঁর স্বামী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তবে জিজ্ঞাসাবাদ করে রাত সাড়ে ৯টার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। শাহজালাল বাদল নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর হোসেনের ভাতিজা।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) চাই লাউ মারমা বলেন, সাদিয়া মৃত্যুর ঘটনায় নিহত সাদিয়ার মা বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় অপমৃত্যু মামলা করেছেন। বিধি অনুযায়ী নিহত সাদিয়া ইসলামের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহত সাদিয়া ইসলামের পরিবার থেকে এখন পর্যন্ত অভিযোগ না থাকায় শাহজালাল বাদলকে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের পুলিশি তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। পরবর্তী সময়ে আমরা যদি কোনো অভিযোগ পাই তাহলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এর আগে রোববার বিকেলে সাদিয়া ইসলাম মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত করেন নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার শেখ ফরহাদ ও মফিজ উদ্দিন।
ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মাতার হাড় ভেঙ্গে যাওয়া ও কলিজা পেটে যাওয়ার কারণেই প্রাথমিক বাবে ধারনা করা হচ্ছে মৃত্যুর মূল কারণ। অর্থৎআঘাত ও রক্তক্ষরণজনিত কারণে তাঁর মৃত্য হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ছাদ থেকে টিনের চালের ওপর পড়ে যাওয়ার কারণে তার পা-সহ শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যাবে।
নিহত সাদিয়া ইসলাম শহরের চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকার হায়দার আলী শামীমের মেয়ে। সাদিয়া তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে চাষাঢ়া এলাকার সাততলা ভবনের ছয়তলায় একটি ফ্ল্যাট কিনে বসবাস করতেন। একই ভবনের তিনতলায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে মা ঝর্ণা হায়দারের সঙ্গে বিউটি পারলার চালাতেন সাদিয়া। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি স্বামীর বিরুদ্ধে ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন সাদিয়া। ওই অভিযোগের ১৩ মাস পরে ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়।
ঘটনাটি ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে ।
Discussion about this post