ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাবেক সংসদ সদস্যের পিএস কে তুলে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন ও ক্রসফায়ারে খুন করার হুমকি দেয় ৫০ লাখ টাকার চাঁদা দাবীর ঘটনায় সোনারগাঁও থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোর্শেদ আলম ও সেকেন্ড অফিসার (এসআই) সাধন বসাকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসসামস জগলুল হোসেন এ পরোয়ানা জারি করেন।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান বুলবুল জানান, দুজনের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
মামলার বাদী আনিসুর রহমান আলমগীর বলেন, ২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর যুবলীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্যে এপিএস জাহিদুল ইসলাম স্বপন, বাবুল ও আমাকে সোনারগাঁ থানার সাবেক ওসি মোর্শেদ আলম ও এসআই সাধন বসাক বাসা থেকে তুলে নিয়ে থানায় নিয়ে নির্যাতন করেন। এক পর্যায়ে তারা জাহিদুল ইসলাম স্বপনের কাছে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেন তারা।
তিনি আরও বলেন, পরে জাহিদুল ইসলাম স্বপন কোর্টে এ দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। আসামিরা আমাকে সাক্ষী না দেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দেন। আমার বাড়িতে গিয়েও হুমকি দেন তারা। পরে এ ঘটনায় আমি নিজে বাদী হয়ে একটি মামলা করি। সেই তদন্তের রিপোর্টের প্রেক্ষিতে আদালতে শুনানি শেষে আদালত ওসি মোর্শেদ আলম ও সাধন বসাকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দত্ত বাপ্পী বলেন, আমরা ২০২০ সালে একটি মামলা করি। মামলাটি দায়েরের পর আদালত জুডিসিয়াল তদন্তের জন্য পাঠায়। সেই তদন্ত রিপোর্ট আদালতে আসার পর আমাদের কাছ থেকে শুনে মামলাটি আমলে নেন। সেই সঙ্গে আসামিদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করেন।
উল্লেখ্য যে, সোনারগাঁ থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ মোরশেদ আলম ও এসআই সাধন বসাক অনৈতিক সুবিধা পেয়ে বিগত ৮ অক্টোবর গভীর রাতে পদ, পদবী ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে দত্তপাড়ার বাগান বাড়ী থেকে কোন প্রকার গ্রেফতারী পরোয়ানা, অভিযোগ বা মামলা না থাকা সত্ত্বেও আটক করে যুবলীগ নেতা ও সাবেক এমপির এপিএস জাহিদুল ইসলাম স্বপন, তার বায়রা আনিছুর রহমান আলমগীর এবং ভাগীনা বাবুলকে।
আটকের পর তাদেরকে থানায় নিয়ে অমানুষিক শারিরীক নির্যাতন চালায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা। শুধুমাত্র একটি পক্ষ থেকে বেআইনী সুবিধা পেয়ে এ জগন্য অন্যায় করেন সোনারগাঁ থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ মোরশেদ আলম ও এস আই সাধন বসাক। পরে স্বপন পুলিশের অব্যহত নির্যাতনে মারাত্মক অসুস্থ্য ও জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে পুলিশ। হাসপাতাল থেকে পুনরায় থানায় নিয়ে রশিতে ঝুলিয়ে মারাত্মক মারধর করে এবং ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
পুরো ঘটনাটির অডিও রেকর্ডও প্রকাশিত হয়। ঘটনাটি প্রমানিত হওয়ায় সাধন বসাককে সাময়িক বরখাস্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়। অন্যদিকে, পুলিশের বিভাগীয় নিয়ম অনুযায়ী সোনারগাঁ থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ মোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে পুলিশ হেডকোয়াটার্সে বিভাগীয় মামলা রুজু হবে বলে নির্ভরযোগ্য সুত্র নিশ্চিত করেছেন।
Discussion about this post