খোদ প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার ছবি নিয়ে প্রতারণা করেছেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান। এমন ঘটনায় তোলপাড় ও কঠোর সমালোচনার ঝড় বইছে পুরো নগরীজুড়ে। প্রধানমন্ত্রীর ছবি ফটোশপ (এডিট) করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা নিয়ে বিতর্ক যেন আকড়ে ধরেছে মজিবুর রহমানকে ।
প্রধানমন্ত্রীর সাথে ছবি ফটোশপ (এডিট) করে প্রতারণার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিটি ছড়িয়ে পড়লে এমন নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ফটোশপ (এডিট) করে এমন ছবি প্রচার করার মতো কান্ডে এই আওয়ামী লীগ নেতার শাস্তিরও দাবি তোলেন দলেরই একাধিক নেতা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, মুজিবুর রহমানের হাতে বড়ফ্রেমে বাঁধানো একটি ছবি তুলে দিচ্ছেন এক ব্যক্তি। ফ্রেমে বাঁধানো ছবিতে হাস্যোজ্জ্বল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাথে দাড়ানো অবস্থায় হাত নাড়ছেন। পাশে দাঁড়িয়ে আছেন মজিবুর রহমান। তবে এই ছবিটি ফটোশপ (এডিট) করা।
মূলছবিতে প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ওবায়দুল কাদেরের মাথার অংশটুকু ফটোশপের (এডিট) মাধ্যমে মজিবুর রহমানকে স্থাপন করা হয়েছে। এই ছবি ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুকে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, মজিবুর রহমান নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান ঘনিষ্ঠ অনুসারী। সম্প্রতি জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি এক নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার ফটোশপ করা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় ওঠে। অনেকেই এ নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করছেন।
ফটোশপ করা এই ছবি নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, প্রচার পাওয়ার নেশায় এই ধরনের গর্হিত কাজ করেছেন মজিবুর রহমান। এইটা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। উনি একজন দলীয় নেতা হয়ে অন্যায় কাজটি করেছেন। তার শাস্তির দাবি জানান অনেকে। অনেকেই আবার ফটোশপ করা এই ছবি নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই প্রতারনা বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মজিবর রহমান সিদ্ধিরগঞ্জ তথা জেলা আওয়ামীলীগের কত বড় প্রতারক এইটাই তার প্রমাণ । এর বেশী আর প্রমাণ করার কি আছে ! এই প্রতারক যখন খোদ দলের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আমাদের প্রধানমন্ত্রী যিনি আওয়ামীলীগের তথা দেশের প্রাণশক্তি তাকে নিয়ে তামাশা করতে পারে, সেই মজিবুর রহমানের মত বড় প্রতারক আর কি হতে পারে । ‘স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে, পার্টির সেক্রেটারির গলা কেটে নিজের গলা বসাইছে মজিবুুর রহমান। এইটা একটা অনৈতিক কাজ এবং অপরাধও। সে নিজেকে জাহির করার জন্য এই কাজটা করছে। এই কাজের জন্য তার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করে শাস্তি নিশ্চিত করা উচিত।’
এই বিষয়ে কথা বলতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমানের মুঠোফোনের নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি একটি অনুষ্ঠানে আছেন জানিয়ে কলটি কেটে দেন। পরবর্তীতে তার মুঠোফোনের নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
এমন ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট এক নির্ভরযোগ্য সূত্র মুঠোফোনে ৩ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের আলোচনাকালে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, “সিদ্ধিরগঞ্জের এই মজিবুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হলেও মূলতঃ তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি পরিবারের রাজনীতি করেন। যে পরিবারের রাজনীতি করেন সেই পরিবার লোকজন যদি খোদ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বলতে বলেন মজিবুর ও তার চক্রের প্রায় সকলেই তাই করবেন। আর প্রধানমন্ত্রীর ছবি নিয়ে প্রতারনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের গলা কেটে ছবি এডিট করা তো সাধারণ বিষয়। এই মজিবুর আপাদমস্তক একজন ভন্ড ব্যাক্তি । আর এখন এই ছবি নিয়ে ভন্ডামী করায় কেন্দ্রে ও তার গডফাদারদের কাছে থেকে পরামর্শ চাইছেন কি করবেন এই পরিস্থিতিতে। তাইতো কারো ফোন ধরতেছেন (রিসিভ) না !”
Discussion about this post