নারায়ণগঞ্জের পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সারাদিন ব্যস্ত থাকেন তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে ! পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা সরকারী বেতন ভাতা যেন হালালভাবে গ্রহণ করতে পারেন সেই লক্ষ্যে কোন ধরণের অনিয়ম করেন না বলে দাবী করলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা যে একটি অথর্ব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে তার প্রমাণ হচ্ছে ফতুল্লায় ডাইংয়ের বিষাক্ত ক্যামিকেলযুক্ত পাণিতে সয়লাবের চিত্র।
নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বে থাকা উপ পরিচালক মুহাম্মদ আব্দল্লাহ আল মামুনের বিশেষ পেশার কথিত ব্যাক্তিদের নিমন্ত্রণ করে ক্যামেরা নিয়ে বিশেষ বিশেষ অভিযান পরিচালনার পর তা ফলাও করে প্রচারের জন্য অর্থকড়িও ব্যয় করেন।
যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও কোন লাজ লজ্জার চিত্র দেখা যায় নাই । যার প্রমাণ হলো একদিকে ফতুল্লায় শিক্ষার্থীরা ডাইংয়ের পানির কারণে আন্দোলন করছে আর নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপ পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন লোক দেখানো অভিযান চালাচ্ছেন আড়াইহাজার আর রূপগঞ্জে ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের অসাধু কর্মকর্তাদের কান্ডজ্ঞানহীন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা করে অনেক অভিভাবক বলেন, “পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপ পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন ফতুল্লা বাসীর সাথে এ কেমন আচরণ করছেন ? ডাইংয়ের এই বিষাক্ত জলাবদ্ধতার জন্য সকলে যেখানে আন্দোলন করছেন সেখানে এই মামুন চক্র কি করছেন ? আর কবে এই মামুন চক্রের লজ্জা হবে ? একদিকে শিক্ষার্থীরা বিষাক্ত জলাবদ্ধতার এমন কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে আন্দেলন করে যাচ্ছে আরেক দিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের মামুন ও তার বাহিনী নিয়ে একের পর এক নাটক মঞ্চায়ন ই করে যাচ্ছে ! এমন নাটক কি জেলা প্রশাসন দেখেন না ?”
পরিবেশগত ছাড়পত্র ও ইটিপিবিহীন কারখানাগুলো তাদের উৎপাদন কার্যক্রমের মাধ্যমে নদী দূষণ করার অভিযোগে মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) না থাকায় রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার উপজেলার চারটি শিল্প কারখানার গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর ৷ অথচ যে ফতুল্লা থানা এলাকায় নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয় সেই ফতুল্লা এলাকায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের খবরই জানেন না উপ পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন ।
এমন অভিযান চলাকালীন সময়ে ফতুল্লা ইউনিয়নের ৬টি ওয়ার্ডের জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সকালে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ফতুল্লার ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, ম্যানেজিং কমিটির নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ফতুল্লার পাইলট স্কুলের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় ঘেরাও করে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আগামী ৭ দিনের মধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি জানান। পরে সদর ইউএনও রিফাত ফেরদৌস দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরসনের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা উপজেলা পরিষদ কার্যালয় ত্যাগ করে।
মঙ্গলবার সকালে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, ম্যানেজিং কমিটির নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসী সম্মিলিতভাবে মিছিল সহকারে সদর ইউএনও কার্যালয়ে এসে জড়ো হয়। এসময় বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার লুৎফর রহমান স্বপন, সেচ্ছাসেবক লীগের নেতা ফরিদ আহমেদ লিটনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। পরে তারা সদর ইউএনও রিফাত ফেরদৌসের কাছে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
শিক্ষার্থীরা ও নেতৃবৃন্দ বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় দু’টি স্কুল ছাড়াও বেশ কিছু মসজিদ, কবরস্থান রয়েছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠান তথা ডাইয়ের দূষিত পানির কারণে আমরা চরম বিপাকে রয়েছি। আগামী ৭ দিনের মধ্যে জলাবদ্ধতার নিরসনের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা ও এলাকাবাসী।
সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত ফেরদৌস বলেন, আমরা এই সমস্যা নিয়ে এর আগেও বসেছি। সমস্যাগুলো আসলে এক জায়গায় নেই। রেলওয়ের প্রকল্পের কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ডাইং কারখানাগুলোরও পানি নিস্কাশনের জন্য নিজস্ব ব্যবস্থা করেনি। ওই এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশি ৪টি সড়ক ড্রেনসহ নির্মাণের জন্য সদর উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমরা শীঘ্রই সরেজমিনে দেখে দ্রুত প্রকল্প গ্রহণ করবো। পাশাপাশি ডাইং কারখানাগুলোর মালিকপক্ষকেও আমরা এ বিষয়ে চিঠি দিব যাতে তারা ডাইংয়ের পানি সড়কে কিংবা ড্রেনে নিক্ষেপ না করে। আমাদের চেষ্টার কোন ত্রুটি থাকবেনা।
Discussion about this post