‘শামীম ফাইটার পলিটিশিয়ান। তার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে পরপর তিনবার নির্বাচিত জন মানুষের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। এই সভায় দুইজন এসেছেন, একই মঞ্চে দেখছি তাদের। একই মঞ্চে শামীম ও আইভীসহ সবাই বসে আছি। নারায়ণগঞ্জের শক্তি এরাই। সামনে কঠিন দিন আসছে। মোকাবেলা করতে হবে।’
রোববার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে দীর্ঘ দুই যুগ পর অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানকে একসাথে দেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমন মন্তব্য করেছেন ।
সম্মেলন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ নগরীর ইসদাইরে ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে নৌকার আদলে করা মঞ্চ করা হয়।
‘সামনে কঠিন দিন আসছে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ভোট চুরি, জালিয়াতি, দুর্নীতি, লুটপাটের বিরুদ্ধে খেলা হবে। ভুয়া ভোটার তালিকা, নারী নির্যাতন, গুম, খুনের বিরুদ্ধে খেলা হবে। কাপুরুষের মতো আর রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পারি জমিয়েছে। কে সে ? হাওয়া ভবনের সেই যুবরাজ । খেলা হবে হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে । সেই লুটপাটের বিরুদ্ধে খেলা হবে। বিএনপির বিরুদ্ধে খেলা হবে। রাজপথে মোকাবিলা হবে। আসল মোকাবিলা হবে ডিসেম্বরে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা ভুলে যান। (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) উচ্চ আদালত বাদ দিয়েছে। আমাদের কী ? দুনিয়ার কোন দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই। অন্য যেকোন দেশে যে পদ্ধতিতে ইলেকশন হয়, আমাদের সংবিধানেও সেভাবে ইলেকশনের কথা বলা আছে। নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে। সরকার কোন হস্তক্ষেপ করবে না। সবধরনের সহযোগিতা করবে।’
বিএনপির জনসভায় লোকসমাগমের প্রসঙ্গ তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনারা লক্ষ লোকের জনসভার কথা বলেন। আরে লক্ষ লোক আমাদেরই। লক্ষ লোক আপনাদের সাথে নেই। এই লক্ষ লোক নিয়ে অ্যাকশন হবে, খেলা হবে। ডিসেম্বরে বিজয়ের মাস। ডিসেম্বরে জনতার সমুদ্রের গর্জনধ্বনি শুনতে পারবেন। ফখরুল সাহেব, কান পেতে শুনতে থাকুন।’
এই মুহুর্তে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার চেয়ে যোগ্য, ভালো ও সৎ মানুষ নেই বলেও মন্তব্য করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আবারও শেখ হাসিনাকে চায়। বাংলার জনগণ চেহারা না কাজ দেখে ভোট দেয়। শেখ হাসিনা তো কম করেননি।’
তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক সংকটের জন্য দায়ী করবেন না। আমরাও আপনাদের কষ্ট দেখে কষ্টে আছি। কারণ এর আগে বিদ্যুত বা গ্যাসের ঘাটতি ছিল না। জিনিসপত্রের দামের উর্ধ্বগতি আগে ছিল না। এই সংকট বৈশ্বিক সংকট। শেখ হাসিনার ঘুম নাই। সারারাত তিনি জেগে থাকেন। তার বোন শেখ রেহানা লন্ডন শহরে বাসে চেপে যাতায়াত করেন। বড়বোনের পাশে সহযোদ্ধা ছোটবোনেরও ঘুম নাই। ঘুম নাই আপনাদের জন্য, জনগণের জন্য।’
বেলা তিনটায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী ও দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাইয়ের সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক), কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, আইন বিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কার্যকরী সদস্য রিয়াজুল কবির কাওসার, শাহাবউদ্দিন ফরাজী, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল কাদির, আদিনাথ বসু, আরজু রহমান ভূঁইয়া, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ্ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত প্রমুখ।
Discussion about this post