নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ, সোনারগাঁ ছাড়াও গজারিয়ায় ছিলো এক সময়ের কুখ্যাত অপরাধী নূর হোসেনের দখলে । বড় মাপের কর্মকর্তা ছাড়াও রাজনীতিবিদদের অনেকেই সেই নূর হোসেনের আস্তানায় মনোরঞ্জনের জন্য হুমরি খেয়ে পরতো। যার কারণে ওই সময় ওই নূর হোসেন ও তার বাহিনী এবং তার রক্ষাকারী নেতা – কর্তাদের বিষয়ে কোনভাবেই মুখ খুলতেও পারতো না ।
আইনশৃংখলা বাহিনীর তৎসময়কালের এসপি, ডিসি, র্যাবের সিইও থেকে শুরু করে অনেক নিম্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারাও নূর হোসেনের নগ্ন আস্তানায় দেখো গেছে। সেই নূর হোসেন কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি থাকলেও নারায়ণগঞ্জে আরেক নূর হোসেনের মতো নর ঘাতকের আবির্ভাব ঘটেছে। তার নাম নাম বজলুর রহমান। ডাকনাম বজলু। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক নামেই এই কুখ্যাত অপরাধী বজলু কে চিনেন একজন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল সাত খুনের আগ মুহুর্ত পর্যন্ত তৎসময়ে নূর হোসেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ছাড়াও সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নাম ভাঙ্গিয়ে চালাতো সকল ধরণের অপরাধ । সেই একই ভঙ্গিমায় এবার রূপগঞ্জসহ আশেপাশের এলাকায় নূর হোসেনের মতোই সকল ধরণের অপরাধ করে যাচ্ছে বজলু। নূর হোসেন যেমন ট্রাকের হেলেপার থেকে কোটি কোটি টাকার মারিক তেমনি এই বজলু এক সময়ে সামান্য দিনমজুর হিসেবে পেটের দায়ে দৌড়ঝাপ করতো । সেই বজলু এখন কোটি কোটি টাকার মালিক । আছে অস্ত্রধারী গাণম্যান বেস্টিত নিরাপত্তা । যেমন টি ছিলো নূর হোসেনের ক্ষেত্রেও। বজলুর এমন অপরাধ আমলনামা নিয়ে এবার কয়েকটি শীর্ষ গণমাধ্যমরে পর এবার দৈনিক যুগান্তর সরজমিনে তথ্য সংগ্রহের পর প্রকাশ করেছে প্রতিবেদন।
এমন হাজারো প্রতিবেদন সেই নরঘাতক ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামী কনডেমসেলে বন্দি নূর হোসেনের বিরুদ্ধে প্রকাশ করা হলেও তৎসময়ে ক্ষমতাসীন নেতাদের প্রভাবে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তার খেসারত দিতে হয়েছে প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম – অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারসহ সাত জনকে নির্মম হত্যাকান্ডর মধ্য দিয়ে।
আর বর্তমান সময়ে চনপাড়ার কুখ্যাত অপরাধী বজলুক আস্কারা দিয়ে বড় ধরণের অঘটন আবার ঘটতে পারে বলেও আশংকা প্রকাশ করেছে রূপগঞ্জের অনেকেই । কেউ ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের পাশাপাশি বজলু বাহিনীর ভয়ে নিজেদের নাম প্রকাশ করতেও ভয় পান।
সবাই যেখানে অসহায়
প্রভাবশালী গডফাদারের কারণে সবাই চুপ, ভয়ে গ্রামছাড়া অনেকে *আমরাও ভয় পাই। অভিযান চালাতে গেলে মাদক ব্যবসায়ীরা হামলা চালায়-ফাঁড়ি ইনচার্জ :
নাম বজলুর রহমান। ডাকনাম বজলু। যাকে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের চনপাড়া এলাকার সবাই এক নামে চিনে। তবে ভালো কাজের জন্য নয়, তিনি পরিচিতি পেয়েছেন কুখ্যাতি হিসাবে। খুন, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ এলাকার সব ধরনের অপরাধের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি অনেকটা ওপেন সিক্রেট।
আছে অস্ত্রধারী বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। প্রয়োজনে যাকে-তাকে অপহরণ করে আনা হয় বজলুর ডেরায়। টর্চারশেলে রেখে করা হয় অমানুষিক নির্যাতন। ইয়াবা দিয়েও পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি একজন কলেজ শিক্ষার্থীও তার রোষানলে পড়ে পরীক্ষা দিতে পারেননি। অপরদিকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনেও তিনি অনেক ধাপ এগিয়ে রয়েছেন। প্রকাশ্যে মারধর ছাড়াও কয়েকদিন থেকে তার বাহিনীর সদস্যরা বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে দফায় দফায় হামলা অব্যাহত রেখেছে।
দল-মত নির্বিশেষে বজলু বাহিনীর ভয়ে অনেকে এখন বাড়িছাড়া। এভাবে পুরো চনপাড়া এলাকা সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত হয়েছে। কেউ ভয়ে মুখ খুলতে চান না। ভুক্তভোগীদের অনেকে জানিয়েছেন, বজলুই এখন এই এলাকার অঘোষিত রাজা। তার নির্দেশেই চলে সবকিছু।
এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গণমাধ্যম থেকে সরেজমিন সোম ও মঙ্গলবার চনপাড়া এলাকায় গিয়ে ভুক্তভোগীদের বেশির ভাগ অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। রাজধানীর নিকটবর্তী চনপাড়া এলাকাটি প্রদীপের নিচে অন্ধকারে পরিণত হয়েছে। অস্ত্র ও খুনের মামলায় এক সময়ের জেলখাটা বজলু এখন সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তির খাতায় নাম লিখিয়েছেন। অভিযোগ আছে, অবৈধ টাকার জোরে তিনি স্থানীয় কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদটিও হাতিয়ে নিয়েছেন। হয়েছেন ইউপি সদস্য। এসব পদ ও প্রতিপত্তির জোরে তিনি তার চেয়ে অনেক বড় প্রভাবশালী হয়ে রীতিমতো ভাড়া খাটছেন। সবাই তার গডফাদারের নাম-পরিচয়ও জানে। কিন্তু জানমালের নিরাপত্তাহীনতার কারণে মুখ খুলতে চান না। এমন এক পরিস্থিতিতে চনপাড়ার সবাই যেন অসহায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের এসপি গোলাম মোস্তফা রাসেল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘আমি এখানে নতুন। কয়েকদিন আগে এসপি হিসাবে যোগদান করেছি। এরই মধ্যে শুনেছি রূপগঞ্জের একজন ইউপি সদস্য বহু অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। ওই এলাকায় আমি ইন্টেলিজেন্স নিয়োগ করেছি। ইন্টেলিজেন্স রিপোর্টে অভিযোগের সত্যতা পেলে তাকে আইনের আওতায় আনতে কালক্ষেপণ করব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের কোনো সদস্য যদি ওই ইউপি সদস্যের অপকর্মের সহযোগীর ভূমিকা পালন করে, তবে তাকেও ছাড় দেওয়া হবে না।’
মাদক সাম্রাজ্য : চনপাড়া বস্তিতে মাদকের স্পট রয়েছে একশোর বেশি। মাদক ব্যবসা চলে কয়েকটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। প্রতিটি সিন্ডিকেটের একটি বা দুটি করে ওয়াচ পার্টি থাকে। এদের কাজ হচ্ছে পোশাকে বা সাদা পোশাকের পুলিশ-র্যাব দেখলেই সতর্ক করা। ফেনসিডিল, ইয়াবা, হেরোইন, মদ, গাঁজা বিক্রির জন্য পৃথক সিন্ডিকেট রয়েছে। কেউ কারও ব্যবসায় নাক গলাবে না-এটাই এখানকার অলিখিত নিয়ম। ব্যতিক্রম ঘটলেই চলছে হামলা-নির্যাতন। সংঘর্ষ এবং খুনোখুনির ঘটনাও ঘটছে মাঝে মধ্যে। মাদক সিন্ডিকেটে বেশ কয়েকজন নারী সদস্যও আছে। রুমার কাছ থেকে কেনা ইয়াবা বিক্রি হয় ৪০টি আস্তানায়। এছাড়া জুয়ার স্পর্ট রয়েছে ২৫টির বেশি। অত্যাধুনিক অস্ত্র বেচাকেনা এবং ভাড়া দেওয়া হয় চনপাড়া বস্তি থেকে।
সরেজমিন চনপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় নব কিশলয় গার্লস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসংলগ্ন এলাকা এবং বহর এলাকাসহ কয়েকটি স্থানে দিনদুপুরেই চলছে মাদক বিক্রি। স্থানীয় রায়হানের বাড়ির ভেতরেও চলছিল ইয়াবা সেবন। স্থানীয়ভাবে ওই বাড়িটি ইয়াবা সেবন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
হামলা-নির্যাতন-টর্চারশেল : স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হারুন অর রশীদ মিয়াজি জানান, চনপাড়ার গাজী বিশ্ববিদ্যালয় এবং সেতুবন্ধন এলাকায় বজলুর রহমানের দুটি টর্চারশেল আছে। তার দেহরক্ষীরা জোর করে মানুষকে তুলে নিয়ে টর্চারশেলে নির্যাতনের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় করে। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের প্রায় ২০ জন নেতাকর্মীকে তুলে নিয়ে অর্থ আদায় করা হয়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন রতন, দ্বীন ইসলাম, আক্তার, কবির, আলমগীর (১), আলমগীর (২), ইউসুফ হাওলাদার, মো. রফিক, মোহাম্মদ আলী, ইদ্রিস, মাসুম প্রমুখ।
তিনি বলেন, ‘কেউ চাঁদা না দিলে বাড়িঘরে হামলা চালায় বজলুরের ক্যাডাররা। কয়েকদিন আগে আমার বাড়িতেও হামলা করেছে। ইদ্রিসের কাছ থেকে অনেকবার টাকা নিয়েছে বজলুর। পুলিশের ভয় দেখিয়ে সপ্তাহখানেক আগে সাড়ে তিন লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছে। ১০-১২ দিন আগে টর্চারশেলে নিয়ে রফিককে হাতুড়িপেটা করেছে। তার শরীরে ৭৮টি হাতুড়িপেটার দাগ রয়েছে। সাংবাদিকরা বিষয়টি জেনে ফেলার পর টাকা না নিয়েই রফিককে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর পর থেকে রফিক এলাকাছাড়া।’ হারুন অর রশীদ মিয়াজি আরও বলেন, কেউ বজলুর কথা না শুনলে তাকে ইয়াবা দিয়ে চালান দেওয়া হয়। কয়েকদিন আগে শাকিল হোসেন নামের শিক্ষার্থীকে ১৩০০ পিস ইয়াবা ও ২০ গ্রাম হেরোইন দিয়ে পুলিশে দিয়েছে। অথচ ছয় মাস পর ইঞ্জিনিয়ারিং ফাইনাল পরীক্ষা। কিন্তু বজলুর রোষানলে পড়ে তিনি সেমিস্টার পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি।
সন্ত্রাসী বাহিনীর দৌরাত্ম্য : তিন বছর আগেও চনপাড়ার ‘নিয়ন্ত্রক’ ছিলেন দুজন। একজন কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য বিউটি আক্তার ওরফে কুট্টি এবং অন্যজন ইউপি সদস্য বজলুর রহমান। আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে বিউটির স্বামী এমএ হাসান এবং ২০১৯ সালের জুন মাসে বিউটি খুন হলে বদলে যায় পরিস্থিতি। চনপাড়ার একক ‘নিয়ন্ত্রণ’ চলে আসে বজলুর কাছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যারাই চনপাড়ার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করেছে তারাই হত্যার শিকার হয়েছে। কুট্টি এবং হাসান ছাড়াও আলোচিত হত্যাকাণ্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে চানমিয়া, ফিরোজ সরকার, ফারুক মিয়া, পুলিশের এএসআই হানিফ মিয়া, ফালান মিয়া, আব্দুর রহমান, খোরশেদ মিয়া, মনির হোসেন, আসলাম হোসেন, আনোয়ার, সজল এবং সামসু হত্যা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বজলু সব সময় চলাফেরা করেন তিনজন সশস্ত্র দেহরক্ষী নিয়ে। তার ২০-২৫ জনের বাহিনী আছে। বাহিনী সদস্যদের মধ্যে আছে জয়নাল আবেদীন, শাহীন মিয়া ওরফে সিটি শাহীন, রাজু আহমেদ রাজা, রায়হান, ইউসুফ, সাদ্দাম হোসেন ওরফে স্বপন, সায়েম, নাজমা, রিপন, শাওন, রেহান মিয়া, জাকির হোসেন, আনোয়ার হোসেন, শাহীন, হাসান, মিজু, রাজা, রুমা প্রমুখ।
আরও যত অপকর্ম : স্থানীয় আওয়ামী লীগের একজন সাবেক নেতা বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের একজন প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় বজলু বেপরোয়া। মানসম্মান রক্ষায় আমার মতো কেউ কেউ অন্য দলে যোগ দিয়েছে।’ গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় তার স্ত্রী বলেন, ‘বজলুর খুব খারাপ লোক। পুরো চনপাড়া চলে তার ইশারায়। বজলু ও তার লোকের বিষয়ে কিছু বললে এলাকায় থাকতে পারব না। এমনকি আমাদের দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে পারে। এরপর ভয়ে তিনি তার স্বামীকে নিয়ে চলে যান।’
স্থানীয়রা জানায়, চনপাড়ার অস্ত্র ব্যবসা, প্লট বাণিজ্য, নৌকার ঘাট, বাজার, পরিবহণ, জুয়া এবং সালিশি বৈঠকসহ চনপাড়ার সবকিছুর নিয়ন্ত্রণই যেন বজলুর হাতে। ২০০৩ সালে রূপগঞ্জের সাবেক এমপি মেজর জেনারেল (অব.) কেএম শফিউল্লাহর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে ঝাড়ু-জুতা মিছিল করে আলোচনায় আসে বজলু। ২০০৬ সালে ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় গ্রেফতার হন তিনি। ওই সময় তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা ছিল।
স্থানীয় বাচ্চু মিয়া অভিযোগ করেন, বছরদুয়েক আগে আমার ১৯ বছর বয়সি মেয়ে বৃষ্টিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। মাদক ব্যবসায়ী ইউসুফের নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই সিদ্দিককে হাতেনাতে ধরে বজলুর রহমানের কাছে দিই। কিন্তু বজলুর তাকে ছেড়ে দেন। পুলিশ তদন্ত করে আবু বক্কর সিদ্দিক এবং নাছিমাকে আসামি করে চার্জশিট দিয়েছে। কিন্তু আসামিরা বজলু মেম্বারের লোক হওয়ায় তাদের ভয়ে কেউ আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাচ্ছে না।
স্থানীয় আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘জয়নাল এবং সিটি শাহীন গ্রুপের দ্বন্দ্বের বলি হয়ে মাসতিনেক আগে আমার ১৭ বছর বয়সি ভাগনে সজল প্রাণ হারান। মাথায় ইট দিয়ে থেঁতলে নির্মমভাবে আমার ভাগনেকে হত্যা করা হয়। আমার ভাগনে মারা যাওয়ার আগের দিনও ৯ নম্বর রোডের আরিফকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। ভাগ্যগুণে সে বেঁচে যায়।’
বজলুর বক্তব্য : সোমবার বিকালে বজলুর রহমানের কার্যালয়ে গেলে দেখা যায় তার পাশেই বসে আছেন চনপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মেহেদী হাসান খান। কার্যালয়ের ভেতর ৩০-৪০ জন মানুষ। এ সময় বজলুর রহমান বলেন, ‘আমি কোনো অপকর্মের সঙ্গে জড়িত না। আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তাকে এখানে পুনর্বাসন করা হয়েছিল। সেই সূত্রে আমি এখানকার বাসিন্দা। মাদক সিন্ডিকেটের সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘২০০৭ সালে অস্ত্র মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলাম। চাঁন মিয়া হত্যা মামলায় আরেকবার গ্রেফতার হয়েছি। তবে আমার বিরুদ্ধে যে কটি মামলা হয়েছিল সবকটিতেই আমি খালাস পেয়েছি। এই মুহূর্তে কোনো পেন্ডিং মামলা নেই।’
ফাঁড়ি ইনচার্জের বক্তব্য : বজলুর রহমানের পাশে বসে থাকা অবস্থায় চনপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মেহেদী হাসান খান বলেন, ‘আপনি এখানে এলেন কীভাবে ? আমরাও তো ভয় পাই। অভিযান চালাতে গেলে এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা আমাদের ওপরও হামলা চালায়। পরে এলাকায় এলে আমাকে জানিয়ে আসবেন। কারণ এখানে সাংবাদিকদেরও নিরাপত্তা নেই।’
যুগান্তর পত্রিকায় এমন সংবাদ প্রকাশের পর সেই নূর হোসেনের ভীতিকর কর্মকান্ড ও চলাচলের চিত্র তুলে ধরে অনেকেই বলেছেন, নূর হোসেন সাত খুনের আগে অসংখ্য খুনের ঘটনা ঘটালে কিচ্ছুই করতে পারে নাই কেউ । সাত খুনের পর আর শেষ রক্ষা করতে পারে নাই কেউ। আর বজলুর অপরাধ কর্মকান্ড থামাতে হলে কি কি করতে হবে আর কি ভয়ংকর পরিণতি অপেক্ষা করছে তা দেখার জন্য আতংকে রযেছে রূপগঞ্জবাসী ।
Discussion about this post