আমি একটা উপজেলা চেয়ারম্যান। আমার একটা সরকারি মর্যাদা আছে। তোমার শহিদুল্লাহ ভাই জীবনে মেম্বার হইতে পারছে? তুমি আমার ছবিতে দাগ দিছ, এতে কী হইব তুমি জানো? তোমারে আমি কী ভয় দেখামু? তুমি জানো, আমি পাড়ায়া মানুষ মাইরালাই। একদম ধইরা লইয়া আইব, পাড়ায়া মাইরালামু। এই মালাউনের বাচ্চা, তরে আমি কী ভয় দেখামু? তর গাজীপুরে আমি ব্যবস্থা করতাছি।’
এভাবেই গালিগালাজ করায় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুজাহেদুর রহমান ওরফে হেলো সরকারের একটি আপত্তিকর অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ওই অডিওতে গাজীপুর মহানগর শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অমিত সাহাকে মোবাইল ফোনে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও হুমকি দিতে শোনা গেছে।
অমিত সাহাকে ফোন করে নিজের গালমন্দের কথা গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেছেন মুজাহেদুর রহমান। তিনি বলেন, এটা আবার অডিও করে প্রচারের দরকার কী ?
গত মাসেও এক গণমাধ্যমকর্মীকে উপজেলা চেয়ারম্যান মুজাহেদুর রহমান ফোনে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে বলেছিলেন- ‘. . .পুত, আমি হেলো সরকার … একদম সাংবাদিক ছুটাইয়া দিমু।’ তার ওই অডিওটিও তখন ভাইরাল হয়েছিল।
ওই ঘটনার ২৬ দিনের মাথায় মুজাহেদুর রহমান গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের নেতা অমিত সাহাকে গালমন্দ করলেন।
এ ঘটনায় রোববার রাতে গাজীপুরের বাসন থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন অমিত সাহা। সেখানে তিনি চেয়ারম্যান মুজাহেদুর রহমানের নাম উল্লেখ করে লিখেন- গত ১৫ সেপ্টেম্বর আমাকে তার ব্যবহৃত নাম্বার থেকে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।
অমতি সাহা গণমাধ্যম কে জানান, শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদের মূল সংগঠনটি মহাসচিব দিয়ে পরিচালিত। গত ২০২১ সালে কেএম শহীদুল্লাহ ভাইকে প্রধানমন্ত্রী সংগঠনের মহাসচিব পদে স্থলাভিষিক্ত করেন। এ কমিটি থেকে হেলো সরকার বাদও পড়েছেন। কিন্তু একই নামে মুজিবুর রহমান হাওলাদার ও হেলো সরকার অপর একটি সংগঠন চালাচ্ছেন। অথচ তাদের কমিটির প্রধানমন্ত্রী কিংবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের অনুমোদন নেই।
তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আপত্তি করে আমি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেই। যেখানে তার ছবি রেডমার্ক করে দিই। সেই পোস্ট দেখে গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার দিকে হেলো সরকার আমাকে ফোন করে প্রথমে হুমকি ও গালাগাল করে।
অডিওর বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মুজাহেদুর রহমান বলেন, ‘অই ছেলে আমার নামে উল্টাপাল্টা লিখে আমার ছবিতে লাল কালি দিয়ে দাগ দিয়েছে। তখন আমি বলেছি ওই ব্যাটা তুমি এইটা করছ কেন? আমি উপজেলার চেয়ারম্যান।
একজন দায়িত্বশীল চেয়ারম্যান হয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের কাউকে ‘মালাউন’ বলা বা হত্যার হুমকি দেওয়া কতটা শোভনীয় এমন প্রশ্নে মুজাহিদুর রহমান বলেন, ‘ও তো আমারে উত্তেজিত করছে। ও আমাকে বলে আপনি আমাকে ভয় দেখান? সেই প্রসঙ্গে আমি রাগের মাথায় বলছি। ওই ছেলে যে এসব রেকর্ড করছে সেটাই তো আমি জানি না।
Discussion about this post