শহরের নিতাইগঞ্জ ডাইলপট্টি এলাকায় মা ও সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলার তদন্তভার পেয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারী) বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন।
এদিকে রিমান্ডে নিয়ে আসামি আল জোবায়েরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে । জেলা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিট তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। রিমান্ডে জোবায়ের অনেক তথ্য দিচ্ছেন। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমীর খসরু সাংবাদিকদের বলেন, হত্যার মূল্য রহস্য কী ? হত্যার সঙ্গে আর কারও সংশ্লিষ্টতা আছে কি না। এ ঘটনায় আর্থিক লেনদেন বা ব্যবসায়িক কোনো বিরোধ আছে কি না—এসব নানা বিষয়কে সামনে রেখে তদন্তকাজ চালানো হচ্ছে। তাঁকে অন্য বিশেষজ্ঞ সংস্থাও জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্তসংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, এখন পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদে আল জোবায়েরের জঙ্গি-সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি । এ ঘটনার সঙ্গে অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা মেলেনি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে । তরে সে নানা দিকে বিচরণ কর তো । পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন করেতে পুলিশের শীর্ষ পর্য়ায়ে থেকে কঠোর ও সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে ।
একাধিক সংস্তার জিজ্ঞাসাবাদে জোবায়ের জানিয়েছেন, ওই দিন ফুটপাত থেকে তিনটি ছোরা কেনেন। ওই ছোরা নিয়ে তিনি ঘুরতে ঘুরতে ডাইলপট্টি এলাকায় চলে যান। সেখানে তিনি সুন্দর ও বহুতল ভবন দেখে মনে করেন, এখানে ব্যবসায়ীরা থাকেন। এখানে হানা দিলে টাকা পয়সা ও সোনা পাওয়া যাবে, সে থেকেই ওই বাড়িতে হানা দেয়। সে সব কটি ফ্ল্যাটে কলবেল চাপে, কিন্তু কেউ খোলেনি। ছয়তলা ভবনের ষষ্ঠ তলার ফ্ল্যাটে কলবেল চাপলে পাশের সন্ধ্যা নন্দী ফ্ল্যাটের দুরবিন হাত দিয়ে বন্ধ রাখায় তাঁরা কেউ খোলেননি। পাশের ফ্ল্যাটে কলবেল চাপলে রুমা চক্রবর্তী দরজা খুললে তাঁর গলা চেপে ধরলে এ সময় তাঁর সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। তাঁকেসহ তাঁর মেয়েকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছেন জোবায়ের।
মামলা ডিবিতে হস্তান্তরের তথ্য নিশ্চিত করে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম বলেন, হতাশা ও ঋণগ্রস্ত হওয়ায় তিনি সোনা ও অর্থের জন্যই ওই ঘটনা ঘটিয়েছেন। মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্ত হওয়ায় এ ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন তিনি। তাঁকে রিমান্ডে আরও ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁর ল্যাপটপ, ফেসবুক আইডিসহ ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে শহরের নিতাইগঞ্জ ডাইলপট্টি এলাকায় মাতৃভবনের ষষ্ঠ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে রুমা চক্রবর্তী (৪৬) ও তাঁর মেয়ে ঋতু চক্রবর্তীর (২২) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় আল জোবায়ের (২৬) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, বাড়ি থেকে টাকা ও সোনাদানা লুট করতে মা ও অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে হত্যা করেছেন আসামি। গতকাল বুধবার জোবায়েরকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
Discussion about this post