“রাজনীতি ব্যবসা হয়ে গেছে । শত কোটি টাকার বাড়ি বানাই ইনকাম ট্যাক্সের ফাইলে দশ টাকাও নাই। এনবিআর কি করে জানি না, দুদক নামের কোন বস্তু আছে তাও চিনি না। ভাল ভাল সব লোক বসা সেখানে। দেশের সবচেয়ে দামী দামী লোক বসা সেখানে। তদন্ত তো দেখি না। মুখ খুলতে চাই না, সময় হলে মুখ খুলবো। যারা কথা বলেন, হিসেব করে কথা বলবেন। কারণ আমি যদি মুখ খুলি তাহলে লজ্জায় মুখ ঢাকতে পারবেন না।”
এভাবেই নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে প্রতিপক্ষদের ঈঙ্গিত করে নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান এমন ম,ন্তব্য করেছেন ।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এইসব কথা বলেন।
শামীম ওসমান বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদের তারুণ্য দেখি না। যখন গরিবের পেটে লাথি মারা হয় শ্রমিকের পেটে লাথি মারা হয়, কোথায় থাকে ছাত্র সমাজ। ছাত্র সমাজ ফিস ফিস করে কথা বললে জীবনেও সামনে এগুতে পারবেন না। বাংলাদেশের পটপরিবর্তন করেছে ছাত্রসমাজ। আপনারা কেমন যেন মিনমিনে হয়ে যাচ্ছেন।
সাম্প্রতিক ইস্যু নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এ দেশকে যদি কেউ হেয় করার চেষ্টা করে এবং কেউ তাতে খুশি হয় আমি লজ্জিত হই। আমরা গোলামি থেকে মুক্ত হয়েছি, কিন্তু গোলামির চরিত্র থেকে মুক্ত হতে পারিনি। ৩০ বছর আগে দেশের জন্য জাতির জন্য লড়াইয়ে আমি ছিলাম। তাই এবার আবার বলছি আরেকটি লড়াই করতে হবে। আমরা বলি না আপনারা ছাত্রলীগ করেন, দেশটাকে তো ভালবাসবেন।
শামীম ওসমান আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জ কেন দেশের কোথাও যদি কোন ছাত্রের গায়ে হাত উঠলে নারায়ণগঞ্জের ছাত্ররা কাপিয়ে দিয়েছে। নারায়ণগঞ্জে কিছু মুখোশ উন্মোচন করা দরকার। আমি আপনাদের কাছে বিচার দিচ্ছি, তিন বছর ধরে চেষ্টা করে নারায়ণগঞ্জের সকল বড় বড় প্রকল্প এনেছি। প্রায় আটশ কোটি টাকা ব্যয়ে শেখ কামাল আইটি ইনিস্টিউট হবে। ৫০০ শয্যার মেডিকেল কলেজ হবে। আমার রাজনৈতিক মা শেখ হাসিনার কাছে আমি নারায়ণগঞ্জের চাহিদাগুলো বললাম। আমি যা যা চেয়েছি তা তা উনি দিয়েছেন। ডিও লেটার দিলাম আমি, কথা বললাম আমি, ভিক্ষা চাইলাম আমি। কিন্তু তবে কিছু কুচক্রী মহল এটাকে এমন জায়গায় দূরে নিতে চায় এ এলাকার মানুষের যাওয়া সম্ভব নয়। আমি বলেছিলাম এ প্রতিষ্ঠান ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাশে হবে। এখন এটাকে এখান থেকে সরানোর চেষ্টা হচ্ছে। এই চেষ্টা হলে আমি রাস্তায় নামব। যেখানে চেয়েছি সেখানে এটা হতে হবে। যারা সরাতে চাচ্ছেন শুনেন, তোলারাম কলেজের ছাত্রছাত্রীরা একাই নারায়ণগঞ্জের নক্ষত্র বদলিয়ে দিতে পারে। তাই আমি কোন রাজনৈতিক দলের কথা বলব না, সকল ছাত্রদের এক প্লাটফর্মে আসতে বলব। একেএম শামসুজ্জোহার স্টেডিয়ামে নারায়ণগঞ্জের সকল কলেজের নবীন বরনের আয়োজন করেন। যা কিছু লাগে আমি করবো। সেদিন নারায়ণগঞ্জকে জানান দিবেন বাংলাদেশকে জানান দিবেন আমরা ছাত্ররা ঐক্যবদ্ধ। নারায়ণগঞ্জ কেন দেশের কোথাও যদি কোন ছাত্রের গায়ে হাত উঠলে নারায়ণগঞ্জের ছাত্ররা চাড়া কাপিয়ে দিয়েছে। ভবিষ্যতেও এটা করে দেখাতে হবে।
তিনি বলেন, আজকে আমরা দেখি সিটি করপোরেশন এসে তোলারাম কলেজের জায়গা দখল করে পানির মটর লাগাতে চায়। কি করবো বলেন, পানির মটর লাগাতে দিব, না বিল্ডিং করবো। আস্তে আস্তে ফিস ফিস করে কথা বললে কাজ হবে না। আমি সিটি করপোরেশনের কাছে অনুরোধ করবো আপনারা মানুষের ট্যাক্সের পয়সায় চলেন। তোলারাম কলেজের মাটিতে হাত দিবেন না ।
এসময় শামীম ওসমানের সহধর্মিনী সালমা ওসমান লিপি, সরকারি তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ বেলা রানী সিংহ ও সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post