কি ঘটেছিলো ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেনের কক্ষে ? স্ত্রী আরোহী হাওলাদার ওরফে কুলসুমের সাথে তার স্বামী নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক শাহ ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজকে নিয়ে ফতুল্লা থানায় কি হয়েছিলো ? স্বামী স্ত্রীর কেন এই দ্বন্ধ ? কি কারণে স্ত্রী আরোহী ওরফে কুলসুম মামলা করতে গেলেন স্বামীর বিরুদ্ধে তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য বেড়িয়ে এসেছে অনুসন্ধানে ।
ষ্টাফ রিপোর্টার :
যৌতুকের দাবীতে স্ত্রী আরোহী হাওলাদার কুলসুমের দায়ের করা মারধর এবং নানাভাবে অত্যাচারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ফতুল্লা থানার দারোগা মিজানুর রহমান শনিবার ২৮ মার্চ রাত সাড়ে নয়টায় চাষাড়াস্থ রূপায়ন টাওয়ার থেকে ওসি সাহেব কথা বলবেন বলে শাহ ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজকে ডেকে নিয়ে যায় থানায়। এ সময় ফয়েজ নিজেই তার গাড়ী চালিয়ে থানায় যাবার পর শুরু হয়ে দীর্ঘ আলোচনা ।
ফতুল্লা থানার ওসি আসলাম হোসেন ও ইন্সপেক্টর তদন্ত সাহাদাৎ হোসেন একই সূরে প্রথম প্রশ্ন : আপনার স্ত্রীকে এভাবে মেরেছেন কেন ?
এ সময় স্ত্রী আরোহী হাওলাদার তার মায়ের উপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কক্ষে বলতে শুরু করেন : তার বিয়ের পর থেকে ফয়েজ তার কাছ থেকে দফায় দফায় টাকা নিয়েছেন । দোকান বিক্রির ৮ (আট) লাখ টাকা দেয়ার পর আরো যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকার এক পর্যায়ে দিতে না পারায় আমাকে এভাবে পিটিয়ে আহত করেছে স্বামী ফয়েজ ।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে শাহ ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেনসহ উপস্থিত সকলকে জানায়, সে আমার স্ত্রী । তার অতীত ইতিহাস না বলে ২৭ মার্চ যা নিয়ে ঘটনা তা হলো : আমি বাসায় না থাকলে প্রায়ই খোজ নিয়ে দেখি আমার স্ত্রী আরোহী হাওলাদার ওরফে কুলসুম মোবাইল ফোনে সার্বক্ষনিক ব্যস্ত থাকে তার বিভিন্ন বয় ফ্রেন্ডের সাথে । কখনো মোবাইলে, কখনো ফেসবুকে আবার কখনো হোয়াসট অ্যাপে । যেহেতু আমার নামে সংগ্রহ করা সিমকার্ড দিয়ে এমন আলোচনা/পরকীয়ার ঘটনা চলে আসছিলো তার সকল প্রমাণ আমি অনায়াসেই সংগ্রহ করি । আর এই পরকীয়ার রেকর্ড সংগ্রহ করার কারণেই এই দ্বদ্ধের সৃষ্টি ।
এমন পরকীয়ার ঘটনায় তাকে (আরোহী হাওলাদারকে) কয়েকবার সাবধান করেছি । তারপরও এই অসংলগ্ন চালচলন থেকে ফেরাতে পারি নাই । অতি সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় কর্মরত পুলিশের দারোগা সজির আহমেদের (যার মোবাইল নম্বর ০১৬৩২৪০০৮১০) সাথে মুঠোফোনে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলে এবং বাজে আলোচনা প্রায়ই শুনতে পাই । এমন ঘটনায় আমি নিজে সজিবের মুঠোফোনে কথা বলে গালিও দিয়েছি, সাবধান করেছি । এরপরও থামানো যায় নাই আরোহী আর সজিবসহ আরো কয়েকজন বয়ফ্রেন্ডের সাথে গোপন সখ্যতার বিষয়টি । এমন ঘটনা ছাড়াও দারোগা সজিবের নাম মোবাইল ফোনে সেভ করা হয় “সেক্রেট লাভ” হিসেবে ।
আমি এমন কর্মকান্ডের কারণ জানতে চাই আমার স্ত্রীর আরোহীর কাছে । এরপর শুরু হয় বাক বিতন্ডা, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, হাতিাহাতি, মারধর । এক পর্যায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয় আমার স্ত্রী আরোহী । মারামারির পর বাসা থেকে বেড়িয়ে আসলে আবার শুরু হয় “সেক্রেট লাভ” নামক দারোগা সজিবসহ আরো কয়েকজনের সাথে পরামর্শ । এই পরামর্শ থেকেই অভিযোগ করে আরোহী ।
ওসি আসলাম হোসেনকে উদ্দেশ্য করে শনিবার রাতে যুবলীগ নেতা শাহ ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজ আরো জানায়, বিয়ের আগে আরোহী হাওলাদার কুলসুমের বাবা খলিল হাওলাদার গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় নানাভাবে সহযোগিতার পর তার প্রতি আশক্ত হয়ে পরি । তৎকালীন সময়েই চাষাড়ার একটি দোকানে সেলসম্যান হিসেবে চাকুরী করার সুবাদে শহরের অনেকের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে আরোহীর । পরে চাকুরী ছেড়ে মডেলিং করার চেষ্টা করে, দেশে বিদেশে দৌড়ঝাপ ও নানা কেলেংকারীর ঘটনা আমি জানার পরও সংশোধন হবে এই প্রতিশ্রুতির কারণে তাকে বিয়ে করে সংসার শুরু করি । তার হাজারো কেলেংকারীর বিভিন্ন রেকর্ডের সামান্য অংশ তুলে ধরার পর নিশ্চুপ হয়ে যায় ওসির কক্ষে অবস্থানরত আরোহীসহ সককলই। এরপর স্ত্রী আরোহী হাওলাদার কুলসুম মামলা করবে না বলে জোড়ালো আবেদন করলেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন ও ইন্সপেক্টর তদন্ত সাহাদাৎ হোসেন সকলকে বলেন, আমি যদি মামলা গ্রহণ না করি তখন এই নারী (আরোহী হাওলাদার) থানার বাহিবে গিয়ে বলতে থাকবেন আমাকে জোড় করে আপোষ করিয়েছে । তার চেয়ে ভালো যেহেতু আরোহী হাওলাদার মামলা করেছে তাই আদালতে গিয়ে পারিবারিক বিষয়টি মীমাংশা করেন।
রোববার ২৯ মার্চ সকালে আদালতে স্বেচ্ছায় হলফনামা দিয়ে স্বামী শাহ ফয়েজ উল্লাহ কে জামিন করানোর চূড়ান্ত পর্যায়ে অজ্ঞাত এক ফোনে দীর্ঘক্ষন আলোচনা শেষে আদালত চত্তরেই নিজ সন্তানকে ননদের কোলে দিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে যায় আরোহী । অজ্ঞাত স্থানে থেকেই আরোহী হাওলাদার র্যাব ১১ এর দপ্তরে অভিযোগ করেন তার সন্তান ও মাকে আটকে রেখে হলফনামায় সই করাতে চাইছে স্বামীর পরিবারের লোকজন ।
এ সময় শাহ ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজ আদালতের আদেশে কারাগারে নেয়ার পথে উপস্থিত সাংবাদিদের বলেন, আমার স্ত্রী আরোহীকে আমি তো আর অস্বীকার করতে পারবো না । আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল । অবশ্যই একদিন সতিটাই প্রকাশ হবে। আমার স্ত্রী আরোহীর পিতার অসুস্থতা থেকে শুরু করে পুরো পরিবারটির পাশে থেকে সহায়তা করাই আমার জন্য কাল হয়ে দাড়িয়েছে । আর আমার স্ত্রীর সাথে দারোগা সজিবসহ আরো কয়েকজনের পরকীয়ার সম্পর্কের বিষয়ে সকল তথ্য প্রমাণ আমার হাতে চলে আসায় এখন যে কোন মূল্যে আমাকে ফাদে ফেলে ফায়দা হাসিল করতে চাইছে আমার স্ত্রী আরাহী। ফতুল্লা থানা, আদালত চত্তরের ভিডিও ফুটেজ, আরোহীর মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড সংগ্রহ করলেই রেড়িয়ে আসবে আরোহী হওলাদারের সকল কুকর্মের ফিরিস্তি ।
তবে আরোহী হাওলাদার ওরফে কুলসুমের বিরুদ্ধে স্বামী ও তার পরিবারের দীর্ঘ অভিযোগের প্রমাণ, দারোগা কাজী সজিব আহমেদের সাাথে মোবাইল চেটিং, ভিডিও চেটিংসহ কেএম মনিরুজ্জামান মনির, সেক্রেট লাভ নামক অজ্ঞাত ব্যাক্তিসহ কয়েকজনের সাথে অসংখ্য অসংলগ্ন আলোচনার রেকর্ড, ফতুল্লা থানায় স্ত্রী ও শ্বাশুড়ির উপস্থিতিতে আরোহীর অনৈতিক সম্পর্কের ফিরিস্তির রেকর্ড এবং থানার কর্মকর্তাদের বক্তব্য সংরক্ষনে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেটের দপ্তরে ।
এমন গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে আরোহী হাওলাদার ওরফে কুলসুমের মুঠোফোনে অসংখ্যবার যোগাযোগ করে তার বক্তব্য চাওয়ার চেষ্টা করলে কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নাই ।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানের কাছে দারোগা সজিব আহমেদের সাথে জেলা যুবলীগ নেতা শাহ ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজের স্ত্রীর এমন অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেটকে বলেন, বিষয়টি আমি জানি এবং সজিবকে তো আমি অনেক আগেই এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছি ।
Discussion about this post