নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: শীঘ্রই সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক।
বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ আয়োজিত মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একই সাথে মুক্তিযোদ্ধা কমপেক্সের দায়িত্বও মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে বুঝিয়ে দেয়া হবে। দেশে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সেগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে তালা দেয়া রয়েছে। এর চাবি থাকে সরকারের লোকজনের হাতে। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আমরাই করেছি। মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের চাবি থাকবে আমাদের কাছে। কেন আমাদের কাছে সেই চাবি নেই? সারা দেশে গত চার বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন হচ্ছে না। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডাররা প্রাক্তন কমান্ডার হিসেবে আছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে কোন ক্ষমতা নেই। জেলাগুলোতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পরিচালনা করছেন সরকারি আমলারা (ডিসি ও ইউএনও)। মুক্তিযাদ্ধাদের জন্য এটা অত্যন্ত অপমানজনক ব্যাপার।
তিনি জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের এসব ব্যাপারে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর সাথে তিনি কথা বলেছেন । মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের চাবি মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ফিরিয়ে দেয়াসহ খুব শীঘ্রই মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন বলে তাকে আশ্বাস দিয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার মোহাম্মদ আলী। অনুষ্ঠানে ৭০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে পাঁচ হাজার টাকা করে সম্মানি ভাতা প্রদান করা হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও শেখ হাসিনার কর্মী আওয়ামীলীগ কোন শক্তির উপর ভর করে রাজনীতি করে না। দ্বন্দ্ব-বিভেদ থাকলেও নিজের শক্তির উপর ভরসা করেই আওয়ামীলীগ রাজনীতি করে। এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। শামীম ওসমান বলেন, ৭৫’এর পরে আমরা যারা রাজনীতি করতে এসেছি, কোন চাওয়া পাওয়ার রাজনীতি করতে আসিনি। আমরা রাজনীতিতে এসেছিলাম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের দাবীতে। আমার সেই চাওয়া পাওয়া পূরণ হয়ে গেছে। তবে পরবর্তী প্রজন্ম রাজনীতিতে আসবে দেশের অর্থনীতির মুক্তির জন্য এবং দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির অপতৎপরতার কথা উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, তারা যে কোন সময় ছোবল মারবে। তিনি দলের ভেতরে থাকা দ্বিমুখী লোক যারা দিনের বেলায় আওয়ামীলীগ ও রাতের আঁধারে জামাত শিবিরের সাথে আঁতাত করে চলে, তাদের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকারও আহবান জানান।
শামীম ওসমান বলেন, ‘আজকে মন্ত্রী, এমপি না থাকি, তাহলে ফুলতো দূরের কথা। পুলিশ দৌড়াইয়া পানিত নামাইবো। যেই পুলিশ আমগো দেইখা, আরে বাবা রে বাবা..। মারলো কে ২১ বছর আমাগো। সবই তো দেহি আমাগো। কারলো কারা? ওইসব নাটকবাজি অন্য জায়গায় চলবে, নারায়ণগঞ্জে না। এটা মাথায় রাখতে হবে।’ নারায়ণগঞ্জে ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাই। আগের প্রাচ্যের ডান্ডি পেতে চাই।একটা পরিপূর্ণ নারায়ণগঞ্জকে রেখে যেতে চাই। আমরা কাজ করতে চাই মানুষের জন্য। মানুষ মাদক বিক্রি, চাঁদাবাজি চায়না। মানুষ এটা দেখতে চায়না, সরকারি কর্মকর্তা রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে টাকা নেয় মানুষ এটা দেখতে চায়না। মানুষ সুশাসন চায়। মানুষ নিরাপত্তা চায়, শান্তিতে ঘুমুতে চায়, শান্তিতে মরতে চায়।
জেলা পরিষদের প্যানেল মেয়র মাহমুদা মালার উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ নজরুল ইসলামবাবু, সংরক্ষিত মহিলা আসন-২২ এর সাংসদ ফজিলাতুন নেসা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের অন্যতম সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, জেলা যুবলীগের সভাপতি মুুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির, জেলা পরিষদ সদস্য মুজিবুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post