করোনা প্রতিরোধে আগামী দিনের করণীয় নির্ধারণ ও সার্বিক পরিস্থিতি জানতে নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে সোমবার (১৩ জুলাই) এক বৈঠকে অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সচিব আব্দুল মান্নান।
বৈঠকে সব উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা উপস্থিত থাকলেও রূপগঞ্জের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সাঈদ আল মামুন অনুপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে খোঁজখবর করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আব্দুল মান্নান।
সোমবার বৈঠকে উপস্থিত হয়ে সাঈদ আল মামুনের অনুপস্থিতি নজরে আসে সচিবের। তাকে বৈঠকের ব্যাপারে অবহিত করা হয়েছে কিনা, আব্দুল মান্নান এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ সবাইকে এ তথ্য জানানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন। পরে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন সচিব।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে করোনা পরীক্ষার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া কিছুদিন আগে রূপগঞ্জ সদরে রেডজোনভিত্তিক লকডাউনও করা হয়, যা সম্প্রতি সফলভাবে শেষ হয়েছে। এসব বিষয়সহ উপজেলার সার্বিক করোনা পরিস্থিতি জানতে বৈঠকে সাঈদ আল মামুনের উপস্থিতি জরুরি ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সচিব আব্দুল মান্নান বলেছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিদিন আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করছি। ডিজির কাছে ব্যাখা চাওয়া, গতকালও একজন প্রফেসরের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হচ্ছে। ঢাকা নয় নারায়ণগঞ্জেও যদি এমন কিছু তথ্য থাকে আমাদের জানান। মিডিয়াই আমাদের ভরসা। আমরা দুর্নীতির কোন জায়গাই ছাড়তে চাচ্ছি না। আমি একদিন, এক ঘণ্টা, এক মিনিটও দুর্নীতির সাথে থাকতে চাইনা। আমাদের কাছে তথ্য প্রমাণ আসার সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা বসে থাকবোনা।
সবচেয়ে বড় কথা সত্য যেন বের হয়ে আসে। আমরা সত্যের সাথে থাকতে চাই। যারা অপরাধ করবে তারা সকলেই আইনের আওতায় আসবে, আসা উচিত। আমাদের অনেক সময় তথ্য উপাত্ত পেতে অনেক দেরী হয় সেটি আপনাদের কাছে থাকলে আমাদের জানাবেন।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় বলেছেন এদেশে দুর্নীতির কোন স্থান নেই। দুর্নীতি দমন কমিশনও এ নিয়ে কাজ করছে। আমি নির্ভয়ে বলতে চাই যারাই অপরাধ করবে তারা যে প্রতিষ্ঠানই হোকনা কেন বা যে ব্যক্তিই হোকনা কেন দেখার বিষয় না, আমরা অপরাধ দেখে প্রতিষ্ঠান একেবারে সিলগালা করে দেব।
তিনি আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জ করোনার শুরু থেকে হটস্পটে পরিণত হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জ এখন একটা পর্যায়ে এসেছে। এখানে যারা স্বাস্থ্যসেবা ও করোনা নিয়ে কাজ করছে তাদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে আজ এখানে এসেছি। ডাক্তাররা ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা তাই তাদের কাছে এসেছি তাদের কথা শুনতে। এতে তাদের মনোবল ফিরে আসবে। তাদের ডেকে ঢাকায় নিয়ে কথা বলার চাইতে তাদের কাছে এসে আমি কথা শুনবো বলেই এখানে আসা। তাদের কাছ থেকেই আমি জানবো সমস্যাগুলো কোথায়, যাতে মানুষ সেবা পায় এবং জনগনের সেবা নিশ্চিত করা যায়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, রোগী কেন দিন দিন কমে যাচ্ছে সেটি দেখবো আমরা। যদি খানপুরে করোনা হাসপাতালে ৮০ জন ডাক্তার ও ২৬ জন রোগী থাকে তাহলে সেটি কেন দেখতে হবে। ভেতরে আরো সমস্যা আছে কিনা আমরা দেখবো। আর কয়েকদিন দেখার পর এ হাসপাতালে দুটি পথ করে একটি কোভিড ও অন্যটি সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য ব্যবস্থা করা হবে।
সচিব আরো জানান, কোন হাসপাতাল যদি নিয়মের বাইরে গিয়ে টেস্ট করায় কিংবা বেশি টাকা আদায় করে সেটি স্বাস্থ্য বিভাগের মাধ্যমে আমরা ব্যবস্থা নেব। অনেক গন্যমান্য ব্যক্তি কোভিড হাসপাতালের বাইরে দিয়েও যায়না অথচ আমাদের ডাক্তাররা জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে কাজ করছে তাই তাদের প্রণোদনার ব্যাপারটি দেখা হচ্ছে।
এতে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম সচিব উম্মে সালমা তানজিয়া, জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ, খানপুর করোনা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. গৌতম রায়, আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সায়মা আফরোজ ইভা, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
Discussion about this post