শুক্রবার ১০ জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সভায় সকলরে মধ্যকানে ছিলেন বহুল বিতর্কিত রাজাকার পুত্র নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল । প্রশাসনের সকল কর্মকর্তাদের মধ্যমনিতে অবস্থান নেয়ায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে নগরজুড়ে । কি করে একজন রাজাকার পুত্র এবং একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী এমন রাস্ট্রীয় অনুষ্টানে অবস্থান নেয় । একই অনুষ্টানে নারায়ণগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সামিউল্লাহ মিলনকে রাখা হয় সাউড লাইনে । এমন ঘটনায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত অনেকের মাঝে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয় । পরবর্তিতে এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে সমালোচনা শুরু হয় নগর জুড়ে । অনেকেই বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সাইড লাইনে আর রাজাকার পুত্র প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যমনি ! এমন ঘটনায় সামিউল্লাহ মিলন নিজেও কোন মন্তব্য করতে রাজি হন নাই। মিলন বলেন আমি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করবো না ।
ঘটনাটি ব্যাপকভাবে নগরজুড়ে চাউর হলে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের প্রত্যাহারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করবেন বলে জানান মেয়র আইভী
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
যে মহান নেতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিলো সেই মহান নেতাকে ঘিরে অনুষ্ঠিত কাউন্ট ডাউন অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জের চিহ্নিত রাজাকারের সন্তান খালেদ হায়দার খান কাজলের উপস্থিতি, তাকে দিয়ে বক্তব্য দেয়া, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করা কোনটিই নারায়ণগঞ্জবাসী মেনে নিবেনা। আমি ধিক্কার জানাই নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক পুলিশ সুপার এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে।
সেই সঙ্গে ধিক্কার জানাই যারা দীর্ঘদিন থেকে রাজাকারদের সমাজে প্রতিষ্টিত করছেন সেই সেলিম ওসমান সেই শামীম ওসমানকে। অথচ এই দুই ভ্রাতৃদ্বয় মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের কথা বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন। আমি রাতেই জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন ও পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমের সাথে কথা বলেছি। তাদেরকে বলেছি রাষ্ট্রিয় অনুষ্ঠানে রাজাকারের ছেলে কিভাবে অতিথি হলেন ?
এর উত্তরে তাঁরা বলেন, এ ঘটনায় আমরাও বিব্রত। এরপর আমি তাদেরকে বলেছি এরকম ঘটনা যদি আবার ঘটে নারায়ণগঞ্জবাসীকে নিয়ে প্রতিবাদ জানাবো এবং তাদেরকে প্রত্যাহারে ব্যবস্থা নিবো।
একটি গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী এমন কঠোর ভাষায় রাজাকারপুত্র খালেদ হায়দার খান কাজলের উপস্থিতি নিয়ে এমন ন্তব্য করেছেন ।
মেয়র আইভী আরো বলেন, রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে রাজাকারের ছেলের উপস্থিতি কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না। আর সেই অনুষ্ঠান যদি হয়ে থাকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান তাহলে কোনভাবে আপোষ করারও পশ্ন উঠেনা।
তিনি বলেন, এই শহর রাজাকারদের নয় এটা মুক্তিযোদ্ধাদের শহর। তিনি প্রশ্ন তুলেন ১ জানয়ারী থেকে প্রতিদিন বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানের আয়োজন করছি আমরা। আজকে রাজাকারদের বংশদরদের দিয়ে অনুষ্ঠানমালা প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চলছে। রাজাকারদের বংশধরদের পূণর্বাসন করার যে মিশন তানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে নালিশ জানাবো । ওনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
গতকাল শুক্রবার রাতে রাসেল পার্কে বঙ্গবন্ধুর শতবার্যিকী আওযাজিত অনুষ্টানে প্রধার অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেয়র আইভী। এ সময় একজন ডিসি-এসপির মাঝখানে রাজাকার পুত্রের ছবি দেখান। এ সময় মেয়র ক্ষুব্দ হয়ে ডিসি-এসপিকে ফোন করে ব্যাখা চান।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের প্রাঙ্গনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে ক্ষণগণনার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন, র্যাব ১১ এর অধিনায়ক (সিও) ইমরান উল্লাহ সরকার, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মনিরুল ইসলাম, জেলার সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইমতিয়াজ, পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন, তোলারাম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শিরিন আক্তার, জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ আলী, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল প্রমুখ।
এ সময় অনুষ্ঠানে ডিসি-এসপির মাঝে রাজাকার পুত্র নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজলের উপস্থিতি মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারন মানুষের তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
Discussion about this post