নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
সকালে ভোরের প্রথম আলো রাঙিয়ে দেবে নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা আর সম্ভাবনাকে। সারাদেশের ন্যয় নারায়ণগঞ্জের পরো জেলা জুড়ে থাকবে বর্ষবরণের নানা আয়োজন। ফতুল্লার গঞ্জকুমারিয়া থেকে শুরু করে আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়ার সর্বত্র চৈত্র সংক্রান্তির মাধ্যমে আজ ১৪২৫ সনকে বিদায় জানিয়ে বাংলা বর্ষপঞ্জিতে কাল যুক্ত হবে নতুন বছর ১৪২৬।
পুরোনো বছরকে পেছনে ফেলে সম্ভাবনার নতুন বছরে প্রবেশ করবে বাঙালি জাতি। রাত পোহালেই পয়লা বৈশাখে বর্ণিল উৎসবে মাতবে নারায়ণগঞ্জ।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীসহ বাঙালিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। একই সাথে নারায়ণঞ্জে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বাংরা নববর্ষউৎযাপন করতে নেয়া হয়েছে নানা আয়োজন।
মোঘল সম্রাট আকবরের সময়ে শুরু হয় বাংলা সন গণনা। কৃষিকাজ ও খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য এই কাজ করা হতো। হিজরি চন্দ্রাসন ও বাংলা সৌর সনের ওপর ভিত্তি করে প্রবর্তিত হয় নতুন এই বাংলা সন।
প্রথমদিকে বাংলা সনের পরিচিত ছিল ফসলি সন নামে, পরে ১৫৫৬ সালে তা পরিচিত হয় বঙ্গাব্দ নামে। কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ সমাজের সঙ্গে বাংলাবর্ষের ইতিহাস জড়িয়ে থাকলেও এর সঙ্গে রাজনৈতিক ইতিহাসেরও সংযোগ ঘটেছে।
পাকিস্তান শাসনামলে বাঙালি জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের। আর ষাটের দশকের শেষে তা বিশেষ মাত্রা পায় রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনের মাধ্যমে। দেশ স্বাধীনের পর এই আয়োজন ছড়িয়ে পরে সারা দেশে । পহেলা বৈশাখ কে কোন ধর্ম দিয়ে বিবেচনা না করে সকল ধর্শালম্বী মহা উৎসবের সাথে পালন করে এই দিনটি ।
দেশ স্বাধীনের পর বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীকে পরিণত হয় বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। উৎসবের পাশাপাশি স্বৈরাচার-অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও এসেছে পহেলা বৈশাখের আয়োজনে।
১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। যা ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো এ শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয়।
বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে নববর্ষ উদযাপন পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের সার্বজনীন উৎসবে। পয়লা বৈশাখের ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর আয়োজনে মেতে ওঠে সারা দেশ।
কাল বর্ষবরণের এ উৎসব আমেজে মুখরিত থাকবে বাংলার চারদিক। গ্রীষ্মের খরতাপ উপেক্ষা করে বাঙালি মিলিত হবে তার সর্বজনীন এই অসাম্প্রদায়িক উৎসবে। দেশের পথে-ঘাটে, মাঠে-মেলায়, অনুষ্ঠানে থাকবে কোটি মানুষের প্রাণের চাঞ্চল্য, আর উৎসব মুখরতার বিহ্বলতা।
বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ ১৪২৬ উদযাপন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছে । পয়লা বৈশাখ সকালে জেলা চারুকলা থেকে নানা রং বে রঙ্গে সেজে উঠবে সকলেই ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। দিবসটি উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগে শত বছরের ঐতিহ্য বৈশাখী মেলার আয়োজন করেছে ।
বর্ষবরণ উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকেই খৈ, মুড়ি-মুড়কি, বাতাসা ও বাঙালি খাবারের আয়োজন রেখেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও পান্তা ইলিশের আয়োজন করা হয়েছে ।
Discussion about this post