নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও আকাশ গবেষকদের তথ্য মতে আগামী ৫মে শাবান মাসের শেষ দিন। সে হিসেবে ৬ মে থেকে শুরু হবে পবিত্র রমজান মাসের রোজা । আর এই রমজান মাসকে সামনে রেখে প্রতি বছরের ন্যয় অসাধু ব্যবসায়ীরা নানাভাবে শুরু করেছে তাদের অপকর্ম ।
রসনা প্রেমিক বাংলাদেশীদের ইফতারে নানা ভোজ্য খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে অন্যতম মুড়ি থাকতেই হবে । মুড়ির বিশাল চাহিদাকে সামনে রেখে এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের ২০/২৫টি কারখানায় মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ইউরিয়া সার ও হাইড্রোজ মিশিয়ে রমজান মাসের চাহিদার প্রায় ৭০% মুড়ি ইতিমধ্যেই উৎপাদন করে পাইকারী বাজারে বিক্রিও করেছে । এমন বিষাক্ত ইউরিয়া সার ও হাইড্রোজ দিয়ে মুড়ি তৈরী করে বাজারজাত করলেও আইনপ্রয়োগকারী কোন সংস্থার কারো কোন মাথাব্যথা নাই ।
কেন কোন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা মুড়ি কারখানার এমন অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না এমন প্রশ্নে শহর ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলায় কয়েকটি কারখানায় সরজমিনে উপস্থিত হয়ে এবং আলোচনা করে জানা যায় চঞ্চল্যকর খবর ।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে একজন মুড়ি কারখানার কর্ণধার আলোচনার এক পর্যায়ে বলেন, মুড়ির তৈরীর কাজ শুরু হয়েছে ফেব্রুয়ারীর শেষ সপ্তাহ থেকে। রমজান শুরু হওয়ার দুই থেকে আড়াই মাস আগে থেকেই কারখানার কাজ শুরু হয় পুরোদমে । এ সময় কারিগরও ঠিক মতো পাওয়া যায় না । মুড়ি তৈরীতে চাউল সংগ্রহ করতে হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে । রমজান মাসে সারাদেশে মুড়ির চাহিদা বিশাল । এই চাহিদা মিটাতে প্রতিটি কারখানায় দিনরাত কাজ করতে হয় । অবশ্যই প্রত্যেকটি মুড়ি তৈরীর কারখানায় বস্তায় বস্তায় হাইড্রোজ ও ইউরিয়া সার মজুদ থাকে। যা লুকিয়ে রেখে একসাথে মিশিয়ে মুড়ি তৈরীর সময় কাজে লাগাতে হয় । কোন কারখানার মালিক বা কর্মচারীরা এই মুড়ি খায় না । সারাদেশের মানুষ দেখতে সাদা ফকফকে এমন মুড়ি খোজ করে । তাই বিষ মিশিয়েই আমাদের মুড়ি তৈরী করতে হয় ।
তিনি আরো বলেন, ফেব্রুয়ারী মাসেই নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ, ডিবি পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, হেমড়া চোমড়াদের নানাভাবে ম্যানেজ করেই এই মুড়ি তৈরী হচ্ছে । কোন প্রশাসনের ঝামেলা হলে টাকা দিয়েই ম্যানেজ করে ফেলি । এমনটি সকলেই করে । প্রতিটি কারখানায় নিম্নে দুই লাখ টাকা রেডি (প্রস্তুত) রাখে সবসময় । কোন ঝামেলা হলে এই টাকায় ম্যানেজ করা যায়। নারায়ণগঞ্জে এতোগুলি মুড়ির কারখানা যুগ যুগ ধরে এমন অপকর্ম করতেছে আজো কি শুনেছেন, মোবাইল কোর্ট অভিযান চালাইছে । কেন চালায় নাই ? কারণ তো আছেই । যদি মোবাইল কোর্ট অভিযান চালায় তরে একটা কারখানাও চালাতে পারবো না। বিশাল শাস্তি হয়ার কথা । আমি জেনেশুনে পাবলিকরে (জনসাধারণকে) বিষ খাওয়াচ্ছি । কিন্তু কি করবো । সকলেই তো প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই অপকর্ম করতেছে । একই সাথে গ্যাস চুরির মহোৎসব চালিয়ে মুড়ি তৈরী করে দেশের চাহিদা মিটাচ্ছে ।
অকপটেই এই মিল মালিক স্বীকার করে আরো বলেন, প্রশাসনের মনের বিষ দূর করলেই বিষমুক্ত মুড়ি খেতে পারবে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। আইনপয়োগকারী সংস্থার প্রায় প্রতিটি টেবিলেই ম্যানেজ থাকায় এভাবেই চলছে বিষাক্ত মুড়ির কারবার । মুড়ির কারকানার মালিকদের ধর্ম বলে কিছু নাই । তরে অনেকেই স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ায় বাড়তী টাকা দিয়ে গ্রামের মহিলা দিয়ে মুড়ি বেজে নিয়ে যায় । যা দেখতে খুব একটা ভালো না হলেও স্বাস্থ্য সম্মত ।
Discussion about this post