নারায়ণগঞ্জে অবৈধ স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। সোমবার (১১ জানুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের কালিরবাজার ও কেন্দ্রীয় রেলওয়ে সংলগ্ন এলাকায় রেলওয়ের জমিতে এ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালিত হয়।
এসময় বিভিন্ন দোকান, কয়েকটি খাবারের হোটেল, অস্থায়ী বাসস্থানসহ অর্ধশতাধিক দোকান উচ্ছেদ করা হয়। অভিযানে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীর ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও উপ সচিব (ডেপুটি কমিশনার) নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্টেট, পুলিশ, বিপুল সংখ্যক রেলওয়ে পুলিশ ও রেলওয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তবে এসময় শহরের ঐতিহ্যবাহী মাউরা হোটেলকে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকায় ৩ মাসের সময় দেয়া হয় স্থাপনা সরিয়ে দেয়ার জন্য। এছাড়া শীতলক্ষ্যার তীরে বিআইডব্লিউটিএ’র সঙ্গে বিরোধপূর্ণ জমির বিষয়েও সরেজমিনে পরিদর্শন করেন উর্ধ্বতনরা।
এ বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রনালয়, নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়, বাংলাদেশ রেলওয়ে, বিআইডব্লিউটিএ ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত সরেজমিনে পরিদর্শনের পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সোমবার (১১ জানুয়ারি) সকাল থেকে কেন্দ্রীয় রেলওয়ে সংলগ্ন এলাকায় ভান্ডারী হোটেল, আল মদিনা বিরিয়ানী হাউস, আল আমিন ফার্নিচারসহ রেলওয়ের জমিতে স্থাপিত অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালিত হয়। তবে শহরের ঐতিহ্যবাহী মাউরা হোটেল উচ্ছেদের বিষয়ে উচ্চ আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে রেল কর্তৃপক্ষ হোটেলটি সরিয়ে নিতে ৩ মাসের সময় বেধে দিয়েছে।
এদিকে শীতলক্ষ্যার তীরবর্তী এলাকায় রেলওয়ের ডাবল রেললাইন প্রকল্পের এক্সটেনশন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই রেলওয়ে ও বিআইডব্লিউটিএ’র লোকজন মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। এর আগে একাধিকবার তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও গত নভেম্বর মাসে পিলার ও মসজিদের মেহরাব (মিম্বার) ভাঙার মতো ঘটনাও ঘটে।
সোমবার রেলওয়ের উচ্ছেদ চলাকালেও বিআইডব্লিউটিএর লোকজনও তাদের লোকজন নিয়ে নদীর তীরবর্তী এলাকায় অবস্থান করছিল। যা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যেও উত্তেজনা বিরাজ করছিল। তবে শেষ পর্যন্ত উভয়পক্ষের ঊর্ধ্বতনদের মধ্যে আলোচনার পরে উত্তেজনা প্রশমিত হয়।
দুপুরে বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব জামিলের নেতৃত্বে বিআইডব্লিউটিএ`র নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক শেখ মাসুদ কামাল, উপ পরিচালক মোবারক হোসেনসহ উর্ধ্বতনরা রেলস্টেশনে এসে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীর ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও উপ সচিব (ডেপুটি কমিশনার) নজরুল ইসলামের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। দীর্ঘক্ষণ আলোচনার পরে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমিত হয়। এরপর তারা উভয়পক্ষ সরেজমিনে বিরোধপূর্ণ এলাকায় পরিদর্শনেও যান।
এর আগে ১১ জানুয়ারী সকালে নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের উপ সচিব মো: আমিনুর রহমান একটি নোটিশ প্রেরণ করেন। যাতে উল্লেখ করা হয়, রেলপথ মন্ত্রনালয়, নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়, বাংলাদেশ রেলওয়ে, বিআইডব্লিউটিএ ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত কমিটি সরেজমিনে শীতলক্ষ্যা নদীর ফোরশোর বা তীরভূমিসহ লীজকৃত সম্পত্তি জায়গা পরিদর্শন করবেন। উক্ত কমিটি পরিদর্শন না করা পর্যন্ত উচ্ছেদ কার্যক্রম না করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
Discussion about this post