নারায়ণগঞ্জ রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে ও সামাজিকভাবে এই নারায়ণগঞ্জের অবস্থান সারা বাংলাদেশের মধ্যে অনেক উপরে । নারায়ণগঞ্জের মানুষ অনেক বেশি বড় হৃদয়ের মানুষ। আপনারা নারায়ণগঞ্জকে নেগেটিভ হিসেবেই জানতেন। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ অত্যন্ত পজেটিভ । নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এভাবেই বক্তব্য প্রদানকালে উপস্থিত সকলেই মন্ত্রমূগ্ধের মতো শুনেছেন তার বক্তব্য । এ সময় ছিলো পিনপতন নিরবতা
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের অনেক যুদ্ধের মাঝখান থেকে কাজ করতে হয়। কিন্তু এই যুদ্ধ আমার খারাপ লাগে না, ভালই লাগে। বাধা না আসলে সেই কাজের আনন্দ পাই না। যেখানেই বাধা সেখানেই কাজ করার অনেক বেশি আনন্দ। নারায়ণগঞ্জের লোকজন জানে আমি কিভাবে কাজ করে যাচ্ছি। যারা নারায়ণগঞ্জের বাইরে আছে তারাও জানেন।
শুক্রবার ২২ নভেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের গ্রান্ড হলে রোটারী ক্লাব অফ নারায়ণগঞ্জ রয়েলের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মেয়র আইভী আরো বলেন, ভয় শব্দটা আপনাদের ডিকশেনারী থেকে একদম তুলে ফেলতে হবে। যে ভয় পেয়েছে সেই মরেছে। যে থেমে গেছে তার জীবন ওখানেই থেমে গেছে। ভয় বলতে কোন কথা নাই। নেগেটিভ নারায়ণগঞ্জকে পজেটিভ করতেই হবে। আমাদের সমানতালে আগাতে হবে। শুধু ভাইরা এগিয়ে যাবে বোনরা পিছিয়ে যাবে তা হবে না। আমাদের আরও দূূর যেতে হবে। আমরা যদি একটু নিয়ম কানুন মানি, একটু চিন্তা করি তাহলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে।
ত্বকী প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরো বলেন, ত্বকী হত্যা হয়েছিল আজ থকে ৭ বছর আগে। ত্বকীর বাবা প্রতিবাদ না করলে আমরা কেউ পাশে গিয়ে দাঁড়াতাম না। ত্বকীর বাবা ত্বকীর মা সাাহস করে দাঁড়িয়েছে। এইজন্য আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী এখনও ত্বকী হত্যার বিচার চাই । আমরা কাউকেই ভয় পাইনি নারায়ণগঞ্জ শহরে। যত বড় গডফাডারই হোক না কেন আমরা তার সামনে দাঁড়িয়ে বলেছি ত্বকী হত্যা কারা করেছে। সাহসী হন সাহসী হতেই হবে। সাহসী হওয়ার বিকল্প নাই। এই দেশ আমাদের। হিন্দু মুসলিম সকলের।সুইপারের ছেলে সুইপার হবে আমি এটা মানতে রাজী না। আমি এটা অনেকটা পরিবর্তন করে দিয়েছি। আমাদের সুইপার কলোনীর সনু রানী দাস অনার্স শেষ করেছে। সে পিএইচডি করতে চায়। এটা শুনে খুব ভাল লেগেছে। এইরকমন সনুর মতো অনেকগুলো মেয়ে পড়াশুনা করছে। সুইপারদের পাশে দাঁড়ান। সুইপারদের পাশে কেউ দাঁড়াতে চাই না। আমি কিন্তু ওদের সাথে নাস্তা খাই, ওদের বানানো চা খাই, ওদের বানানো খাবার খাই। আমার কিন্তু খারাপ লাগে না। ওরা যদি না থাকতো তাহলে আমরা ভদ্রলোকরা ভালভাবে থাকতে পারতাম না।
বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ। বাংলাদেশ এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। আমাদের অনেক কিছু আছে। কিন্তু আমার মনে হয়, আমাদের নৈতিকতার অনেক অবক্ষয় ঘটেছে। আমার মনে হয়, আমাদের সততার অনেক অভাব দেখা দিয়েছে। আমাদের সাহস অনেক কমে গেছে। আমাদের এই অর্থ বিত্তের পাশাপাশি আমাদের নৈতিকতার প্রয়োজন, আমাদের প্রতিবাদ করার প্রয়োজন, আমাদের সাহস অনেক বেশি থাকার প্রয়োজন। নারায়ণগঞ্জে আজ থেকে ১৫ বছর আগে যারা সাহস করে কথা বলতে পারতো না, আজকে তারা স্বগর্র্বে মাথা উচু দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করা শিখেছে। সমাজের সেবা করতে হতে মনখুলে কথা বলতে হবে।
Discussion about this post