এনএনইউ রিপোর্ট :
কি হচ্ছে নারায়ণগঞ্জে ? আইনশৃংখলা বাহিনী কি কারণে এমন নানা অন্যায় অনিয়ম মুখ বন্দ করে সহ্য করে যাচ্ছে ? শহরের নানা অনিয়ম, জুয়া মাদকের রমরমা কারবার ছাড়াও বন্দরের জাতীয় পার্টির আন্ডারগ্রাউন্ডের চলছে জুয়া। সাত খুনের মুল হোতা নূর হোসেন ২০০৯ সাল থেকে টানা ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বীরদর্পে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে জুয়া, নগ্ন নৃত্য, মাদক ব্যবসাসহ এমন কোন অপকর্ম নাই যা সে করে নাই । শেষ পর্যন্ত সাত খুনের মধ্য দিয়ে নূর হোসেনের সাম্রাজ্যের অপকর্মের যবনিকা ঘটে।
সেই নূর হোসেন ফাঁসির দন্ড নিয়ে কারাগারে থাকলেও নূর হোসেনের রেখে যাওয়া একটি চক্র নারায়ণগঞ্জ শহরের একাধিক স্থানে, বন্দরে এবং সবশেষে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের কামতাল পুলিশ ফাঁড়ি এলাকায় রমরমা জুয়াসহ নানা অপরাধ কার্য্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বিরামহীনভাবে। পুলিশ প্রশাসনের নানা দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে বিশেষ পেশার নামধারী প্রভাবশালী চক্রটি শহরের বাসস্ট্যান্ড, কালীরবাজার, বঙ্গবন্ধ সড়কের একাধিক স্থানে রমরমা জুয়া, মাদক ও নারী ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে প্রকাশ্যেই।
শহরের একাধিক জুয়ার আসরের ক্যাশিয়ার এক সময়ের রিক্সাচালক রাজা মিয়া, জুয়া পরিচালনাকারী শহজাহান, কামতাল এলাকার নূর হোসেনের এক সময়ের ক্যাশিয়ার আবদুল হালিমের অডিও এবং ভিডিওর ভাষ্য থেকে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের কালীর বাজার, বাসস্ট্যান্ড ও শহরের আরো কয়েকটি স্থানে জুয়া সহ নানা অপকর্মের মুল হোতা এই শহরের প্রভাবশালী বিশেষ পেশার কয়েকজন। নারায়ণগঞ্জের আইনশৃংখলা বাহিনী ম্যানেজ করে বিশেষ পেশার লোকজনদের কারনেই বিরামহীনভাবেই চলছে জুয়া। বিশেষ পেশার প্রভাবশালী চক্র থানায় এক লাখ ২০ হাজার, ডিবি পুলিশের প্রতিটি টিমকে নিয়মিত মাসোয়ারা দিয়ে আসছে বিধায় এদিকে কেউ চোখ তুলেও তাকাতেও সাহস পায় না। কোন কোন সময় প্রচন্ড চাপে পরে জুয়ার আসরে হানা দিলেও সংসদ সদস্য কেউ কেউ ফোন দিয়ে আটককৃতদের ছাড়িয়ে আনে।
গত ১৯ নভেম্বর সোমবার রাতে ডিবি পুলিশের একটি টিম বন্দরের জাতীয় পার্টির আন্ডারগ্রাউন্ডে অভিযান চালিয়ে জুয়ার ক্যাশিয়ার রাজা মিয়াসহ ৮/১০ জনকে আটক করলেও হাজতে নিতে পারে নাই প্রভাবশালীদের তদ্বিরের কারণে। শেষ পর্যন্ত ক্যাশিযার রাজাসহ জুয়ারীদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় একজন সংসদ সদসস্যের তদ্বিরে। জুয়ারী চক্রের হোতারা নারায়ণগঞ্জের এই জুয়ার আসর থেকে লাখ লাখ টাকা আদায়ের পাশাপাশি এমন অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরোধীতাকারীদের নানাভাবে শায়েস্তা করার ক্ষেত্রেও সমান পারদর্শী।
বন্দরের নবীগঞ্জের সৌদি প্রবাসী জাকির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিবেদককে জানান, বিদেশে থাকাবস্থায় তার বোনের কাছে টাকা পাঠানোর পর সকল টাকাই ভাগ্নে আলম নারায়ণগঞ্জের কালীরবাজারের জুয়ার আস্তানায় জুয়া খেলে শেষ করেছে । এই ভাগিনা বাড়িতেও ঠিক মত যায় না । তাই ভাগিনাকে খুজতে গত ১ নভেম্বর রাত ৮টায় জুয়ার আসরে আসলে শাহজাহান, রাজা মিয়াসহ আরো কয়েকজন জাকির হোসেনকে আটক করে প্রথমে মারধর চালায় । এক পর্যায়ে ইয়াবা দিয়ে পুলিশ ডেকে গ্রেফতার করিয়ে জেল খাটানোর হুমকি দিয়ে থানায় ফোন করে। এই হামলার নের্তৃত্ব দেয় বিশেষ পেশার এক নামদারী। পুলিশকে ফোন দিলেও কোন মতে এই যাত্রায় রক্ষা পায় জাকির হোসেন।
এমন অপকর্ম সম্পর্কে কয়েকজন সংবাদকর্মী জানায়, নারায়ণগঞ্জের এই জুয়ার আসরের বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলতে পারে না। নূর হোসেন যেমন নারায়নগঞ্জের অনেক সাংবাদিককে নানাভাবে হয়রানী করতো ঠিক একই পন্থায় বর্তমানে প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে হয়রানীর খড়গ নেমে আসে। দুই সাংবাদিকে বিরুদ্ধে নানাভাবে হয়রানীও করা হয় । তাই কোন সংবাদকর্মী এই অপকর্মের বিরুদ্ধে কলম ধরতেও সাহস করে না । একটি এসোসিয়েশনের ব্যানরে শহর বন্দরে এমন নগ্ন কর্মকান্ড চালু রাখতে কখনো কখনো প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার, আবার সংসদ সদস্যদের নাম ব্যবহার করে আসছে মুখোষধারী অপরাধীরা।
আইনশৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্যগণ এমন অপরাধ বন্দ করতে তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়ার দাবী করেছে ভূক্তভোগি জাকির হোসেনের মতো অনেকেই। নইলে আবারো নূর হোসেনের বড় ধরনের কোন অপরাধ ঘটাতেও পারে বিশেষ পেশার নামধারী অপরাধী চক্র।
নারায়ণগঞ্জে এমন সামাজিক অবক্ষয় বন্দ করতে আইনশৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি র্যাব -১১ এর কঠোর নজরদারী ও তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার দাবীও উঠেছে জেলাজুড়ে ।
Discussion about this post