কথায় আছে চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী । নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা হাসপাতালের উন্নয়ণমূলক কাজের ক্ষেত্রে জরুরী বিভাগটি ভেঙ্গে ফেলার কাজ শুরু হচ্ছে । নতুন ভবন নির্মান করতে আরো প্রায় ৩ বছর সময় লাগতে পারে । জরুরী বিভাগের সেবা প্রদানের জন্য অস্থায়ী জরুরী বিভাগ তৈরীর কাজ শুরু করেছে জেলা গণপূর্ত বিভাগ । আর এই ক্ষেত্রেও নতুন ব্যবসা করতে সুকৌশলে সরকারী গাছ কেটে নিজের ফার্মেসী চালু করতে যাচ্ছেন পিএ সিদ্দিক নামের তৃতীয় শ্রেণীর একজন কর্মচারী। যার বিরুদ্ধে রয়েছে হাজারো অভিযোগ
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট
হাসপাতালের জরুরী বিভাগ নির্মানের আগেই কি করে নতুন বাণিজ্য করা যায় সে লক্ষ্যে সরকারী টাকায় অভি এন্টাইপ্রাইজের সামনের ৩০ বছরের পুরানো গাছটিও কৌশলে কেটে ফেলেছে পিএ সিদ্দিক । হাসপাতালের নানা অপরাধের হোতা (যাকে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান হাসপাতালের মালিক (!) বলে টিপ্পনি করেছেন । একই সাথে তাকে হাসপাতাল থেকে অন্যত্র বদলী হয়ে যেতে বলেছেন) পিএ সিদ্দিকের মালিকানাধীন অভি এন্টারপ্রাইজের সামনে অস্থায়ী ভিত্তিতে নির্মান হচ্ছে জরুরী বিভাগ । আর এই জরুরী বিভাগের সন্নিকটে ফার্মেসী ব্যবসা চালাতে কৌশলে কোন প্রয়োজন ছাড়াই গাছটি কেটে নিয়েছে বলে ব্যাপকভাবে সমালোচনার ঝড় উঠেছে হাসপাতাল এলাকায় ।
মহাধূর্ত ৩শ শয্যা হাসপাতালের পিএ সিদ্দিক ও তার সহযোগি শাক্তিশালী একটি সিন্ডিকেট হাসপাতালটি নির্মানের পর থেকে আজো পর্যন্ত নানাভাবে ঠিকাদরীর নামে লুটপাটের মগহাৎসব চালিয়ে আসলেও এই চক্রটির বিরুদ্ধে এলাকাবাসী ও ভূক্তভোগি সেবা গ্রহণকারীরা মুখ খুলতে সাহস করে না । এমনকি সাংবাদিকদের অনেকেই এমন লুটপাটের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় অনেকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানী করে পিএ সিদ্দিক ও তার নেপথ্যে থাকা চক্রটি ।
ফলে অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পিএ সিদ্দিক কতটা ধূর্ত তার প্রমাণ হলো অভি এন্টার প্রাইজের সন্নিকটে হাসপাতালের প্রাচীর ঘেষা গাছটি কেটে ফেলা । বন বিভাগ ও গণপূর্ত বিভাগকে ম্যানেজ করে অভি এন্টারপ্রাইজ ( এই হাসপাতালের ঠিকাদরী প্রতিষ্ঠান ) গাছটি কেটে ফেলে । যার উদ্দেশ্য হলো এই গাছটির কারনে নতুন করে চালু করতে যাওয়া ফার্মেসীর ব্যবসা করতে এই গাছটি (প্রতিবন্ধকতা হওয়ার আশংকায়) কাটা হয়েছে বলেও সমালোচনার ঝড় উটেছে ।
এ বিষয়ে গণপূর্ত বিভারে ঠিকাদার জানান, হাসপাতালের ভিতরের মোট ৬ টি গাছ কাটা হয়েছে । এর মধ্যে ৫ টি গাছ কাটার স্থানটিতেই অস্থাযী ভিত্তিতে নির্মান হবে হাসপাতালের জরুরী বিভাগ । আর প্রাচীর ঘেষা অভি এন্টার প্রাইজের সামনের গাছটি কেন কাটা হয়েছে তা আমার জান নাই । এখানে কোন কাজ হবে না ।
ব্যাপক সমালোচনায় অভি এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার জুয়েল জানায়, অভি এন্টারপ্রাইজের মালিক পিএ সিদ্দিক । আমি তার ম্যানেজার । গাছটি কেন কাটা হয়েছে তা সিদ্দিক সাহেবই জনেন। অনেকের উপস্থিতিতে জুয়েল আরো জানায়, পিএ সিদ্দিক সাহেবের কথাতেই কাটা হয়েছে এই গাছ । এর বেশী কিছু আমার জানা নাই ।
কোন কারণ ছাড়া গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে ৩শ শয্যা হাসপাতালের সুপার আবু জাহের নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেটকে বলেন, অস্থায়ী জরুরী বিভাগ নির্মানের জন্য কয়েকটি গাছ কাটা হয়েছে । কিন্তু প্রাচীর সংলগ্ন গাছটি কেন কাটা হয়েছে তা আমার জানা নাই । আর এই অভি এন্টারপ্রাইজের মালিক যে পিএ সিদ্দিক তা আমার জানা নাই । ওই গাছটি কেন কাটা হয়েছে তা পিএ সিদ্দিকই বলতে পারবেন ।
গত দুই তিন দিন যাবৎ পিএ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে এমন কঠোর সমালোচনার পর বুধবার ৩০ অক্টোবর সকালে সরজমিনে উপস্থিত হলে কঠোর সমালোচনা করে অনেকেই বলেন, সরকারী এই হাসপাতালের প্রাচীর ঘেষা অভি এন্টারপ্রাইজের নতুন ফার্মেসী চালু করতেই অপকর্ম টি কৌশলে সম্পন্ন করেছে পিএ সিদ্দিক । মাত্র ৮ দিন পূর্বে ২২ অক্টোবর বিকেলে নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৩৩ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেছিলোন, “পিএ সিদ্দিক তো হাসপাতালের মালিক ! এমন মন্তব্যের পরও টনক নড়েনি নাই পিএ সিদ্দিকের ।
জানা গেছে, ৩০০শয্যা হাসপাতালটি ৫০০শয্যায় উন্নীত করণের কাজ চলছে। সম্প্রতি উন্নয়ন কাজের জন্য অস্থায়ী একটি স্থাপনা প্রয়োজন পরে। আর সেই জায়গার জন্য নির্ধারণ করা হয় এই জায়গাটিকে যেখানে দীর্ঘদিন ধরে দাঁড়িয়ে ছিল বহু পুরনো এই গাছগুলো। বিকল্প জায়গার খোঁজ না করে পুরানো এতগুলো গাছ কেঠে ফেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে।
স্থানীয় বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন, সামাদ, আসলামসহ আরো কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ বলেন, অনেক আগে থেকেই নিয়মিত সকাল বেলা হাসপাতালে বেয়াম করতে আসি। হাসপাতালের প্রয়োজন ছাড়া ব্যাক্তি স্বার্থ হাসিল করতে এই গাছ যে কাটা হলো তার জবাব কে দিবেন ? এমপি সাহেব কি এই জবাব নিতে পারবেন পিএ সিদ্দিকের কাছ থেকে ? অভি এন্টাইপ্রাইজের নামে কত বছর ঠিকাদারী চালাচ্ছে এই তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী পিএ সিদ্দিক ? নারায়ণগঞ্জে এতো অপকর্ম করেও কি করে টিকে আছে এই চক্রটি ? সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের হুসিয়ারীর পরও এমন অপকর্ম করার সাহস পেলো কি করে পিএ সিদ্দিক ? তবে কি সেলিম ওসমানের সেই মন্তব্য “পিএ সিদ্দিক হাসপাতালের মালিক !” এটাই প্রমণিত হলো ?
এ সময় অনেকেই প্রতিবেদককে আরো প্রশ্ন করে বলেন, আপনারা সাংবাদিকরা ও তো এই অপরাধীদের বিষয়ে লিখতেই চান না মামলা ও হয়রানীর ভয়ে।
( এমন সকল জনরোষের বক্তব্য রেকর্ড রয়েছে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট এর দপ্তরে )
Discussion about this post