হোসেন মনির
আজ সকাল সাড়ে সাতটায় চাষাড়া মোড়ে হয়ে গেল পুলিশ পেশাজীবী ও অটোচালকদের অনানুষ্ঠানিক ত্রিপক্ষীয় জবাবদিহীতার মঞ্চ ! কিন্তু কোন সিদ্ধান্ত ছাড়া ওয়াক আউট করলেন বিভিন্ন পেশাজীবীরা কিন্তু থেকে গেলেন পুলিশ অফিসার বাশার সাথে থাকা পাঁচ-ছয়জন সোর্সনামক সন্ত্রাসী ও আটকে পড়া সংসার চালাতে আসা হতভাগ্য অটো চালকেরা !
চাষাড়া থেকে চিটাগংরোডের আশপাশে আছে ইপিজেডসহ নানান ধরনের শিল্প ও কলকারখানা। তাই সকাল সাতটার একটু আগে থেকেই শহরের দুই নং রেলগেট ও চাষাড়ার যানজট ভারী হয়ে ওঠে। তুমুল ব্যাস্ত হয়ে পড়ে সকাল সাড়ে সাতটা। চাষাড়া মোড়ে সুগন্ধ্যা বেকারীর সামনে প্রায় দশ জনের মতো নারী শ্রমিক তাঁদের গার্মেন্টেসের বাসের অপেক্ষায়। ইপিজেডসহ অন্যান্য শ্রমিক কর্মচারীরা অটো-মিশুকের অপেক্ষায়। চারিদিকে তাঁদের চাহনি কিছু অটো যাত্রী নিচ্ছে আর কিছু অটো জীবন নিয়ে পালাচ্ছে আর কিছু অটোর চালককে পুলিশের সোর্সরা টেনে হিচঁড়ে নামাচ্ছে যেভাবে মির্জা ফখরুল সরকারকে টেনে হিচঁড়ে নামাতে চায় !
দু-তিনটি অটো অথচ মানুষ তিরিশেক ! রাজপথে বেচারা অটোচালকরা কেউ নগদ পাঁচশত কেউবা এক হাজার টাকা সোর্সদের পকেটে ঠুকিয়েই অটো ছাড়িয়ে পুলিশ-সরকারকে বকা দিয়ে যাচ্ছে প্রকাশ্যে! ।
এদিকে পরিবহন অপ্রতুলতায় পেশাজীবী মানুষেরা আর সইতে পারেনি পুলিশ-সোর্সদের প্রকাশ্য অটো রিক্সা চালকদের সাথে টানা হেঁচড়া। তাই,পেশাজীবীরা একটু একটু করে এগিয়ে গেল পুলিশ অফিসার বাশারের কাছে।
তারা গিয়ে বললো,আপনারা যদি অটোরিক্সাকে ধরেন তাহলে সবাইকে ধরেন। একজনকে ধরবেন আরেকজনকে ধরবেন না-এটাতো হয় না। আইন সবার জন্য সমান। আর আপনারা যদি অটোরিক্সাকে ধরতে চান ধরেন তবে টাকা নিয়ে ছাড়ছেন কেন ? এ সময়ে প্রকাশ্য জনতার সামনে এভাবে চাঁদাবাজি নির্যাতন করলে সরকার কি বদনাম হয় না ? নাকি আপনি সরকারকে বদনাম করার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন ? এবার পুলিশ অফিসার বাশার বাংলার পাঁচ মার্কা চেহারা নিয়ে বললেন, হাইকোর্টের আদেশ আছে ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারী কর্মচারী বললেন,হাইর্কোটের আদেশ দেখানতো ? তিনি বাশার চুপ। একজন সিমেন্ট কারখানার কর্মচারী বললেন, এভাবে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি ও সরকারকে বদনাম করলে এসপি সাহেবকে জানাবো ? তিনি বাশার বললেন, এসপি সাহেব আমাকে পাঠিয়েছেন ! আরেক যাত্রী বললেন, চাঁদাবাজি করতে আপনাকে এসপি সাহেব পাঠিয়েছেন ? সাথে থাকা একজন সোর্স বললেন, তিনিও ভাগ পান! একথা শুনে আশেপাশে হাসির রোল পড়ে গেল আর কোন একটা চাপা ব্যথা নিয়ে চীর দুঃখী শ্রমজীবীরা গন্তব্যে যেতে অটো রিক্সারই অপক্ষোয় থাকলো হয়ত যে যার মতো গন্তব্যে চলেও গেলো কিন্তু পুলিশ অফিসার বাশার ও তাঁর সোর্সদের অমানবিকতা ও সরকারকে বদনাম করতে তাদের আচরণ কি থামবে বা কেউ থামাবে ?
Discussion about this post