কোথায় নেই অপরাধ ? আদালতে বিচার চলাকালীন সময়ে পেসকার পিয়নদর প্রায় সকলেই প্রকাশ্যেই ঘুষ লেনদেন করছে । যা দেখছেন বাদী বিবাদী ও বিজ্ঞ আইনজীবীদের অনেকেই । প্রকাশ্যেই জামিন পেতে আদালতের কেন্টিনে বসে চুক্তি করার বিষয় একেবারেই ওপেন সিক্রেট বলেও মন্তভ্য করেছেন আইনজীবীদের কেউ কেউ । এমন কালচারে অভ্যস্ত সকলেই । যা তেকে বেড়িয়ে আসা কঠিন ।
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
ডিবি পুলিশের কর্মকর্তা টাকার উপর ঘুমিয়ে পরার দৃশ্য যেমন ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে ঠিক তেমনি এসিড নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় আসামী রফিকুল ইসলাম টিপু, সাইফুল, সাগর, কাইয়ুম, রায়হান ওরফে রেহান, রাজিব মিলিত হয়ে আদালতের পেসকার শফিকের মাধ্যমে জামিন পেতে পাঁচ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে বলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে নারায়ণগঞ্জ আদালত পাড়ায় ।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের কেন্টিনে বসে দুপুরে পেসকার শফিক ও এসিড মামলার মূল আসামী রফিকুল ইসলাম টিপু এক সাথে মধ্যাহ্ন ভোজ করার পাশাপাশি আগামীকাল বৃহস্পতিবার ফতুল্লা থানায় এসিড নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়েরকৃত ১(১০)১৯ নম্বর মামলায় জামিন পেতে দরকষাকষি করার এক পর্যায়ে ৫ (পাঁচ) লাখ টাকা নির্দারণ করে পেসকার শফিক নিজেই ।
টাকা লেনদেনের পূর্ব মূহুর্তে খবর পেয়ে বাদী পক্ষের লোকজন আদালতের কেন্টিনে হাজির হলে দ্রুত পালাতে চেষ্টা চালায় পেসকার শফিক ও আসামী রফিকুল ইসলাম টিপু ।
বাদী পক্ষের লোকজনের চিৎকার ঘুষ লেনদেনের এমন ভিডিও তুলতে গেলে পালিয়ে যায় রফিকুল ইসলাম টিপু ও পেসকার সফিক ।
ঘটনার বিষয়ে মামলার বাদী সৈয়দ মোঃ শাওন জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আসামী রফিকুল ইসলাম টিপু ও তার সহযোগিরা বড় ভাই সৈয়দ মোঃ মুন্নাকে মারধর করে তার মুখমন্ডল যাতে না চেনা যায় সে জন্য এসিড দিয়ে ঝলসে দেয়া হয় ।
এমন ঘটনায় ফতুল্লা থানায় মামলা দায়েরের পর আসামীরা পলাতক থকাবস্থায় উচ্চ আদালত থেকে অন্তবর্তীকালীন জামিন গ্রহণ করে । উচ্চ আদালতের আদেশে আগামীকাল বৃহস্পতিবার জামিন শুনানীর দিন ধার্য করে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালত এবং বিশেষ ট্রাইব্যুণাল ২ ।
আসামী রফিকুল ইসলাম টিপু ও তার সহযোগিরা যাতে বৃহস্পতিবার জামিন লাভ করে সেলক্ষে আদালতের পেসকার শফিকের সাথে পাঁচ লাখ টাক চুক্তি করলে ঘুষ লেনদেনের খবর মূহুর্তের মধ্যে বাদীর কাছে পৌছে যাওয়ায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয় আদালত প্রঙ্গণে ।
আদালতের অনেক আইনজীবী নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে বলেন, আদালতের পেসকার পিয়নরা কি পরিমাণ অপরাধের সাথে জড়িত, তাদের খোজ ভালো করে সংগ্রহ করলেই রেড়িয়ে আসবে চাঞ্চল্যকর তথ্য । তারা দিনকে রাত আর রাতকে দিন করতে প্রয়োজনে বিজ্ঞ বিচারকদের নাম ব্যবহার করতে কোন কুণ্ঠাবোধ করে না । প্রকাশ্যেই এরা টাকা গ্রহণ করে আবার প্রকাশ্যেই আদালত চলাকালীন সময়ে মামলার নথির ভিতরে করে ঘুষ গ্রহণের দৃশ্য সকলেই দেখেন । আদালতের ভিতরে ছবি তোলার বিধান না থাকার সুযোগ নিয়েই পেসকার পিয়নরা বিচারকগনের নাম ব্যবহার করে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ ।
এমন প্রকাশ্য অপরাধ প্রতি মূহুর্তে ঘটলেও কেউ প্রমাণ করতে পারে না আদালতে ছবি তোলার বিধান না থাকায় । আদালতে ছবি তোলার বিধান থাকলে পেসকার পিয়নরা কি করে তার বিশাল ফিরিস্তি জানা যেতো ।
বৃহস্পতিবার ৭ নভেম্বর এসিড মামলায় আাসমীদের জামিন করাতে বুধবার (৬ নভেম্বর) আদালতে কেন্টিনে বসে দরকষাকষি ও পাঁচ লাখ টাকা নির্ধারনের বিষয়ে জানতে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালত এবং বিশেষ ট্রাইব্যুণাল ২ এর পেসকার শফিকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি আসামী রফিকুল ইসলাম টিপু নামের কোন আসামীকে চিনি না । আসামীর সাথে কথা বলতেছেন এমন ছবি পাওয়া গেছে, এমন প্রশ্নে পেসকার শফিক আরো বলেন, কত জন ই তো সারাদিন কথা বলে কে টিপু আর কে টিপু না তা বুঝবো কি করে । পাঁচ লাখ টাকায় জামিন করানোর চুক্তির বিষয়ে পেসকার শফিক এ বিষয়টি মিথ্যে বলে মন্তব্য করেন ।
Discussion about this post