হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং আইনশৃংখলা বাহিনীর দূর্বলতার সুযোগে বারবার হাসপাতালের দালাল চক্রের হাতে চিকিৎসা গ্রহণ করতে আসা অসুস্থ্য মানুষ নানাভাবে নাজেহাল ও হয়রানীর শিকারের খবর হরহামেশা শোনা গেলেও এবার সেই দালাল চক্র নিজেই জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সেজে ডেট সার্টিফিকেট (মৃত্যু সনদ) প্রদান করে ফের ওই সার্টিফিকেট সত্যায়িত করে ইন্সুরেন্সের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা করার পূর্বে আটক হয়েছে শান্ত (২২), আলামিন (২৫) ও হাসান (২৭) নামের তিন দালাল।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে এই তিন প্রতারককে আদালতে পাঠিয়েছে নারায়ণগঞ্জ থানা পুলিশ।
ঘটনার বিবরণে জাান যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত নার্স/ব্রাদার কিংবা এমএলএসএস দের কেউ কেউ ডিউটিকালীন সময়ে দালালদের হাতে হাসপাতালের সকল দায়িত্ব দিয়ে বিভিন্ন কক্ষে ঘুমিয়ে থাকেন। আর এই সময়ে এই দালালদের কেউ কেউ নিজেরাই কখনো নার্স (ব্রাদার) আবার নিজেরাই এমএলএসএস ছাড়াও নিজেরাই কখনো কখনো চিকিৎসক সেজে চিকিৎসা পত্রে ওষুধ লিখে দালালরাই রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ওষুধ কিনে এনে নিজেরাই ইনজেকশন পুশসহ সকল ধরনের অপকর্ম করে আসছিলো।
এমন অসংখ্য অপকর্মের পর গত বছর ৩ আগষ্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে সরকারি এই হাসপাতালের চিহ্নিত দালাল শান্ত ও তার সহযোগীদের খপ্পরে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন হানিফ নামের এক যুবক। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের দেওয়া প্রেসক্রিপশনে কোনো ইনজেকশনের নাম না থাকলেও ইয়ামিন শান্ত নামের চিহ্নিত এই দালালের দেওয়া ইনজেকশন পুশ করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু ঘটে ওই যুবকের।
এমন অসংখ্য ঘটনার পর এবার গত ১১ মার্চ সোমবার দুপুরে সেই দালাল শান্ত ও তার দউ সহযোগী একটি ডেট সার্টিফিকেট (মৃত্যু সনদ) সত্যায়িত করতে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক নাজমুল হোসেনের কাছে দ্বরস্থ হলে দেখতে পান এই সার্টিফিকেটে খোদ নাজমুল হোসেনের স্বাক্ষর ও সিল দেয়া রয়েছে। এই ডেট সার্টিফিকেট (মৃত্যু সনদ) তার দেয়া নয় এমন সন্দেহে দালাল শান্তকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে দালাল শান্ত নিজেই অপরাদের কথা স্বীকার করে জানায়, ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে এই ডেট সার্টিফিকেট (মৃত্যু সনদ) সে নিজেই তৈরী করেছে। এই ডেট সার্টিফিকেট (মৃত্যু সনদ) দিয়ে ইন্সুরেন্সের টাকার জন্য এমন কান্ড ঘটিয়েছে শান্ত ও তার সহাযোগিরা।
পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার পুলিশ ডেকে শান্ত (২২), আলামিন (২৫) ও হাসান (২৭) নামের তিন দালাল কে পুলিশের হাতে হস্তান্তরের পর তিন প্রতারককে পুলিশ আইনের ৫৪ ধারায় মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
এমন কান্ডে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহাদাৎ হোসেন বলেন, হাসপাতাল থেকে কোন অভিযোগ দায়ের না করায় তাদেরকে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়েছে । এখনো সুযোগ আছে হসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দিলে আমরা গ্রহণ করবো।
Discussion about this post