৯ ফেব্রুয়ারী (শুক্রবার) রাত ১১ টায় ব্যস্ততম জনাকীর্ণ নগরীর চাষাড়ায় মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদের অন্যতম সহযোগী এবং ঘনিষ্ঠ আত্মীয় রমু ও তার পরিবারের লোকজন ফতুল্লার মাসদাইর এলাকার মাদক ব্যবসাসহ আধিপত্য বিস্তারের বিরোধের জের ধরে আল-আমিন ওরফে দানিয়েলকে কুপিয়ে হত্যার পর লাশ নিয়ে বাড়ির সামনে ফেলে দিয়ে জানান দেয়, ‘এবার লাশ লইয়া যাও।’
এমন চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের পর সর্বত্র গুঞ্জন উঠে নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও তার পুত্র বিশিষ্ট ব্যবসায়ী অয়ন ওসমানের সাথে ছবি তুলে তা ফেসবুকসহ নানাভাবে প্রচার করে এবং তাদের নাম ব্যবহার করে খুনী অনিক ও তার পুরো পরিবার নগরীতে তান্ডব চালানোর সাহস পেয়েছে । খুনি রমু ও অনিক বাহিনী এমন কর্মকান্ডের নেপথ্যে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদের ভূমিকা নিয়েও ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে। এমন সমালোচনার পর রিয়াদ তার বিরুদ্ধে উঠা সমালোচনার কড়া প্রতিবাদ প্রদান করে এবং নানাভাবে হুমকি দিয়ে বেড়ানোর নামে দুবাই অবস্থান নেন।
এমন ঘটনা কুঁড়ি দিন না পেরেুতেই এবার সেই অয়ন ওসমানের সাথে ছবি তুলে এবং সেই ছবি ব্যবহার করে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের ফতুল্লা শাখার সভাপতির পদ ভাগিয়ে রমরমা মাদক বাণিজ্য শুরু করে রাকিবুল হাসান রকি নামের এক কুখ্যাত মাদক কারবারী। দীর্ঘদিন যাবৎ অয়ন ওসমানের সাথে ছবি তুলে এমন ঘৃন্য কর্মকান্ডের পর এবার ডিবি পুলিশের হাতে ধরা পরে সেই সভাপতি ও মাদক কারবারী রকি। পবিত্র সব ই বরাতের সন্ধ্যায় ফতুল্লার ভূইঘর থেকে রকি কে গ্রেফতার করলেও রহস্যজনক কারণে ঘটনাটি আড়ালে থেকে যায় গত কয়েক দিন।
নারায়ণগঞ্জ আদালতে দাখিল করা জেলা গোয়েন্দা শাখা (সিটিইউ) কর্তৃক ফতুল্লা থানায় দায়ের করা অভিযোগ হুবহু তুলে ধরা হলো :
“সবিনয় নিবেদন এই যে, আমি এসআই (নিঃ)/ সুকান্ত দত্ত সঙ্গীয় অফিসার এএসআই(নিঃ) মোঃ হান্নান মিয়া, কং/৬৯৬ মোঃ হাদিউজ্জামান, কং/১৪৯৩ মোঃ সোহেল রানা, কং/৯৮৫ মোঃ রুহুল আমিন, কং/১২৫৪ রমজান আলী, কং/১০৫৮ মোঃ কাজল মিয়া, সর্বকর্মস্থলঃ জেলা গোয়েন্দা শাখা (সিটিইউ), নারায়ণগঞ্জদের সহায়তায় ধৃত আসামী-১। রাকিব ওরফে রকি (২৮), পিতা-মৃত আকবর হোসেন, মাতা-মাকছুদা বেগম , সাং-দৌলতপুর কুতুবপুর, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়ণগঞ্জ এবং ধৃত আসামীর হেফাজত হইতে উদ্ধারকৃত আলামত ৯৯ (নিরানব্বই) পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট ও মূল জব্দ তালিকাসহ থানায় হাজির হইয়া এই মর্মে টাইপকৃত এজাহার দায়ের করিতেছি যে, উল্লেখিত অফিসার ও ফোর্স সহ জেলা গোয়েন্দা শাখা (সিটিইউ), নারায়ণগঞ্জ এর সাধারণ ডাইরী নং-২২৪, তারিখ-২৬/০২/২০২৪ খ্রিঃ মূলে নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা মডেল থানা এলাকায় মাদক উদ্ধারসহ বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে ইং ২৬/০২/২০২৪ খ্রিঃ ১৭.৪০ ঘটিকার সময় নারায়ণগঞ্জ ভূঁইগড় ষ্ট্যান্ড পশ্চিম পাশে অবস্থান করাকালে গোপন সূত্রে সংবাদ পাই যে, নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা মডেল থানাধীন দৌলতপুর সাকিনস্থ বালুর মাঠের দক্ষিণ পার্শ্বে কোনায় কথিপয় মাদক ব্যবসায়ী মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অবস্থান করিতেছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিয়া সংবাদের সত্যতা যাচাই ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে তাৎক্ষনিকভাবে উল্লেখিত অফিসার ও ফোর্সসহ রওয়ানা দিয়া ইং ২৬/০২/২০২৪ wLªt তারিখ ১৮.০০ ঘটিকার সময় বর্ণিত স্থানে পৌছাইলে পুলিশের উপস্থিতি টের পাইয়া উপরোক্ত আসামী কৌশলে পালানোর চেষ্ঠাকালে সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সের সহায়তায় ০১ (এক) জন ব্যক্তিকে আটক করতে সক্ষম হই। অতঃপর উপস্থিত সাক্ষী (ক) মেহেদী হাসান সাগর (৩৪), পিতা-মৃত আঃ মালেক, সাং-পশ্চিম নন্দলালপুর, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়ণগঞ্জ, মোবাইল নং-০১৯১১-৯৫৯১৪৬, (খ) আবির হোসেন (৩৩), পিতা-মৃত নূরুল ইসলাম, সাং-পশ্চিম নন্দলালপুর, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়ণগঞ্জ, মোবাইল নং-০১৯৪৭-৩৮৪৪৩১, (গ) কং/১০৫৮ মোঃ কাজল মিয়া, ‡Rjv †Mv‡q›`v kvLv (wmwUBD), নারায়ণগঞ্জ এর mnvqZvq a„Z আসামী রাকিব ওরফে রকি (২৮) এর দেহ তল্লাশী করাকালিন তাহার পরিহিত প্যান্টের সামনে ডান পকেট হইতে একটি সাদা পলিথিন জীপারে রক্ষিত ৯৯ (নিরানব্বই) পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট, যাহার ওজন-০৯.৯০ গ্রাম, মূল্য-(৯৯x৩০০)=২৯,৭০০/-(উনত্রিশ হাজার সাতশত) টাকা, আসামীর নিজ হাতে বাহির করিয়া দেওয়ার মতে উদ্ধারপূর্বক ইং ২৬/০২/২০২৪ খ্রিঃ ১৮.৩০ ঘটিকার সময় (পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক বাতির আলোতে) উপস্থিত সাক্ষীদের মোকাবেলায় বিধি মোতাবেক জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করি। জব্দ তালিকায় সাক্ষীদের স্বাক্ষর গ্রহন করি ও আমি নিজেও স্বাক্ষর করি। জব্দকৃত আলামত ও ধৃত আসামীকে নিজ হেফাজতে নেই। আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে উপরোক্ত নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে এবং আসামী র্দীঘদিন যাবত মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যবলেট বিক্রয় করিয়া আসিতেছে মর্মে স্বীকার করে। ধৃত আসামী রাকিব রকি (২৮) এর নিজ হেফাজতে ইয়াবা ট্যাবলেট রাখিয়া ২০১৮ সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) সারণির ১০ (ক) ধারার অপরাধ করিয়াছে তাহার বিরুদ্ধে বর্ণিত ধারায় নিয়মিত মামলা রুজু করা প্রয়োজন। ধৃত আসামীকে নিয়ে আরো মাদকদ্রব্য উদ্ধারের লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনা শেষে থানায় আসিয়া এজাহার দায়ের করিতে বিলম্ব হইল।”
Discussion about this post