দীর্ঘ প্রায় অর্ধ যুগ যাবৎ নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার নদী বেষ্টিত চরাঞ্চল চর কিশোরগঞ্জ এলাকায় কয়েকটি রিসোর্ট, রেস্তোরাসহ বিশাল হাট বাজার স্থাপন করে বিশাল বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে মুন্সীগঞ্জ জেলার স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। আর এই চক্রের হোতারা হুংকার দিয়ে বলে বেড়াতো সোনারগাঁ থানা পুলিশ, উপজেলা অফিস আর নারায়ণগঞ্জ বিআইডব্লিউটিএ এর কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
২০২২ সালের ৯ নভেম্বর এই চর কিশোরগঞ্জ নৌরুটে ফেরি সার্ভিস চালু করেন মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস । এর কয়েক বছর পূর্ব থেকেই এই চর কিশোরগঞ্জ নিয়ন্ত্রণ করতো প্রভাবশালী চক্র। এক দিকে নারায়ণগঞ্জ ৩ আসনে অপরদিকে মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য পরিবর্তন হওয়ার ফলেই এই অভিযান হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভূক্তভোগিদের উচ্ছেদের শিকার অনেকেই।
ক্ষমতাধর সেই সংসদ সদস্য এবার না থাকায় সোনারগাঁয়ে মেঘনা নদী দখলের অভিযোগে চারটি রিসোর্ট, রেস্তোরাসহ ৩৫ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে বিআইডব্লিউটিএ’র মেঘনাঘাট নদীবন্দর কর্তৃপক্ষ।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোসাম্মৎ তাসলিমা আকতারের নেতৃত্বে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা এগারোটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত উপজেলার চর কিশোরগঞ্জ ফেরিঘাট ও আশপাশের এলাকায় এই অভিযান পরিচালিত হয়।
বিআইডব্লিউটিএ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. তাসলিমা আকতার সময় সংবাদকে বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে মেঘনা নদী অবৈধ দখলমুক্ত করতে আমরা দুই দিনব্যাপী উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছি। আজকে প্রথম দিন আমরা সোনারগাঁয়ের চর কিশোরগঞ্জ ফেরিঘাট ও আশপাশের এলাকায় রিসোর্ট, রেস্তোরা, দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, জেটি ও ড্রেজার সহমোট ৩৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে সক্ষম হয়েছি। তবে আমাদের অভিযানে বাধা সৃষ্টি ও সরকারি সম্পদ ভাঙচুর করায় দুজনকে আটক করে তাদের ত্রিশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বৈদ্যেরবাজার এলাকায় আমাদের অভিযান চলবে।
বিআইডব্লিউটিএ’র মেঘনাঘাট নদীবন্দরের ভারপ্রাপ্ত উপ পরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম আমন্ত্রণ করে নিয়ে যাওয়া গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, উচ্ছেদ অভিযান আমাদের নিয়মিত ও চলমান কার্যক্রমের একটি অংশ। নিয়ম মেনেই আমরা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছি। মেঘনা নদীর দুই তীরে যতগুলো অবৈধ স্থাপনা আছে সবগুলো আমরা পর্যায়ক্রমে উচ্ছেদ করবো। যতো বাধাই আসুক আমরা আমাদের উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রাখবো। দখলদারদের কাউকে আমরা ছাড় দেবো না।
Discussion about this post