বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অর্থাৎ বিকেএমইএ এর সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান শিল্পাঞ্চল নারায়ণগঞ্জের পরিবেশের উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে কঠোর ভাষায় বলেছেন, “এমন কোন কোন ফ্যাক্টরি আছে যেখানে ইটপি ছাড়া চলছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো কোথায় আছে সেটা দেখতে চাই সাংবাদিকদের মাধ্যমে। সাংবাদিকরা দেখান যে এখানে ইটিপি ছাড়া এ ফ্যাক্টরিটা চলছে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে ওই ফ্যাক্টরিটা বন্ধ হয়ে যাবে। কোন অবস্থাতে পানিকে নষ্ট করা যাবে না।”
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) চাষাঢ়ায় বিকেএমইএ ভবনে এমন বক্তব্যের পর অনেকেই সাধুবাদ জানালেও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ সোনারগাঁ আর বিশেষ করে সদর উপজেলার ফতুল্লা ও সদর এলাকায় অসংখ্য ডাইং থেকে অনবরত নির্গত হচ্ছে বিষাক্ত ক্যামিকেল । যা মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আর সেলিম ওসমানের এমন মন্তব্যের একদিনের মধ্যে বিশ্বের ১১০টি শহরের মধ্যে আজ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বায়ু সবচেয়ে বেশি দূষিত। বিশ্বের ওই শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো বায়ু বিরাজ করছে কানাডার ভ্যানকুভারে।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল সোয়া ৮ টায় বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (আইকিউএয়ার) সূচক থেকে এ জানা গেছে।
আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী ২৪৭ স্কোর নিয়ে তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে ঢাকা। অর্থাৎ আজ ঢাকার বায়ুর মান ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ঘানার আক্রা। এই শহরের স্কোর ২০১ অর্থাৎ সেখানকার বায়ুর মানও ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’।
রাজধানী ঢাকার বায়ুর মান দুর্যোগপূর্ণ ছিল গত বছরের জানুয়ারিতে, যা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়।
তালিকায় তিন নম্বরে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর। এই শহরের স্কোর ১৯৭ অর্থাৎ সেখানকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’। এর পরের তিনটি অবস্থানে রয়েছে ভারতের তিনটি শহর। চারে থাকা ভারতের দিল্লির স্কোর ১৯০, পাঁচে থাকা মুম্বাইয়ের ১৮৮ এবং ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা কলকাতার স্কোর ১৮৭। এই তিনটি শহরের বায়ুই আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’।
আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ সবচেয়ে ভালো বায়ু বিরাজ করছে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ভ্যানকুভারে। শহরটির দূষণ মাত্রার স্কোর মাত্র ৮।
খোজ নিয়ে আরো জানা যায় নারায়ণগঞ্জে প্রায়, ২০২২ সারের ১ মার্চ রাজধানীসহ আশেপাশের পরিবেশ রক্ষায় উচ্চ আদালত ৩১৯ টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দেয়ার আদেশ দেন । ১৫ দিনের মধ্যে এই ইটভাটা বন্ধ করতে কঠোর আদেশ দিলেও কে শুনে কার কথা ? উচ্চ আদালতের ওই আদেশের প্রায় ২ বছর অতিবাহিত হলেও নারায়ণগঞ্জের পরিবেশ অধিদপ্তরের অসাধু উচ্ছিষ্ঠভোগী কর্মকর্তাদের নিয়মিত মাসোয়ারা দিয়ে নারায়ণগঞ্জসহ সর্বত্রই চলছে পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিযোগিতা। নিয়মিত মাসোয়ার ছাড়াও অনৈতিক কর্মকান্ডে অধিক অর্থ প্রয়োজন পরলেই পরিবেশ াধিদ্পতেরর পিয়ন থেকে শুরু করে জেলার শীর্ষ কর্মকর্তা উপ পরিচালক পর্যন্ত সকলেই যেন অভিযান নামক নানা নাটক শুরু করে । আরে ওই নাটক মঞ্চায়নের পর পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে কোন ধরণের প্রমাণ যাতে না থাকে তাই অত্যান্ত কৌশলে মোটা অংকের বাণিজ্যের চিত্র যেন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
২০২২ সালের ৯ই ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ফতুল্লার ইসদাইর এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পরিবেশ দূষণসহ ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কারখানা পরিচালনার অভিযোগে মজুমদার ওয়াশিং, বি এল ওয়াশ, এ এফ লন্ড্রি, সোনালী ডাইং, লোকনাথ ডাইং এবং এন এ ডাইংয়ের বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় । এর পর এই কারখানাগুলি আবার চালু হলো কি করে ? মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই রাতারাতি কি তারা ওই কারখানায় কি ইটিপি স্থাপন করেছে ? কে রাখবে এই খবর ? এমন প্রশ্ন করে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের নাারয়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ পরিচালকসহ ডিপিডিসি ও তিতাসের স্থানীয় কর্মকর্তারাদের পৃথকভাবে ম্যানেজ করেই পরিবেশ ধ্বংসসহ গ্যাস ও বিদ্যুৎ চুরির মধ্যে এখনো চলছে ওই অবৈধ কারখানা। এভাবেই পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হলেও অসাধু কর্মকর্তাদের কারণেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না পরিবেশ।’
Discussion about this post