দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য কিছুটা পিছিয়ে ২১ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৮তম আসর। মেলা শুরুর একদিন আগেও চলছে স্টল বানানোর কাজ। কিন্তু বাণিজ্য মেলায় এবায় দেখা মিলছে না নান্দনিক দ্বিতল সব স্টলের।
প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিত ও নানা বর্ণিল আয়োজনে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার কারণে রূপগঞ্জের রূপ আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পিছিয়ে যাওয়া ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার পর্দা উঠল অবশেষে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সকালে মেলার ২৮তম আসরের উদ্বোধন করেন। গত দুই আসরের মত এবারও পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের এখন আর রাজনৈতিক না, কূটনীতি হবে অর্থনৈতিক। আমাদের প্রত্যেকটা কূটনৈতিক মিশনে এই মেসেজ দিয়েছি। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার কীভাবে আমরা ঘটাব, সেটার উপরে আমাদের কূটনৈতিক মিশনগুলো কাজ করছে, কাজ করবে। সেটাই আমরা চাচ্ছি।”
রপ্তানি বাড়াতে পণ্যের বৈচিত্র্য আনা এবং নতুন বাজার খোঁজার বিষয়ে তাগিদ দেন সরকারপ্রধান।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস-চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান।
নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুব আলমও উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।
গত দুই আসরের মত এবারও পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
সাধারণত বছরের প্রথম দিন মেলা শুরু হলেও এবার সংসদ নির্বাচনের কারণে নির্ধারিত সময়ের ২০ দিন পিছিয়ে মেলা শুরু হল। দেশের পণ্য প্রদর্শনীর সবচেয়ে বড় এ আসরের আয়োজন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবি।
বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, হংকং, সিঙ্গাপুর, নেপালসহ বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করছেন এবারের মেলায়। প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন, স্টল, রেস্তোরাঁ মিলিয়ে ৩৫১টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা গতবছর ৩৩১টি ছিল
এবারের মেলায় স্টলের সংখ্যার পাশাপাশি বেড়েছে দর্শনার্থীদের প্রবেশমূল্যও। গত বছর সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য মেলায় প্রবেশমূল্য ৪০ টাকা এবং ১২ বছরের কম বয়সিদের জন্য ২০ টাকা ছিল। যা এবার বেড়ে যথাক্রমে ৫০ টাকা ও ২৫ টাকা করা হয়েছে।
মেলার প্রবেশদ্বার তৈরি করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আদলে। প্রবেশ গেইটের সামনের দিকে পদ্মা সেতু, বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল, মেট্রোরেলের আদলে প্রতিচ্ছবি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া মেলায় থাকছে বঙ্গবন্ধু কর্নার।
প্রদর্শনী কেন্দ্রের ১৪ হাজার ৩৬৬ বর্গমিটার আয়তনের দুটি হল ছাড়াও সামনে ও পেছনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন, স্টল নির্মাণ করা হয়েছে।
মাসব্যাপী এ মেলা আগের মতোই সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। আর সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেলা চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত।
মেলায় দর্শনার্থীদের যাতায়াতের জন্য রাজধানীর ফার্মগেট ও কুড়িল বিশ্বরোড থেকে সরাসরি মেলা প্রাঙ্গণে আসার জন্য বিআরটিসির বাসের ব্যবস্থা হয়েছে। মেলায় আসতে ফার্মগেট থেকে ৭০ টাকা ও কুড়িল থেকে ৩৫ টাকা মূল্যের টিকিট কাটতে হবে দর্শনার্থীদের।
গত বছর মেলার শেষদিনে সেই সময়ের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী জানিয়েছিলেন, মাসব্যাপী মেলায় ৩০/৩৫ লাখ দর্শনার্থীর অংশগ্রহণে ১০০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে। এছাড়া পাওয়া গেছে ৩০০ কোটি টাকার রপ্তানি আদেশ।
এ বছর দর্শনার্থী ও লেনদেন দুটোই বাড়বে বলে আশা আয়োজকদের।
Discussion about this post