নেশার অর্থ আদায়ে কি না করতে পারে একজন নেশা গ্রহণকারী ? নেশার টাকার জন্য খুন, ছিনতাই, চুরি, ডাকাতিসহ সকল ধরণের অপরাধই করে নেশায় আশক্তরা। এবার একজন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণী নেশার অর্থ যোগার করতে ব্লাকমেইলিংযের আশ্রয় নিয়েছেন। এমন প্রমাণ মিলেছে আবরো। অশ্লীল ভিডিও ধারণ এবং ব্ল্যাকমেইলের ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায়ের অভিযোগে ফতুল্লা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সামাজিকতার কারণে এই তরুনীর নাম পরিচয় প্রকাশ করতে অনীহা প্রকাশ করেছে সিআইডি।
বুধবার (২১ জুন) এসব তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান।
আজাদ রহমান বলেন, মঙ্গলবার (২১ জুন) নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার থেকে এসব কাজে ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল ফোন ও ভিডিও কন্টেন্ট উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, ওই তরুণী একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র শিক্ষার্থী। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিভিন্ন নেশায় জড়িয়ে পড়ে সে। এক সময় ড্যান্স ক্লাবের সদস্য, করতেন ডিজে পার্টিও। নেশার টাকা জোগাড় করতে বিভিন্ন ভুয়া পরিচয়ে ফেসবুক আইডি খুলে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান, প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাসহ রাজনীতিবিদদের টার্গেট করে বন্ধুত্ব করতেন। এরপর ভিডিও কলে সুকৌশলে একান্ত মুহূর্তের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ধারণ করে দাবি করতেন বিশাল অঙ্কের টাকা। টাকা দিতে না চাইলে ফেসবুকে সেই ছবি ও ভিডিও দেওয়ার হুমকি দিতেন।
ওই তরুণী নিজেকে আকর্ষণীয় ভাবে উপস্থাপন করতেন। মুহূর্তেই পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব ও অনলাইনে ঘনিষ্ঠ করে তুলতেন নিজেকে। প্রেমের ফাঁদে ফেলে তার শিকারে পরিণত করতে খুব বেশি সময় নিতেন না। ভিডিওকলে নিয়মিত সংযুক্ত রাখে তাদের। সুকৌশলে একান্ত মুহূর্তের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ধারণ করে নেয় সে।
এরপর একান্ত ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে তাদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে নিয়মিত ব্ল্যাকমেইল করতে থাকেন। তার ফাঁদে পড়া লোকদের কাছে বিশাল অঙ্কের টাকা দাবি করে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে এসব ছবি ভিডিও তাদের আত্মীয়-স্বজনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দিতে থাকে। বিগত কয়েক বছর ধরে অসংখ্য লোকজনের সঙ্গে এসব অনৈতিককাজ করে বিশাল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
কিন্তু শেষরক্ষা হলো না তার। এক ভুক্তভোগীর করা মামলায় মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের একটি বিশেষ টিম।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন প্রতারণাসহ সব অপকর্মের কথা অকপটে স্বীকার করেছে। মূলত নেশার টাকা জোগাড় করতেই এ অনৈতিক পথ বেছে নেয়। গ্রেফতারের পর তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় প্রতারণা এবং ব্ল্যাকমেলিংয়ের কাজে ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল ফোন। এতে অসংখ্য লোকজনকে ব্ল্যাকমেইল করার তথ্য পাওয়া যায়। বিকাশ নগদের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার আলামতও পাওয়া যায়।
রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান সিআইডির এ কর্মকর্তা।
এমন ঘটনা ধামাচাপা দিতে ফতুল্লার ওই তরুনীর পরিবার নানা ভাবে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে । একই সাথে ভূক্তভোগিদের সাথে আপোষ করারও চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা যায় ।
Discussion about this post