নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে অবস্থিত লক্ষী নারায়ন কটন মিল অভ্যন্তরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শতবর্ষী মন্দির ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে নিট কনসার্ন গ্রুপের বিরুদ্ধে।
শনিবার (১৭ জুন) রাতে এই মন্দির ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।
এদিকে মন্দির ভেঙে ফেলার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে যান নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ এবং হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ। তারা এ ঘটনাকে বর্বরোচিত ও ন্যাক্কারজনক উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে এখানে মন্দির পুনঃ স্থাপনের দাবি জানান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন অভিযোগ করে বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির রাতের আঁধারে বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে। নিট কনসার্ন গ্রুপের লোকজন মন্দিরে প্রবেশের রাস্তাটাও বন্ধ করে দিয়েছে। মন্দিরের গাছগুলো কেটে ফেলেছে, মন্দিরে প্রবেশ করতে ভক্তবৃন্দকে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি ইতিপূর্বে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু আমরা কোন প্রতিকার পাইনি উপরন্তু আমাদের মন্দির রাতের আঁধারে ভেঙে ফেলেছে। আমরা এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের মাননীয় সাংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এ সময় ভাঙ্গা মন্দিরের ধ্বংসস্তূপের ভিতর দেবতার ছবি টানিয়ে দেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ এবং নিয়মিত পূজা অর্চনা করার নির্দেশ দেন। সেই সাথে মন্দিরে প্রবেশের গেটটিও খুলে দেওয়ার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করেন অন্যথায় নারায়ণগঞ্জের হাজার হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এদিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন নিট কনসার্ন গ্রুপের পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং এই মন্দির ঝড়ে ভেঙে গেছে বলেন দাবি করেন ও খুব দ্রুত তা মেরামত করে পুনঃ স্থাপন করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
পরবর্তীতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক (সার্কেল) নাজমুল হাসান। তিনি পুলিশ সুপারের নির্দেশে মিল কর্তৃপক্ষকে সব ধরনের কাজ বন্ধ রাখার জন্য বলেন।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব শিখন সরকার শিপন, জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রদীপ দাস, সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত মন্ডল, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব সুশীল দাসসহ সনাতন ধর্মাবলম্বী।
Discussion about this post