নারায়ণগঞ্জ যেন মগের মুল্লুক। এমনটি আবারো প্রমাণ করলো প্রতারক মো. সাইদুল ইসলাম শাহীন। দেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলা নারায়ণগঞ্জে সকল ধরণের অপরাধীরা অপরাধের ঘাঁটি হিসেবে এই নগরীকে ব্যবহার করেই যাচেছ। কোথায় নেই অপরাধ ?
পুলিশকে ম্যানেজ করে যা খুশি তা করা যায় ! সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চাঁদাবাজদের ম্যানেজ করে অবৈধ ক্লিনিক ডায়াগণষ্টিক সেন্টার চালানো যায় ! জেলা হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ে শত শত কোটি টাকা লেনদেন হলেও কোন অর্থই ঘুষ ছাড়া ছাড় পায় না। আবার কোর্ট কাচারীতে ঘুষ দিলে সব অনৈতিক কার্য্য সম্পাদনের গুঞ্জন রয়েছে নগরী জুড়ে। এতো গুঞ্জনের মধ্যেও কোথায় নেই অপরাধীদের তৎপড়তা ?
নগরীর পুলিশ সেন্টারের সামনে বসে মাদক সেবীরা প্রকাশ্যেই মাদক সেবন করেই যাচ্ছে । দেখার যেন কেউ ই নাই। আইনশৃংখলা বাহিনীর নাকের ডগায় থানা পুলিশের সামনেই কোটি কোটি টাকার চোরাই সূতার বেচাকেনা ঘটছে প্রকাশ্যেই। এমন করেই চোরাই তেলের ব্যবসা, চোরাই গমের ব্যবসাসহ নানা অপরাদ করে একেকজন অপরাধী যেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছেন। আবার নগরীর প্রতিটি এলাকায় আইনশৃংখলা বাহিনীকে নিয়মিত মসোয়ারা দিয়ে ফুটপাত দখলসহ নানা অপরাধের রামরাজত্ব চলছেই । নারায়ণগঞ্জ যেন লুটপাটের আখড়া ।
কোন কোন আইনশৃংখলা বাহিনীর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজ দপ্তরে বসেই পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে মাদকের আসর যেন নিত্য দিনের ঘটনা বলেও মন্তব্য করেছেন ওই কর্মকর্তার অত্যান্ত ঘনিষ্ঠ সূত্র । যিনি আশি (৮০) লাখ টাকার বিনিময়ে পোষ্টিং পেয়েই এলাকায় যা খুশি তাই করে বেড়চ্ছেন।
নির্লজ্জ তেলচোর, গম চোর, সূতা চোরদের মতো রাতারাতি প্রতারনা করে কোটি কোটি টাকা কামাতে ডাক্তার সেজে বসেছিলেন প্রতারক মো. সাইদুল ইসলাম শাহীন । নারায়ণগঞ্জে এতো অপরাধের মধ্যে কে রাখবে তার খবর ? এমন ধারণার পরেও ধরা পরতে হলো ওই এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয় দানকারী প্রতারক কে। সেই প্রতারকের সনদ না থাকলেও নিজেকে পরিচয় দিতেন একজন চিকিৎসক। সেই সঙ্গে নিয়মিত (মা ও শিশু, চর্ম ও যৌন) রোগীও দেখতেন। লিখে দিতেন ব্যবস্থাপত্র। অবশেষে তিনি ধরা পড়েছেন। রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করায় তাকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
নারায়ণগঞ্জ শহরের গ্রিন লাইফ ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারে অভিযান চালিয়ে মো. সাইদুল ইসলাম শাহীন নামের ওই ভুয়া চিকিৎসককে এ সাজা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রোববার (১১ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত আরা খানমের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
আদালত সূত্র জানায়, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) এক কর্মকর্তা ছদ্মবেশে গ্রিন লাইফ ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশনে মো. সাইদুল ইসলাম শাহীনের কাছে চিকিৎসা নিতে যান। তিনি গত কয়েকমাস ধরে চিকিৎসা নিতে থাকেন। একই সঙ্গে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখেন। সবশেষ আজ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বুঝতে পারেন তিনি একজন ভুয়া চিকিৎসক।
পরে বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়। সেই সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযুক্তকে এক বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একইসঙ্গে গ্রিন লাইফ ডায়াগনস্টিক অ্যন্ড কনসালটেশনকে ৫০ হাজার জরিমানা করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুশরাত আরা খানমের পক্ষে প্রসিকিউশন ডা. একেএম মেহেদী হাসান বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত মো. সাইদুল ইসলাম শাহীন নিজের অপরাধ স্বীকার করেছেন। তাকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে চিকিৎসক নিয়োগে কোনো কাগজপত্র দেখাতে না পারায় গ্রিন লাইফ ডায়াগনস্টিকের মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
Discussion about this post