দূর্ণীতির আখড়া হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের পিয়ন থেকে শুরু করে শীর্ষ কর্তাদের বিরুদ্ধে যে যেভাবে পারেন সেই পন্থায় ঠিকাদারদের সাথে আঁতাত করে লুটপাটের মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছেই অবিরামভাবে।
ঠিকাদারদের সাথে আঁতাত করে “(চোরে চোরে মাসতুতো ভাই)” এর মতো করে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের পিয়ন থেকে শুরু করে শীর্ষ কর্তাদের প্রায় সকলেই যেন একেক জন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন । আর এমন অপকর্ম নির্বিঘ্নে পারিচালিত করতে নারায়ণগঞ্জের একজন শীর্ষ নেতাকে প্রতিটি টেন্ডারের আগে প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ঘুষ দিয়ে স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ রেখেই চলে উন্নয়নের নামে লুটপাট। ঠিকাদারদের সাথে এমন ভাগবাটোয়ারা ছাড়াও সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমির উপর যত ধরণের স্থায়ী অস্থায়ী স্তাপনা আছে তা তেকে নিয়মিত ভাড়গার আকারে চাঁদাবাজি করতে একাধিক চক্র নিয়মিত চাঁদা আদায় করে ই যাচ্ছে সওজ এর অসাধু কর্তাদের নামে । এতো অপকর্ম করেও তৃপ্ত হয় না নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অসাধু এই চক্র।
এবার একজন সামান্য নার্সারীর ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মাস্তানীর স্টাইলে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে চাঁদাবাজি করতে অভিযান চালিয়েছে সরকারী কর্মকর্তা প্রকৌশলী শাখাওয়াত হোসেন শামীম।
জানা যায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক প্রকৌশলী ৫০ হাজার টাকা ঘুষ চাওয়ায় তার বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এক নার্সারি ব্যবসায়ী।
টাকা না দিলে নার্সারি ব্যবসা করতে দেয়া হবে না বলে অফিসে ডেকে নিয়ে নার্সারী ব্যবসায়ীকে শাসিয়েছেন ওই প্রকৌশলী।
ভুক্তভোগী নার্সারি ব্যবসায়ী মতিউর রহমান সুমন এই লিখিত অভিযোগ দখিল করেন। সে সাইনবোর্ড এলাকায় মৃত মহব্বত আলীর ছেলে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই প্রকৌশলী।
লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, গত ৪ঠা জুন সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাব-ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়ার মো. শাখাওয়াত হোসেন শামীম ৪/৫টি মোটর সাইকেলযোগে মতিউর রহমান সুমনের নার্সারিতে ঢুকে নার্সারীর কাজে বাধা এবং অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে নার্সারি সরিয়ে নিতে বলে। কিন্তু সুমনের দাবি নার্সারির ঘরটি তার নিজস্ব জমিতে করা হয়েছে। এ সময় সুমন মন্ত্রী মহোদয়ের বক্তব্যের রেফারেন্স দিয়ে ইঞ্জিনিয়ার মো. শাখাওয়াত হোসেন শামিমকে বলেন, খালি জায়গায় গাছ রোপণ করার নির্দেশ আছে। নার্সারির গাছের চারাগুলি আপতত এই জায়গায় রাখলে আপনার কোনো ক্ষতি হবে না এবং আমি কোনো জমির ক্ষতিসাধন করবো না এই অঙ্গীকার করি।
এ সময় ইঞ্জিনিয়ার শাখাওয়াত হোসেন শামিমের সঙ্গে থাকা চিহ্নিত সন্ত্রাসী নজুর ছেলে জুয়েল (৩৫) সুমনের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করতে চায় এবং ইঞ্জিনিয়ার শামিম নিজেও সুমনকে পিটিয়ে মেরে ফেলবে বলে হুমকি-ধমকি দেয়। পরবর্তীতে সুমনকে ইঞ্জিনিয়ার শামিম তার সরকারি অফিসে দেখা করার কথা বলে চলে যায়। তৎক্ষণাৎ সুমন অফিসে দেখা করতে গেলে ইঞ্জিনিয়ার শামিম সুমনের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে এবং অফিস থেকে বের হওয়ার সময় তার এসও সুমনকে বলে যে, ‘টাকা না দিলে স্যারের মাথা ঠাণ্ডা হবে না, টাকা নিয়ে আসেন, তারপরে নার্সারী করেন, অন্যথায় ওখানে কোনো নার্সারির চারা অক্ষত রাখতে পারবেন না, আমরা ভেকু দিয়ে আপনার সমস্ত নার্সারি উচ্ছেদ করে দেবো।
আপনার সময় ৭ দিন, টাকা নিয়ে আসেন, তারপর ব্যবসা করেন, আমাদের কোনো আপত্তি নাই।
এ ঘটনায় ইঞ্জিনিয়ার শামিম ও তার নিজস্ব গুণ্ডা বাহিনীর কর্মকাণ্ডে আতঙ্কিত হয়ে গত ৭ই জুন পুলিশ কমিশনার, ডিএমপি, ঢাকা এর বরাবরে একটি অভিযোগ দায়ের করে সুমন। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সওজ’র প্রকৌশলী শাখাওয়াত হোসেন শামিম সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটি সত্য নয়। সরকারি জমি লিজ না পেয়ে সে মিথ্যা বলতেছে। আমি কারও কাছে টাকা দাবি করিনি।
নাম প্রকাশ না কার অনুরোধে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্ভরশীল একটি সূত্র নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, এই অফিসে কি ঘটে তা না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। একেকজন সরকারী কর্মকর্তা কর্মচরাী যেন একেকটি অপরাধের মহাজন। অপরাধ করার ক্ষেত্রে এদের ভয় বলতে কিচ্ছু নাই । কোন খাতে কত ঘুষ তা নির্ধারণ করা আছে পূর্ব থেকেই । বিরামহীন ভাবেই চলেছে দূর্ণীতি। ঘুষ না দিলে যেমন কোন ফাইল নড়ে না আবার ঘুষ না দিলে সড়কের পাশে কোন দোকানী বা দখলদার বসতে পারে তার ক্ষমতা কারোর ই নাই। ফিল্মী স্টাইলে শুধু কি চাঁদাবাজি, এরা সকল ধরণের অপরাধ করেই যাচ্ছে বীরের বেশে । এ যেন জোটবদ্ধ অপরাধের আখড়া। এমন অপরাধের তথ্য সকলের জানা থাকলেও ভাগবাটোয়ার হিসাব ‘টপ টু বটর’ হয় বলেই কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না এতো অপরাধের বিরুদ্ধে । আর অপরাধী এই চক্র যেন একেকজন দূর্ণীতির সর্দার ।
Discussion about this post