নারা কেলেংকারীর হোতা হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় বাদীর ছেলেসহ দুজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালত।
মামুনুল হকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন জানান, সাক্ষী আব্দুর রহমান বলেছে তার বাবার সঙ্গে তার মা জান্নাত আরা ঝর্ণার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপর তার মা মামুনুল হককে বৈধ ভাবে বিয়ে করেন। এতে করে স্পষ্ট ভাবে প্রমাণ হয় মামুনুল নির্দোষ। এ মামলা থেকে তিনি খালাস পাবেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) রকিবুদ্দিন আহমেদ (রকিব) চৌধুরী বলেন, বাদী জান্নাত আরা ঝর্নার ছেলে আব্দুর রহমান ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী সাংবাদিক এনামুল হক বিদ্যুৎ সাক্ষীতে বলেছে মামুনুল হক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জান্নাত আরা ঝর্ণাকে হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান সাংবাদিকেদের বলেন, সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়েছিল মামুনুল হককে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। একইসঙ্গে আদালতপাড়া জুড়ে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে নেওয়া হয়।
২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় মামুনুল হকের উপস্থিতিতে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার সাক্ষ্য নেন আদালত। একই সঙ্গে ওই বছরের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেওয়া হয়।
২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে তাকে ঘেরাও করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।
ঘটনার পর থেকেই মামুনুল হক মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় অবস্থান করে আসছিলেন। এ সময় পুলিশ তাকে নজরদারির মধ্যে রাখে। এরপর গত ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় মামুনুলকে। পরে এই ঘটনায় ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। তবে ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক।
পরবর্তী সাক্ষীর জন্য আগামী ৮ আগষ্ট দিন ধার্য করেছে আদালত।
Discussion about this post