জোড়ালো অভিযোগ রযেছে কাঁচপুর হাইওয়ে কার্যালয়ে যিনি ওসির দায়িত্বে আসেন তাকে মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে এবং প্রতি মাসে গাজিপুর হাইওয়ে রিজিয়নে নিম্নে প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা মাসোয়ারা প্রদান করবে বলে প্রতিজ্ঞা করে চাকরী করতে হয়।
আর এই বিনিয়োগকৃত উৎকোচের অর্থসহ প্রতিমাসে মাসোয়ারা আদান-প্রদানের অর্থ আদায় করতে হাইওয়ের ওসিকে পাগলের মতো “আন ছাড় খা !” এর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হয়। পরিবহণ খাতে চাঁদাবাজির নৈরাজ্য ছাড়াও হাইওয়ের পাশে সকল দোকান বাজার থেকে মোটা অংকের মাসোয়ারা যেন নিত্য দিনের কান্ড ।
অথচ হাইওয়ে পুলিশের প্রধান হিসেবে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী দায়িত্ব গ্রহণ করেন অতিরিক্ত আইজিপি শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম (বার)। যিনি নারায়ণগঞ্জে অত্যান্ত সুণামের সাথে পুলিশ সুপার হিসেবে কাজ করে গেছেন। নারায়ণগঞ্জে শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম (বার) এসপি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে কোন দূর্ণাম ছিলো না এই চৌকস কর্মকর্তার । অথচ বর্তমান প্রেক্ষপটে গাজীপুরের হাইওয়ের এসপি অফিসে প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকাসহ প্রতিটি টেবিলে টেবিলে উৎকোচ দিতে হয় বাধ্য হয়ে। এমন প্রথা দীর্ঘদিনের বলে জানয়েছেন কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের একজন কর্মকর্তা ।
মাস শেষে মাসোয়ারা প্রদান করায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত দাবড়ে বেড়াচ্ছে থ্রি-হুইলার, সিএনজি ও অটোরিকশা। হাইওয়ে পুলিশকে ‘ম্যানেজ’ করেই মহাসড়কে সরকারের নিষিদ্ধ এসব যানবাহন চলাচল করছে বলে দাবি চালকদের।
২০১৫ সালের ১ আগস্ট থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় দেশের ২২টি মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, অটো-টেম্পো, নসিমন, করিমনসহ সব ধরনের অযান্ত্রিক পরিবহন চলাচল নিষিদ্ধ করে। তিন চাকার এসব যানবাহনকে মহাসড়কে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করে উচ্চ আদালতও বন্ধের নির্দেশ দেন।
আদালত জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, হাইওয়ে পুলিশকে এসব অবৈধ যানবাহন যেন মহাসড়কে চলতে না পারে সে জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন। উচ্চ আদালত ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পরও কিছুদিন হাইওয়ে থানা পুলিশ এসব অবৈধ যান চলাচল কঠোরভাবে বন্ধ করলেও বর্তমানে তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না।
এতে সড়ক দুর্ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অকালে ঝরে যাচ্ছে তাজা প্রাণ। পঙ্গুত্ব-বরণ করছেন অনেকেই।
জানা গেছে, সরকার দেশের গুরুত্বপূর্ণ যে কয়েকটি মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে তার মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অন্যতম। মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা জারির পর মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশার চলাচল কিছুটা বন্ধ হয়। তখন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাচপুর থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত এলাকায় দুর্ঘটনার হার অনেকটাই কমে আসে।
তবে হঠাৎ আবার হাইওয়ে পুলিশকে ‘ম্যানেজ’ করে মহাসড়কের চলাচল করছে সরকার নিষিদ্ধ যানবাহন সিএনজি, অটোরিকশা ও থ্রি-হুইলার। এর ফলে আবারো বাড়ছে দুর্ঘটনা। খালি হচ্ছে অনেক মায়ের বুক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সিএনজি ও অটো-রিকশাচালক জানান, মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত মহাসড়কে চলাচলের জন্য প্রতিটি সিএনজি ও অটোরিকশা থেকে প্রতি মাসে দুই হাজার থেকে তিন হাজার করে টাকা দিতে হয় হাইওয়ে পুলিশকে। টাকা না দিলে গাড়ি ধরে মামলা দিয়ে দেওয়া হয়। তাই বাধ্য হয়েই পুলিশকে টাকা দিয়ে মহাসড়কে সিএনজি ও অটোরিকশা চালাতে হচ্ছে।
সোনারগাঁয়ের যাত্রী আমান উল্লাহ জানান, পুলিশের নাকের ডগায় কাচপুর মোড় থেকে সেতুর ওপর দিয়ে যেভাবে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করছে, এতে আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে মহাসড়কে কোন অবস্থাতেই দুর্ঘটনা থামানো যাবে না।
কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, সরকার ও উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মহাসড়কে যাতে নিষিদ্ধ থ্রি-হুইলার চলাচল করতে না পারে সে জন্য আমরা দিন-রাত কাজ করছি। অনেক পরিবহন মালিক ও চালকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ অনেক পরিবহন ড্যাম্পিং করছি প্রতিদিন।
তবে জনবল বেশি থাকলে মহাসড়কে এসব পরিবহন কোনো অবস্থায়ই চলতে দেওয়া হবে না। আমরা অভিযান পরিচালনা করার সময় পুলিশ দেখলেই পালিয়ে যায় চালকরা। পরবর্তী সময়ে আবারও আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলাচল করে নিষিদ্ধ যানবাহনগুলো।
Discussion about this post