প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মাস শেষে মাসোযারা নেয়ার পর সরকারী নির্দেশনানুযায়ী কর্ম লক্ষমাত্রা পূরণ করতে তিতাস গ্যাস কর্তপক্ষ, স ও জ, বিআইডব্লিউটিএ, ভোক্তা অধিকারসহ বিশেষ বিশেষ সাঁড়াশী অভিযান পরিচালনা করতে বিশেষ পেশার লোকজনদের ভাড়া করার অভিযোগ থাকার পরও একই কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে কয়েকটি সরকারী সংস্থার অসাধু কর্তারা। আর এমন অপকর্মকে জায়েজ করতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণদের উপর ভর করে এই অসাধু চক্র চালিয়ে যাচ্ছে বিরামহীন অপকর্ম। যা বিগত সময়ে দুঃসাহসিকতা পরিচয় দিয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কে ব্যবহার করতে কুন্ঠাবোধ করে নাই এই অসাদু চক্র।
প্রতিমাসের প্রথম সপ্তাহে, নারায়ণগঞ্জের তিতাসের দায়িত্বে থাকা অসাধু কর্তারা বিশেষ অভিযানের নামে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে ভাড়া করা বিশেষ পেশার লোকজনকে সাথে নিয়ে শুরু করেন বিশাল কর্মযজ্ঞের নাটক মঞ্চায়ন। ক্যামেরা চালু না হলে তিতসের অবৈধ গ্যাসের সংযোগে ছুরি চালানো হয় না । অর্থাৎ ‘ক্যামেরা রুলিং কাটিং শুরু।’ এমন কর্মযজ্ঞের পর অনৈতিক অর্থ লেনদেনের খবর সকল গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ঝলঝলে উদহারণ হিসেবে সামনে থাকলেও কোন অবস্থাতেই কেউ স্বীকার করে না এমন অনৈতিক লেনদেনের তথ্য। এরপরেও থামানো যায় নাই নাচক মঞ্চায়নের কর্মযজ্ঞ ।
আর এভাবেই চলছে তিতাস, স ও জ, বিআইডব্লিউটিএ, ভোক্তা অধিকারসহ সরকারী কয়েকটি সংস্থার চৌর্যবৃত্তি।
উল্রেখিত সরকারী এই সকল সংস্থার অসাধু কর্তকাদের চাইতে ঘুষসহ অনৈতিক লেনদেনে এগিয়ে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তর। ওই একই কায়দায় নির্লজের মতো ফটোসেশন করে বিশাল কর্মযজ্ঞ করার প্রচার পেতে এবং মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিতে আসতে নানা কৌশল হাতে নেয় অসাধু এই চক্র।
এমন কর্মযজ্ঞের ধারাবাহিকতায় এবার পরিবেশ অধিদপ্তর চালিয়েছে বিশাল অভিযানের নামক নাটক । যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে নগরীজুড়ে। সারাবিশ্বে ঢাকার পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয়ের খবরে সকলেই যেখানে উদ্বিঘ্ন । এমতাবস্থায় দেশের স্বার্থ বিবেচনা না করে পরিবেশ ধ্বংস করতে অসাধু চক্র লুটপাটের মহোসব চালাচ্ছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
আর নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের এমন অপকর্ম জায়েজ করতে এবার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজীদ আহমেদকে ব্যবহার করেছে পুরানো কায়দায়।
দীর্ঘদিন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট (পরিবেশ) কাউসার আলম কে এমন অভিযানের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের অসাধুচক্র নানাভাবে ব্যবহার করে অপকর্ম করার পর বিষয়টি বিজ্ঞজনদের নজরে আসার পর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটগণদের না জানিয়ে এবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণদের ব্যবহার করা শুরু করে ধুর্ত এই চক্রটি ।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে একজন জনপ্রতিনিধি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের অফিস সহকারী থেকে শুরু করে উপ পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘুষ ছাড়া কিছুই বোঝেন না। এই পবিত্র রমজান মাসেও এই অভিযানের নামে কি করছে তারা তা খোজ নিলেই হতভম্ব হয়ে যাবে সকলেই । এই অভিযান তো নাটক । ব্যবসায়ীরা তো জিমি এদের কাছে । ঘুষ ছাড়া কিচ্ছুই বোঝে না এবা । আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাফ কথা, ‘ঘুষ দিয়ে নারায়ণগঞ্জে এসেছি এখানে কি ঘোড়ার ঘাস কাটতে ?’ তাই তিনি প্রায় ৪ শত ইট ভাটার মধ্যে অধিকাং ই অবৈধ। শত শত ইট ভাটা থেকে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নেন চোখ কান খোলা রেখে একেবারেই প্রকাশ্যেই । আর এই মামুন চক্রকে নারায়ণগঞ্জে টিকিয়ে রেখেছে একজন প্রভাবশালী নেতা ও তার চেলাচেমুন্ডারা। নারায়ণগঞ্জের অসংখ্য অসাধু ব্যবায়ীরা মিল ফ্যাক্টরীর বর্জ্য ফেলতেও এই মামুন চক্র একে অপরের পরিপূরক।” ৩ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের মুঠোফোনের আলোচনায় উঠে আসে আব্দুল্লাহ আল মামুনের ঘুষ লেনদেনের বিস্তর তথ্য।
পরিবেশ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের উপ পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ এবং পরিবেশ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তার সমম্বয়ে একটি টিম রোববার (২ এপ্রিল) বায়ুদূষণকারী কয়েকটি ইটভাটা ও একটি স্টীল রিরোলিং মিলসে অভিযান পরিচালনা করে ১২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় এবং ১ জনকে ১ মাসের জেল হাজত প্রদান করা হয়।
এছাড়া সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে দায়েরকৃত রীট পিটিশন নং-৯১৬/২০১৯ এর বিরুদ্ধে লিভ টু আপীল মামলা নং: ৮০৬/২০২২ থাকায় কয়েকটি ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। এসব ইটভাটাগুলো হচ্ছে- রূপগঞ্জের কাঞ্চনের বিরাব তারাইল এলাকার মেসার্স আর বি এম ব্রিকস, মেসার্স এম টি বি ব্রিকস, মেসার্স এ আর বি ব্রিক-১, মেসার্স এ আর বি ব্রিক-২, মেসার্স বি আর বি ব্রিক-১ ও মেসার্স বি আর বি ব্রিক-২।
নারায়ণগঞ্জে অবৈধ ইটভাটা ও বায়ুদূষণকারী কারখানা/প্রকল্পের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এভাবেই নারায়ণগঞ্জে চলছে অসাদু চক্রের রমরমা কর্মকান্ড ।
Discussion about this post